E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বাগেরহাটে বিএনপি নেতাকে বোমা মেরে হত্যার কারন দুটি, দাবি পুলিশের

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৫ ১৭:৫৬:৪৯
বাগেরহাটে বিএনপি নেতাকে বোমা মেরে হত্যার কারন দুটি, দাবি পুলিশের

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারকে বোমা মেরে হত্যার কারন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ও পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধে হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

তবে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত এই হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। রামপাল থানায় কোন মামলাও হয়নি। শুক্রবার নিহত বিএনপি নেতার লাশের ময়না তদন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্নের পর বিকালে সোনাতুনিয়া মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বৃহষ্পতিবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে খুলনা- মোংলা মহাসড়কে রামপাল উপজেলার ভরসাপুর বাসষ্টন্ড এলাকায় একদল সন্ত্রাসী তার উপর বোমা হামলা চালালে বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিন আখতার (৬০) নিহত হন। খাজা মঈনুদ্দিন আখতার রামপাল উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়নের ৩ বারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাড়ি রামপালের বামুনডহর গ্রামে।

নিহত বিএনপি নেতার স্ত্রী চম্পামালা বেগম বলেন, তার স্বামী বিএনপি নেতা খাজা মঈনুদ্দিন আখতারের উপর বোমা হামলার কয়েক মিনিট আগেই তার সাথে ভরসাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয়। তাকে বাজার করার সাথে কথা বলে আমি ভ্যানযোগে ফয়লা এলাকায় চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পরে ফয়লায় বসে শুনি আমার স্বামীর উপরে কারা হামলা চালিয়েছে। আমার সাথে তার আর দেখা হয়নি। মামলা- হামরায় কারনে এখন তিনি রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রীয় ছিলেন। সব ধরনের বিরোধ থেকে নিজে দূরে থাকতেন। তিনি উজলকুড় ইউনিয়ন পরিষদের তিনতিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাবা খাজা সোবাহান আলীও এখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। সামনে হজে যাওয়ার জন্য টাকা জামা দিয়েছিলেন বলেও জানালেন তার স্ত্রী। তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

স্থানীয়রা বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভরসাপুর বাজার এলাকার কমল মার্কেটের সামনে হঠাৎ বিষ্ফোরণের একটি বিকট শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম কোন দোকানে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়েছে। আমরা ওই শব্দ পেয়ে ছুটে এসে দেখি কমলা মার্কেট এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর ধোঁয়া কমলে দেখি সাবেক চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপরে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। সবাই তাকে রাস্তা থেকে তুলে গাড়ীতে করে খুলনা মেডিকেল করেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হলে চিকিৎসরা তাকে মৃত ঘোসনা করেন। তিনি সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে সবার পাশে ছুটে যেতেন। তার এই মৃত্যুতে আমরা বিষ্মিত। তার এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায়না বলেও জানান তারা। হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, খাজা মঈনুদ্দিন আখতার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উজলকুড় ইউনিয়নের ৩ বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। এর আগেও তার উপর একাধিকবার সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। কারা কি কারনে তার উপর বোমা হামলা চালিয়েছে তাদের খুঁজে বের করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা।

শুক্রবার ঘটনাস্থল থেকে ফিরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন আখতারকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ও পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা বোমা মেরে হত্যা করেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ওই দুইটি কারনকে গুরুত্ব দিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ শুরু করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা কাজ করছি। আশা করছি এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ খুব শিগগির আসামীদের ধরতে পারবে এবং হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত হবে বলে দাবি ওই পুলিশ কর্মকর্তার। থানায় এখনো মামলা হয়নি এবং কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

(এসএকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test