E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

স্কুলের পাশে ফেলা হচ্ছে শহরের ময়লা-আবর্জনা, অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

২০১৯ মার্চ ১১ ১৮:২৭:০২
স্কুলের পাশে ফেলা হচ্ছে শহরের ময়লা-আবর্জনা, অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুর জেলার পৌরসভা সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই আবাসিক এলাকায় ফেলা হচ্ছে শহরের ময়লা-আবর্জনা। ফলে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা ক্লাস করতেও নানা সমস্যা পড়তে হচ্ছে। তাই দ্রুত এই ময়লা-আবর্জনা শহরের বাহিরে লোকালয়শূণ্য কোন জায়গায় ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে মাদারীপুর পৌর এলাকার শহরের বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা প্রতিদিন ভোরে ভ্যানগাড়ি ও ট্রাকে করে এনে তা মাদারীপুর শহরের পৌরসভা সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই পৌরসভা অফিসের পিছনে আবাসিক এলাকায় ফেলা হচ্ছে। যা পরে দ্রুত দুর্গন্ধ ছড়িয়ে বিদ্যালয়ের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীসহ আশেপাশের ঘর-বাড়ির লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। প্রায় সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাকে কাপড় দিয়ে ক্লাস করতে হয়। অনেক সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে নতুন স্কুলে আসা শিশু শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা এই দুর্গন্ধে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও এই ময়লা-আবর্জনা লোকালয়পূর্ণ জায়গায় ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণসহ এলাকাবাসী নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই দ্রুত এই স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধের দাবী জানিয়েছে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।

নাম না প্রকাশের শর্তের কয়েকজন অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়ের পাশেই একটি দেয়ালের ব্যবধানে এভাবে শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ভাবতে অবাক লাগছে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে কিভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। এই ছোট ছোট শিশুদের কথা পৌরকতৃপক্ষের ভাবা উচিত ছিলো। আমাদের ছেলে-মেয়েদের এই দুর্গন্ধময় বিদ্যালয়ে কখনও ভর্তি করতাম না, যদি না এই বিদ্যালয়টি মডেল না হতো। এই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা ভালো হয়। রেজাল্টা ভালো হয়। তাই ছেলে-মেয়েদের অস্বাস্থ পরিবেশেও ভর্তি করেছি। এই বিদ্যালয়টি যদি জেলার মডেল বিদ্যালয় না হতো, তা হলে হয়তো শুধুমাত্র এই দুর্গন্ধের জন্য বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষার্থীকে খুজে পাওয়া যেতো না। তাই এই ছোট ছোট প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে পৌর মেয়রের কাছে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধের দাবী জানাই।

শিক্ষার্থী রাইসা, ফাইজা সিমি, শিমুল, আয়ান, আলিফ, জারিফ, আরিয়ানসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে আমাদের খুব কষ্ট হয়। এই বিদ্যালয়ে পড়াশুনা খুব ভালো হয় তাই দুর্গন্ধের কষ্ট সহ্য করেও আমরা কøাস করছি। আমরা এখানে ময়লা ফেলা বন্ধের দাবী জানাই।
অভিভাবক মুন্নি আক্তার, ইসরাত জাহান, আলী হোসেন, লাভলী আক্তারসহ প্রায় ৩০/৩৫ জন জানান, মাদারীপুর পৌরসভার কর্তৃপক্ষের কাছে বলে বলে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। শুনেছি মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক খুবই ভালো মানুষ। তাই তার কাছে আমাদের দাবী, বিদ্যালয়ের পাশে ময়লা ফেলা বন্ধ করা হোক।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তাহমিনা বেগম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এটা বন্ধের ব্যাপরে কথা বললেও কোন লাভ হয়নি, আপনারা সংবাদ লিখলে যদি বন্ধ হয়। এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ জরুরি হয়ে পড়েছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা প্রায় সময় এর দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে রয়েছে। পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র মো. খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, প্রতিদিন সকালে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ময়লা-আবর্জনার গাড়ি এসে এখানে ফেলে। ময়লা ফেলার কোন জায়গা না থাকায় এখানে ফেলা হচ্ছে। আজ সকালে (সোমবার) ময়লা-আবর্জনার গাড়ি বিসিক এলাকায় ফেলতে গেলে লোকজন তাদের মেরে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাহলে কোথায় ময়লা ফেলবো বলেন। তাই বাধ্য হয়ে পৌরসভার জায়গাতেই ময়লা ফেলা হচ্ছে।

(এএসএ/এসপি/মার্চ ১১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test