E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খাদ্যমন্ত্রীর জামাতা রাজনের মৃত্যু, সন্দেহের তীর এখন সহকর্মীদের দিকে!

২০১৯ মার্চ ২০ ১৭:১৩:৩৮
খাদ্যমন্ত্রীর জামাতা রাজনের মৃত্যু, সন্দেহের তীর এখন সহকর্মীদের দিকে!

নওগাঁ প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেন্টাল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাজন কর্মকারের (৩৯) মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে নানা অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। বিশেষ করে ডা. রাজনের কতিপয় সহকর্মীকে ঘটনার পর এবিষয়ে বেশ সরব দেখা যায়। কিন্তু অবাক কান্ড হলো, সেদিন যা ঘটেছিল, তা পর্যালোচনা করলে সন্দেহের পাল্লাটা ভারি হয় সহকর্মীদের দিকেই।

ডা. রাজনের পারিবারিক সূত্র জানায়, রাজন সাধারনত অপারেশন করতেন, ফাস্ট কেয়ার হাসপাতাল, গ্রীণ লাইফ হাসপাতাল ও হেল্থ এ্যান্ড হোপ হাসপাতালে। অন্য হাসপাতালে সুযোগ থাকা সত্বেও পেশাদারিত্বের কারনে কখনো কাজ করেননি। কিন্তু সেদিন প্রথমবারের মতো তিনি অপারেশন করতে যান মানারাত হাসপাতালে। এখানেই প্রশ্ন ওঠে, কার প্ররোচনায় সেদিন তিনি অপারেশন করতে গেলেন মানারাত হাসপাতালে?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাস সূত্রে জানা যায়, আগেরদিন ডাক্তার মীর নওয়াজেশ আলী রাজিব তাকে ওরাল কন্সট্রাকন্সট্রাকশন ওটিতে যাওয়ার জন্য জোর করতে থাকেন। যার পিতা কিনা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন। তার জেদাজেদিতে ডা. রাজন বিনা পয়সায় অপারেশন করার শর্তে রাজি হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডা. রাজনের এক সহকর্মী চিকিৎসক জানান, তাদের মধ্যে পেশাগত দ্বন্দ ছিল।

সেদিন দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারও ডা. রাজিবের সঙ্গেই গ্রহন করেন রাজন। ডা. রাজন ও ডা. রাজিব লাঞ্চ এবং ডিনারে গেলে সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ডা. সাজিদ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ডা. সাজিদ ওই হাসপাতালে কোন চেম্বার করেননা। ওটির সঙ্গেও তার কোন সম্পৃক্ততা ছিলনা।

তিনি হলেন, বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক। এই ডা. সাজিদের সঙ্গেও ডা. রাজনের পেশাগত দ্বন্দ ছিল। সেদিন ছিল সরকারী অফিসের দিন। তবে কেন ডা. সাজিদ অফিস সময়ে সেখানে গেলেন? সেই ডিনারের পরেই রাজনের মতো উদার মানসিকতার সার্জন অপারেশন শেষ না করেই হাসপাতাল থেকে চলে গেলেন? সেখানে কি ঘটেছিল?

মানারাত হাসপাতালের ওটি বয়, এনেসথেসিস্ট ও তার স্ত্রী ডা. কৃষ্ণা মজুমদার জানান, ডা. রাজন হাসপাতালে ডিসকমফোর্ট ফিল করছিলেন। তিনি ফোনে ডা. কৃষ্ণা মজুমদারকে এই ডিসকমফোর্টের কথা জানিয়েছিলেন। এমনকি বাসায় আসার পরেও বার বার তিনি শারিরিক অস্বস্তিতার কথা বলছিলেন। তবে কি ডিনারে তার খাবারের সঙ্গে কিছু মেশানো হয়েছিল? বা কোন বাকবিতন্ডা হয়েছিল? যার কারনে ডা. রাজন ডিসকমফোর্ট ফিল করতে শুরু করেন? এমন প্রশ্ন তার পরিবার ও তদন্ত কর্মকর্তাদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। শুধু তাই নয়, কেন ডা. রাজন সেদিন প্রথমবারের মতো মানারাত হাসপাতালে ওটিতে গেলেন? ডা. মীর নওয়াজেশ আলী রাজিব কেন তাকে জোর করে ওটিতে নিয়ে গেলেন এবং কেনইবা ওটি শেষ না করেই ডা. রাজন চলে এলেন? বারডেম হাসপাতালে অফিস থাকা সত্বেও ডা. সাজিদ মানারাতে কেন গেলেন এবং লাঞ্চ ডিনারে অংশ নিলেন আবার চলেও আসলেন। সেখানে তার কোন চেম্বারও নেই ওটিতেও কাজ ছিলনা। আর সেখানে এমন কি ঘটেছিল যে ডা. রাজন ডিনারের পরেই ডিসকমফোর্ট ফিল করতে শুরু করেন? বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

সূত্র জানায়, গত ১৬ মার্চ দিনগত রাত ১১টার দিকে ডা. রাজন বাসায় ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষনিক তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ডা. রাজন নওগাঁর বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা।

(বিএম/এসপি/মার্চ ২০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test