E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নড়িয়ায় পদ্মার পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা

২০১৪ জুলাই ২২ ১৩:৩২:২১
নড়িয়ায় পদ্মার পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামে পদ্মার পাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে ইট ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ভাঙ্গন হুমকিতে পরছে পদ্মাপাড়ের ফসলি জমি ও বসত বাড়ি।

অভিযোগ উঠেছে, জমির মালিকদের নামমাত্র পয়সা দিয়ে স্থানীয় মোশারফ শিকারী ও মোজাম্মেল মুন্সী কেটে নিচ্ছেন মাটি গুলো। মোশারফ শিকারী কেদারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক । স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিয়েও কোন ফল পাচ্ছে না। মাটি কাটার সাথে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় কোন বাধাই মানছেনা তারা।

স্থানীয় সুত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে পদ্মার ভাঙ্গনে জেলার নড়িয়া উপজেলার সাহেবেরচর এলাকায় বিলীন হচ্ছে ফসলী জমি ও বসত বাড়ি। অনেকেই ভিটে বাড়ি হারাতে হয়েছে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। পদ্মার পাড়ে এখনো নিজের বসত বাড়িটুকু আঁকড়ে ধরে অনেকেই বসবাস করছেন। অবশিষ্ট জায়গাটুকু প্রকৃতির দয়ায় হয়তোবা রক্ষা হবে এই আশায়।

কিন্তু অপরিকল্পিত ভাবে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে ফেলায় নদী ভাঙন আতঙ্ক যেন আরো বেড়ে গেছে। গত দুই মাস ধরে পদ্মা পাড়ের সাহেবেরচর ও চরনড়িয়া এলাকা থেকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোশারফ শিকারী (৩২) ও সাহেবের চরের মোজাম্মেল মুন্সী তার লোকজন দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। গত দুই মাসে পদ্মা পাড়ের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার মাটি কেটে নিয়েছে তারা। ভোর রাত তিনটার দিকে ৪ থেকে ৫টি ট্রলার তীরে ভিড়ানো হয়। ২০ থেকে ২৫ জন লেবার দিয়ে সকাল ৭টার মধ্যে ট্রলার গুলোতে মাটি ভরে স্থান ত্যাগ করেন তারা। নদীর পাড় থেকে মাটি গুলো নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে জেলার ইট ভাটা গুলোতে।

জমির মালিকদের মাটির জন্য টাকা দেওয়া হবে বলে কেটে নেওয়া হচ্ছে মাটি। তবে অনেকেই অভিযোগ করেছেন টাকা দেওয়ার কথা বলে তারা মাটি কাটতে শুরু করে পরে আর টাকা দেয় না। আবার কাউকে নামমাত্র টাকা দিয়ে বিদায় করা হয়। মোশারফ শিকারী ও মোজাম্মেল মুন্সী স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করেও কোন ফল পাচ্ছেনা স্থানীয়রা।

সাহেবের চর গ্রামের বাসিন্দা ফরহাদ খালাশী (৬০) বলেন, মোশারফ শিকারী আমাদের সামান্য কয়টি টাকা দিয়ে জোর করে মাটি কেটে নিচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কিছুই বলতে পারছি না। মাটি কাটার পর থেকে নদী ভাঙন বেড়ে গেছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হালিম (৫৫) বলেন, নদী আমাগো সব কিছু নিয়ে গেছে। এখন শুধু বাড়িটুকু রয়েছে। এভাবে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে গেলে আবার ভাঙ্গন শুরু হলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব।

এ ব্যপারে কেদারপুর ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মোশারফ শিকারী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাটি কাটার সাথে আমি জড়িত নই। আমি শুধু ট্রলার গুলো দেখা শোনার দায়িত্ব পালন করি।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রামচন্দ্র দাস বলেন, নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার কোন বৈধতা নেই। কেউ মাটি বিক্রি করে থাকলে তা অন্যায় হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

(এনআই/জেএ/জুলাই ২২, ২০১৪)



পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test