E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাটমোহরে জিআর প্রকল্পের ৪৫ লাখ টাকা হরিলুট

২০১৪ জুলাই ২৩ ১৬:০৯:৪১
চাটমোহরে জিআর প্রকল্পের ৪৫ লাখ টাকা হরিলুট

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের শেষ সপ্তাহে সরকারের জিআর প্রকল্পের ৪৫ লক্ষাধিক টাকা হরিলুট করা হয়েছে এ মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুবিধাবাদী চক্র উপজেলার মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির ও এতিমখানার নামে বরাদ্দ দেওয়া ১৯৩ মেট্টিক টন চাল বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাটমোহরের সরকারি দলের সাবেক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান, কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজসে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. বজলুর রশীদ ৬৫টি প্রকল্পর নাম ভাঙিয়ে সমুদয় চাল বিক্রি করে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। ইসলামি জালছা অথবা ধর্মীয় সভার নামে খয়রাতির এই চাল বিক্রি করে লুটপাট করা হয়।

যে সকল মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিম খানা ও মন্দিরের নামে এই চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় তাদেরকে টন প্রতি প্রদান করা হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা। অথচ প্রতি টন চালের দাম ২৪/২৫ হাজার টাকা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও এতিমদের নামে খয়রাতি এনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাগণ তা লুটপাট করে নজির সৃষ্টি করেছেন। প্রকল্প দেখানো হয়েছে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা জানেনই না যে তাঁদের নামে গম বরাদ্দ হয়েছে। কাগজে কলমে প্রকল্প দেখিয়ে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক এতিম খানার সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের এতিমখানার নামে সরকার ৩ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ প্রদান করে। কিন্তু পিআইও আমাদের কোন প্রকার ডিও না দিয়ে ১৫ হাজার টাকা নিতে বলেন এবং স্বাক্ষর করতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় পিআইও অফিসে সার্বক্ষনিক অবস্থান করা চাল-গম ক্রেতা আব্দুস সালাম সরকার জোরপূর্বক টাকা নিতে বাধ্য করেন। তাদের বক্তব্য এই প্রকল্প বের করে আনতে তাদের প্রচুর টাকা লেগেছে।

তাছাড়া অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে টাকা দিতে হয়েছে। অনেক মসজিদ কমিটির সদস্যরা জানেন না যে, তাদের মসজিদে খয়রাতি চাল বরাদ্দ হয়েছে। প্রকল্প প্রতি ৫ হাজার টাকা পেয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ফলে ৪৫ লক্ষাধিক টাকার হরিলুট হয়েছে। গুনাইগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম, হান্ডিয়াল ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. রবিউল করিম মাষ্টার, রেল বাজারের আব্দুস সালাম সরকারসহ একটি চক্র এই জিআর প্রকল্পের চাল বিক্রির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. বজলুর রশীদ বলেন, টন প্রতি ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে এটা আমি জানি না। তবে জিআর প্রকল্পে ১৯৩ মেট্টিক টন চাল দেওয়া হয়েছে, এটা ঠিক আছে। এটা লেখালেখি করে কী হবে। কিছুই হবে না। আমি তো একা নেই না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নেবো। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিটি প্রকল্পে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর লাগবেই। মিলেমিশে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

(এসএইচ/জেএ/জুলাই ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test