E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

এক রাতে নির্মিত গোয়ালবাথান গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মুন্সিবাড়ি মসজিদ!

২০১৯ মার্চ ০৭ ১৮:২৫:১০
এক রাতে নির্মিত গোয়ালবাথান গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মুন্সিবাড়ি মসজিদ!

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইল সদর উপজেলার গোয়ালবাথান গ্রামে প্রায় ৪’শত বছর আগে মোগল শাসনামলে এক রাতে গোয়ালবাথান গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মুন্সিবাড়ি মসজিদটি নির্মান করা হয় বলে জনশ্রুতি রয়েছে। মসজিদের ছাদের ওপরে চার পাশে ছোট ছোট ৪টি মিনার এবং মাঝখানে একটি বড় গম্বুজ রয়েছে ।

ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয় যে, গোয়ালবাথান গ্রামের মুন্সি বাড়ির এ মসজিদটি নড়াইল জেলার সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ। ছোট ছোট ইট আর চুন সুড়কির গাঁথুনীর মাধ্যমে এ মসজিদটি নির্মান করা হয়েছে ।
এলাকায় জনশ্রুতি আছে, মোগল শাসনামলে প্রায় ৪শত বছর আগে একদিন এই গ্রামে এসে হঠাৎ করে বসবাস শুরু করেন মুন্সি হবৎউল্লাহ নামের এক ব্যাক্তি। এর কিছু দিন পর তিনি এক রাতে ঐ স্থানে এ মসজিদ এবং এর সংলগ্ন একটি পুকুর খনন করেন । সেই থেকে ওই গ্রামে আস্তে আস্তে জনবসতি শুরু হয় এবং ওই স্থানসহ আশপাশের এলাকার মুসলিম সম্প্রদয়ের মানুষেরা ওই মসজিদে নিয়মিত নামায আদায় করতে থাকেন ।

নড়াইল জেলায় ওই সময় অন্য কোন মসজিদ না থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকার মুসলিম সম্প্রদয়ের মানুষেরা নড়াইলের প্রথম মসজিদে নামায আদায় করতে আসতেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।

মসজিদ প্রতিষ্ঠাতা মুন্সি হবৎউল্লাহর বংশ ধরেরা আজও গোয়ালবাথান গ্রামে বসবাস করছেন। তারাও সঠিকভাবে বলতে পারেন না কত সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এ মসজিদটি । তবে মোগল শাসনামলে এবং কমপক্ষে ৪শত বছর আগে এটি তাদের পূর্ব পুরুষ মুন্সি হবৎউল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ।

ঐতিহ্যবাহি এ মসজিদটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করার কারণে এক সময় প্রায় ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়েছিল । নড়াইল জেলার ইতিহাস ঐতিহ্যের বাহক গোয়ালবাথান মুন্সিবাড়ি মসজিদটি রক্ষা করতে নড়াইলের সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক ও বর্তমান নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোস ৪ বছর আগে জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে মসজিদটি সংস্কার কাজ করেন। বর্তমানে এটি আবারও সাবেক আমলের ন্যায় রূপ পেয়েছে ।

এলাকার প্রবীন জাফর আলী বলেন, মসজিদটি কমপক্ষে চার শত বছর আগে নির্মিত হয়েছে । এ মসজিদটি নড়াইল জেলার সর্ব প্রথম মসজিদ ।

নড়াইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মীর্জা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, কবে কতোদিন আগে ঐ মসজিদটি নির্মান করা হয়েছে তা কেউ বলতে পারে না। তবে কথিত আছে, মুন্সি হবৎউল্লাহ নামের এক ব্যাক্তি মোগল আমলে গোলবাথানে এসে বসবাস শুরু করেন । সে সময় ঐ এলাকায় কোন মানুষের বসতি ছিল না । শুধু বাগানে ভরাছিল এলাকাটি । মুন্সি হবৎউল্লাহই ঐ গ্রামের প্রথম বাসিন্দা বলে জানা গেছে । তার বসবাস শুরুর কোন এক রাতে ঐ মসজিদ এবং তার সাথে লাগোয়া একটি পুকুর খনন করা হয় । এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, ঐ মসজিদটি জিনদের দিয়ে নির্মান কাজ করা হয় এবং ঐ সময় জিনরাও এ মসজিদে নামায আদায় করতেন ! ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক গোয়ালবাথান গ্রামের মুন্সি বাড়ির মসজিদটি আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

(আরএম/এসপি/মার্চ ০৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test