E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

৬ মন ভেজাল দুধসহ ব্যবসায়ী আটক, লক্ষাধিক টাকায় মুক্তি!

২০১৯ মার্চ ১৬ ১৮:৩৪:৪২
৬ মন ভেজাল দুধসহ ব্যবসায়ী আটক, লক্ষাধিক টাকায় মুক্তি!

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আটককৃত অপদ্রব্য মিশ্রিত ছয় মন দুধসহ এক ব্যবসায়িকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে তাকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘুটিরডাঙি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। আটককৃত দুগ্ধ ব্যবসায়ীর নাম আব্দুল আহাদ কালু। তার বাবার নাম বদরউদ্দিন। তিনি ঘুটিরডাঙা প্রাথমিক দুগ্ধ উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি।

ঘুটিরডাঙা গ্রামের আব্দুস সামাদ জানান, সাতক্ষীরার শহরের সঙ্গীতা সিনেমা মোড়ে এক সময় বাদাম বিক্রি করতেন আব্দুল আহাদ কালু। পরবর্তীতে তিনি রিক্সা চালাতেন। ১৫ বছর আগে তিনি বাড়িতে দু’টি গরু পোষেন। বাড়িতে গরু পোষার পাশাপাশি তিনি ব্রহ্মরাজপুর, কালেরডাঙা, বালিথা এলাকা থেকে দুধ সংগ্রহ করে বাজারজাত করতেন।

পরবর্তীতে তিনি সংগৃহীত দুধের সঙ্গে ভারতীয় গুড়া দুধ, পাম ওয়েল ও শ্যাম্পু ভ্যালেণ্ডার মেশিনে মিশিয়ে মিল্ক ভিটা, প্রাণ, ব্রাক, ও আকিজের (ফার্ম ফ্রেশ) কাছে বিক্রি করে কয়েক বছরে কোটিপতি বনে গেছেন। সকালে তিনি ভেজাল দুধ প্রাণ ও ব্রাক কেন্দ্রে, বিকেলের দুধ তিনি মিল্ক ভিটায় দিয়ে থাকেন। এ সমস্ত দুধ বিক্রির জন্য তিনি মিল্ক ভিটাসহ সংশ্লিষ্ট ল্যাব ট্যাকনেশিয়ানকে ম্যানেজ করতেন। একপর্যায়ে তিনি ঘুটিরডাঙা প্রাথমিক দুগ্ধ উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি বনে যান।

আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুরাতন সাতক্ষীরা পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপপরিদর্শক মামুনসহ তিনজন পুলিশ সদস্য ভ্যালেণ্ডার মেশিনে দুধে ভেজাল মেশানোর সময় কালুকে হাতে নাতে ধরে ফেলেন। জব্দ করেন ভেজাল মেশিন তৈরির এ সময় জব্দকৃত ছয় মন ভেজাল দুধসহ কালুকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায় পুলিশ। রাত ১২টার দিকে ঘুটিরডাঙা লুৎফর রহমানের ছেলে শহীদুলের মাধ্যমে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে দুধসহ কালুকে মুক্তি দেন পুরাতন সাতক্ষীরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বহুল আলোচিত উপপরিদর্শক মনির হোসেন। এ ছাড়া দালাল চক্রটি কালুর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় ১২ হাজার টাকা।

টাকা নিয়ে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন তালা উপাজেলার মহান্দি গ্রামের দুগ্ধ খামার মালিক রমেশ চন্দ্র ঘোষ,ব্রহ্মরাজপুরের শংকর সাহা, হারু, জিল্লুর রহমান, কালেরডাঙার রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন।

ঘুটিরডাঙা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে শহীদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানান, এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা উপপরিদর্শক মনিরকে তিনি নিজ হাতে করে দিয়েছেন। (রেকডিং আছে।) বিনেরপোতা মিল্কভিটা দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ল্যাব টেকনিশিয়ান মাহাবুবর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে বিনেরপোতা মিল্ক ভিটা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ জানান, এ কেন্দ্রে কোন ভেজাল দুধ নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।

জানতে চাইলে পুরাতন সাতক্ষীরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনির হোসেন শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে আটককৃত ভেজাল দুধসহ কালুকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার না করেই বলেন, যা কিছু জানে সাংবাদিক কাম চেয়ারম্যান মোজাফফর ভাই-ই ভালো জানে। পত্রিকায় দেওয়ার আগে তার কাছে জানবেন।

(আরকে/এসপি/মার্চ ১৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test