E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘উন্নয়নে কল্যাণে সাথে আছি থাকবো’

২০১৯ মার্চ ১৩ ১৫:৩৬:৪০
‘উন্নয়নে কল্যাণে সাথে আছি থাকবো’

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিষেক হলো সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নতুন নির্বাচিত কমিটির ১৩ সদস্যের। বর্ণীল এই আয়োজনের প্রধান অতিথি সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান উপমহাদেশের শীর্ষ শ্রেষ্ঠ শল্য চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার আফম রুহুল হক বলেন, পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। ভোমরা বন্দরমুখী সড়ককে চার লেনে উন্নীত করতে হবে। আমরা চিংড়িতে বৈদেশিক মুদ্রা এনে দিচ্ছি। বিপুল পরিমান সাদা মাছের জন্ম দিচ্ছি, রফতানি করছি। প্রয়োজনের কয়েকগুন বেশি কৃষি ফসল সবজি দিচ্ছি। আমাদের আম যাচ্ছে ইউরোপ।

তবু সাতক্ষীরার উন্নয়ন নেই এই আক্ষেপ করে তিনি বলেন কোনো কোনো স্থানে তিনজন আওয়ামী লীগ এমপির মধ্যে একজন মন্ত্রী। আর আমাদের চারজন আওয়ামী লীগ দলীয় এমপির মধ্যে একজনও মন্ত্রী না। আমরা তো এভাবেই বঞ্চিত হচ্ছি দাবি করে তিনি বলেন এ থেকে আমাদের উত্তরণ চাই। এ অঞ্চলকে একটি ইকোনমিক জোনে পরিণত করতে হবে। ইকো ট্যুরিজমের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

এসব সম্ভাবনার দ্বার খোলা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন সবগুলি নদীর মুখ স্লুইস গেটে বন্ধ হয়ে আছে। এগুলি সরাতে হবে নদীকে জীবন্ত করতে হবে। দুর করতে হবে জলাবদ্ধতার অভিশাপ। সবাই মিলে সাতক্ষীরাকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন আমরা আপনাদের সাথে আছি। সাথে থাকবো। সাংবাদিকদের জন্য আবাসন আমিও চাই। আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। আমাদের সঠিক পরিচয় সাংবাদিকরাই পারেন বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে। তিনি বলেন সাতক্ষীরায় ভাল ভাল সাংবাদিক আছেন। তারা দেশের উচ্চ মিডিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আবার ক্লাস এইট পাস মহা মহা সাংবাদিকও উঁকি দেয়।

তিনি বলেন, উই হ্যাভ টু কন্ট্রোল দেম। না হলে প্রকৃত সাংবাদিকরা বিভ্রান্ত হবেন। আপনারা মুক্তভাবে লিখুন। সমাজকে এগিয়ে নিন। দেশের উন্নয়নে কাজ করুন। ডা. রুহুল হক আরও বলেন আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রেসক্লাবকে আগেও সহযোগিতা করেছি, আবারও করবো। আপনাদের সাথে আছি, থাকবো।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার বলেন,শেখ হাসিনার সরকার সাংবাদিক বান্ধব সরকার। আমরা সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীকে ধরতে পারলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উন্নয়ন অবশ্যই কাংখিত পর্যায়ে পৌঁছাবে। জগলুল হায়দার আরও বলেন আমি জাতীয় সংসদে প্রেসক্লাবের উন্নয়নে কথা বলেছিলাম। এখন প্রেসক্লাব উন্নয়নের কিছু কাগজপত্র লাল ফিতায় আটকা পড়েছে। আমরা এই লাল ফিতা ছিন্ন করতে চাই। তিনি বলেন সাংবাদিকরা এখন মুক্ত মনে লিখতে পারছেন। তবে কিছু কিছু সাংবাদিক হুট করে না জেনে না শুনে কিছু একটা লিখে দিলেই সকালে ঘুম থেকে দেখবেন আপনার মান সম্মান সব শেষ। এমন হাতে গোনা কয়েকজন সাংবাদিক থাকলেও সাতক্ষীরার বেশিরভাগ সাংবাদিক বস্তুনিষ্ঠতার পরিচয় দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম নজরুল ইসলাম বলেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অনেক ঐতিহ্য, অনেক পরিচিতি। সুসময়েই নয় শুধু মানুষের দুঃসময়ে দুর্যোগে দুর্বিপাকে তারা মন প্রাণ দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। তারা তাদের লেখনী দিয়ে গনমানুষের কল্যাণ করছেন। তারা লিখলে প্রশাসনের টনক নড়ে। রাজনীতিবিদ সমাজ কর্মী সবাই নড়েচড়ে বসে। সবাই সচেতন হয়। এ সময় প্রকৃত চাহিদা বেরিয়ে আসে । আমরা সবাই উপকৃত হই। আপনাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। আমরা সব সময় আপনাদের সাথে আছি।

বিশেষ অতিথি জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন সংবাদ মাধ্যমগুলি সবচেয়ে বড় দর্পনের কাজ করে। এই দর্পনকে স্বচ্ছ রাখা দরকার। আর এ কারণেই সমাজের নিন্দুকদের কাছে তারা অনেক সময় চক্ষুশূল হয়ে পড়েন। তবু প্রকৃত সাংবাদিকরা অপসাংবাদিকতার প্রশ্রয় দেন না। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদে সমাজের প্রকৃত চেহারা ফুটে ওঠে উল্লেখ করে তিনি বলেন একপেশে খবর, খবর নয়। স্বাধীন গন মাধ্যম যদি যথাযথ ভূমিকা রাখতে না পারে তাহলে সেই সমাজ পিছিয়ে পড়তে বাধ্য। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অবকাঠামোগত উন্নয়নে জেলা প্রশাসক হিসাবে আমার যতো করনীয় তা করবো বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অভিষেক অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান বলেন সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা ‘ফোর্থ স্টেট’। এখানে আছে গণতন্ত্রের অবাধ চর্চা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা। যারা এই পেশায় রয়েছেন তাদের সাথে পুলিশের মিল রয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন প্রেস ও পুলিশ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। দেশ ও জনগনের উন্নয়নে তারা অনবরত কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন সাংবাদিকদের আরও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে।

অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, প্রথম আলোর কল্যাণ ব্যানার্জি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার ও বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা. আবুল কালাম বাবলা প্রমূখ সুধিজন। অতিথিরা নব নির্বাচিত কর্মকর্তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। এর আগে অতিথিদের ক্রেস্ট দিয়ে সম্মানিত করেন প্রেসক্লাব সদস্যগন।

সন্ধ্যায় দীপালোক একাডেমির পরিচালক ৭১ টিভির বরুন ব্যানার্জির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

(আরকে/এসপি/মার্চ ১৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test