E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ যাচ্ছে শরীয়তপুরের বিচ্ছিন্ন চরে

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৭ ১৫:৩৫:১৩
সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ যাচ্ছে শরীয়তপুরের বিচ্ছিন্ন চরে

নিউজ ডেস্ক : চারদিক দিয়ে পদ্মা ও মেঘনা নদী। মাঝে ছোট-বড় অসংখ্য চর। ৭০ বছর আগে থেকে ওই চরে মানুষ বসবাস শুরু করেছে। তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে চরগুলোর অবস্থান। চরের মানুষ হারিকেন ও প্রদীপের আলো ছাড়া কখনো বিদ্যুতের আলো পায়নি। কিন্তু এবার পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সেই চরে বিদ্যুতায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদীর ৮০০ মিটার অংশে বিদ্যুতের লাইন নেয়া হবে।

জানা গেছে, ওই চরের নওপাড়া ও চরআত্রা ইউনিয়ন পড়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। আর কাঁচিকাটা ইউনিয়ন ভেদরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। এ তিনটি ইউনিয়নে ৭০ হাজার মানুষের বসবাস। গত সংসদ নিবার্চনের সময় শরীয়তপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী একেএম এনামুল হক শামীম ওই চরগুলোতে গণসংযোগে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার দাবি তোলেন স্থানীয়রা। নির্বাচিত হতে পারলে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে এমন প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। পরে সংসদ নির্বাচনের পর এনামুল হক শামীম ওই তিন ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার বিষয়ে জেলা পল্লী বিদ্যুত সমিতির প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন।

তখন জানানো হয়, পদ্মার নদীর শরীয়তপুর অংশের তীর থেকে ওই চরের নদীর দৈর্ঘ্য সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার। এ কারণে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে না। এ সময় সিদ্ধান্ত হয় মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। পরে শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে পানি সস্পদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সভা করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদী দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেয়া হবে। মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা নদীর তীর থেকে নওপাড়ার নদীর দূরত্ব ৮০০ মিটার।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয় শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওই তিনটি ইউনিয়নের কার্যক্রম মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হস্তান্তর করা হবে। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়।

শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সোহরাব আলী বিশ্বাস বলেন, পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে শরীয়তপুরের তিনটি চরে বিদ্যুৎ নেয়া হবে। ওই চরে একটি সাবস্টেশন নির্মাণ করা হবে।

মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিউল আলম বলেন, শরীয়তপুরের পদ্মা নদীর মাঝের তিনটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কাজ শুরু হয়েছে। কোথায় কোথায় পুল বসবে তা নির্ধারণ করা হচ্ছে। পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার প্রক্রিয়ার জরিপ কাজ চলছে। শিগগির কাজ শুরু করা হবে। নদীর অংশটুকু সাবমেরিন ক্যাবলে আর বাকি অংশে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল মুন্সী বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি দুর্গম চর। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে এখানে বিদ্যুৎ দেয়া হবে তা কখনো ভাবিনি। এ এলাকায় বিদ্যুৎ আসছে এমন খবরে আমরা আনন্দিত।

এ বিষয়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধামন্ত্রী। আমরা তার ঘোষণা বাস্তবায়ন করছি। নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি ছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে চরবাসীদের বিদ্যুৎ দেয়া হবে। পদ্মার দুর্গম চর হওয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহেরর কাজ শুরু করা হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test