E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষকারা বেতন না পেয়েও প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানে অব্যাহত

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৬ ১৭:৫২:৪৮
শিক্ষকারা বেতন না পেয়েও প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাদানে অব্যাহত

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে গত ২০১৩ সালে গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলার ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয় নামের এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। বেতন না পেয়েও ছয় বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষরা। এতে তারা মানবেতর জীবন যাপন করলেও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে পেরে নিজেদের খুব ধন্য বলে মনে করছেন।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে স্থানীয় ব্যক্তিরা ২০১৩ সালে বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব ও ক্রায় ক্রিত জমিতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠাত করেন। প্রতিষ্ঠার পরেই স্থানীয় কিছু শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠান গুলো চালু করেন। এরপর গ্রামে ঘুরে ঘুরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সংগ্রহ করে তাদের লেখা-পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠান গুলোর ছাত্র/ছাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় শিক্ষক- কর্মচারীও বাড়াতে হয় প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষ । এ রকম একটি প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ না করলেই নয়।এ আর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয়টিতে দিন যতই বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ততই বাড়তে থাকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫৩ জন শিক্ষার্থী লেখা-পড়া করছে। আর তাদের পাঠদানের জন্য রয়েছেন ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী।

বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে দুইটি টিন শেড ঘর, একটি অফিস কক্ষ, একটি নামাজ ঘরসহ একটি টয়লেট রয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আনা নেয়ার কাজে দুইটি ভ্যানগাড়ী ও ১০টি হুইল চেয়ার রয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আশার জন্য ফ্রি স্কুল ড্রেস, বিনামূল্যে বই বিতরণ ও বিস্কুট সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক আশরাফুজ্জামান অলক।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মুন মিয়া জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষরা খুব ভালো। তারা আমাদের আনন্দ দিয়ে লেখা-পড়া শেখান। তাই আমরা প্রতিদিন স্কুলে আসি। আমাদের স্কুলের স্যার/ম্যাডামরা খুব আমাদের ভালোবাসেন।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা শিউলি আক্তার জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিবর্গের আর্থিক সহযোগিতায় অদ্যবদি সুনামের সাথে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। এতে করে এলাকার প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা ও প্রশিণের মাধ্যমে সমাজের মূলস্রোত ধারায় ফিরে আসছে।

বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান অলক জানান, প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, তারা সমাজের সম্পদ এ কথা বিবেচনা করেই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছি।

সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আলী আকবর মিয়া বলেন, বিদ্যালয়টি এমপিও ভূক্ত হলে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার মান আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি রেজওয়ান মিয়া বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছেন। তাই আমরা তার সেই উদ্যোগকে সহায়তা করতেই এলাকায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিষ্টিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছি।

(এসআইআর/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test