E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

 গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি

দাউদকান্দি সেতুতে ৩টি গাড়ি বিকল হওয়ায় ৫০ কিলোমিটার যানজটে

২০১৪ জুলাই ২৩ ১৫:০১:৩৬
দাউদকান্দি সেতুতে ৩টি গাড়ি বিকল হওয়ায় ৫০ কিলোমিটার যানজটে

কুমিল্লা প্রতিনিধি : গতকাল মঙ্গলবার রাত ৩টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার তীরচর এলাকায় গাছ ফেলে একদল ডাকাত ডাকাতির চেষ্টা চালালে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অপরদিকে বুধবার দাউদকান্দির মেঘনা-গোমতী সেতুর উপর ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও ১টি প্রাইভেটকার বিকল হয়ে মহাসড়কে তীব্র যানজট এর সৃষ্টি হয়েছে।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. রইজ উদ্দিন জানান, দাউদকান্দি সেতুর উপর ৩টি গাড়ি বিকল হয়ে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় যানজট।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার তীরচর এলাকায় মঙ্গলবার রাত ৩টায় একদল ডাকাত গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। তবে কোন যানবাহনে ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। সড়কের উপর গাছ ফেলে রাস্তা বন্ধ রাখা, দাউদকান্দি সেতুর উপর গাড়ি বিকল হওয়া ও মাত্রাতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া যানজট বুধবার পর্যন্ত মহাসড়কে তীব্র আকার ধারণ করে। দাউদকান্দি সেতু এলাকা থেকে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয় এ দীর্ঘ যানজটের।

এ যানজটের ফলে মহাসড়ক জুড়ে হাজার হাজার যানবাহনের যাত্রীদেরকে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। যানজটের কারণে যাত্রীদের সবক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ৩০ টাকার বাসভাড়া ৭০/৮০ টাকা, ১০ টাকার সিএনজি অটোরিক্সার ভাড়া ৪০ টাকা, রিক্সা ভাড়াও দ্বিগুণ। বহু যাত্রী কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো রিক্সা করে, কখনোবা সিএনজি করে ৮/১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন বলে জানান। যাত্রীদের ১ ঘন্টার পথ যেতে হয়েছে সাড়ে ৩ ঘন্টায়। বিশেষ করে যাত্রীরা ছোট ছোট শিশুদের ও এ্যাম্বুলেন্সে রোগীদেরকে নিয়ে পড়েন চরম বিপাকে। নাইট কোচের দূরগামী যানবাহনের যাত্রীদেরও পোহাতে হয়েছে চরম দুভোর্গ। যানজটে আটকা পড়ে যাত্রীরা সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনি তাদের গন্তব্যস্থানে।

যানজটে আটকা পড়ে থাকা বাসযাত্রীরা জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ত এই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি দ্রুত চার লেনে উন্নত করতে সরকারের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এতে মহাসড়কে ভোগান্তি ও দীর্ঘ যানজট অনেকটাই কমবে বলে যাত্রী ও চালকরা আশা প্রকাশ করেন। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম ও প্রধান সমু্দ্র বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের এই সড়কটি একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল করে মহাসড়কটিকে ব্যস্ত করে তুলেছে। দেশের জাতীয় মহাসড়কের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অন্যতম ব্যস্ত ব্যাণিজ্যিক মহাসড়ক হওয়ায় পরিবহন সেক্টরে এর গুরুত্ব সর্বাধিক।

অথচ এ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়ে যাত্রীদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ এর সাথে সাথে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ। এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মত ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন, হাইওয়ে পুলিশের গাফালতির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ডাকাতি চেষ্টা চালানো অত্যন্ত দুঃখজনক।

দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সার্বিক) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে মহাসড়কের দাউদকান্দির গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনার, কুটুম্বপুর, মাধাইয়া, চান্দিনা বাসষ্ট্যান্ড, নিমসায় এলাকায় সড়কের উভয় পাশে, রাস্তার উপর, পথচারীদের চলাচল পথে অবৈধ ভাবে যানবাহন পার্কিং করে রাখায় এবং চালকরা নিয়ম না মেনে এলোপাতারিভাবে ও ওভারটেক করে গাড়ি চালানোর কারণেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের উপর নির্মাণ করা দোকানপাট ও অবৈধ স্থাপনা যানজট ও দুঘর্টনার কারণ।

অবৈধ স্থাপনা ও যানবাহন পার্কিং যানজট আরও বাড়িয়েছে। গত ১২ জুলাই যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় গৌরীপুর বাসষ্ট্যান্ডসহ অন্যান্য বাসষ্ট্যান্ডের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আজোও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি প্রশাসন। দাউদকান্দির গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনার বাসষ্ট্যান্ডে কিছু সংখ্যক যুবক লাঠি হাতে কেউবা লাঠি ছাড়া বিভিন্ন রুটের যানবাহন রাস্তার উপর থামিয়ে টাকার বিনিময়ে যাত্রী তুলছে। এর ফলেও সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।

এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি হাইওয়ে পুলিশ। মহাসড়কের দাউদকান্দির গৌরীপুরের সাথে গৌরীপুর-হোমনা, গৌরীপুর-সাচার, গৌরীপুর-মতলব সড়কগুলো এসে মিলিত হওয়ায় ওইসব স্থানের যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রো, প্রাইভেটকার, সিএনজি, টেম্পু ও রিক্সা সড়কের উপর রাখার কারণে গৌরীপুর বাসষ্ট্যান্ডে প্রায় যানজট লেগেই থাকে। ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়ককে যানজট মুক্ত রাখতে এসব অবৈধ পার্কিং এর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি হাইওয়ে পুলিশ। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট আর যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

(এইচকে/জেএ/জুলাই ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test