E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাকা ধার নেওয়ায় জালিয়াতি করে বাড়ি দখল

২০১৯ মার্চ ২৩ ১৮:৪০:৪৬
টাকা ধার নেওয়ায় জালিয়াতি করে বাড়ি দখল

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : চিহ্নিত সুদখোর মুঞ্জুরুজ্জামান আমার স্বাক্ষরিত অ্যাফিডেভিট ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে আমার  বাড়ি দখল করে নিয়েছে। আর এই কাজে তাকে সহায়তা করেছে সাতক্ষীরা জজ আদালতের স্টোর কীপার আবদুল আলিম। তাদের কারণে আমি এখন বাড়ি জমি হারিয়ে পথে বসেছি।

শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানান সাতক্ষীরার লাবসা দরগাহর ডা. গিয়াসউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী দিলারা আহমেদ। এ সময় তার সাথে ছিলেন তার মেয়ে সাবিকুন নাহার ও জামাতা মনির খান এবং বাড়ির ভাড়াটিয়া শহিদ হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন লাবসা মৌজার ৭১৪ নম্বর খতিয়ানে ৭২৪ দাগের ৩৩ শতক সম্পত্তির মধ্যে ১১ শতকের রেকর্ডীয় মালিক মাতা মেহেরুননাহার তার নামে (দিলারা আহমেদ) লিখে দেন। ওই জমিতে চারতলা ফাউন্ডেশনের একটি বাড়ি তৈরি করে দিলারা পরিবার ৩০ /৩৫ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।

তিনি বলেন, ২০০৫ সালে তার একমাত্র পুত্র সাহাবুদ্দিন মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হওয়ায় তাদের দুর সম্পর্কীয় আত্মীয় একই এলাকার আসাদুজ্জামোনের পুত্র মুঞ্জুরুজ্জামানের কাছে সহায়তা চাইলে এক মাসের জন্য তিনি ৪০ হাজার সুদ দেওয়ার শর্তে এক লাখ টাকা দেন। এ সময় তিনি একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেন। কিন্তু পরে আরও টাকার প্রয়োজনে তার দ্বারস্থ হলে তিনি দিলারা আহেেমদের কাছ থেকে একটি অ্যাফিডেভিট করিয়ে নেন। কিন্তু তখন দাবি অনুযায়ী টাকা মুঞ্জরুজ্জামান আর দেন নি।

তিনি বলেন, কিছুদিন পর গৃহীত টাকার বিপরীতে ১০ হাজার টাকা সুদ পরিশোধ করেন দিলারা। এর পর থেকে বাকি টাকা পরিশোধ করতে গেলে তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তিনি জানতে পারেন যে মুঞ্জুরুজ্জামান অ্যাফিডেভিটে দেওয়া স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবহার করে দিলারার জমি রেকর্ড করে নিয়েছে জজ আদালতের স্টোর কীপার আবদুল আলিমের সহায়তায়। এর বিরুদ্ধে দিলারা একটি মামলা করেন। এরই মধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একটি বুলডোজার নিয়ে দিলারার বাড়ি ভাঙতে যান। এ সময় কোনো কাগজপত্র তারা যেমন দেখাতে পারেন নি তেমনি কোনো প্রতিবাদ আপত্তি কোনোটারই মূল্য না দিয়ে বাড়িটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই বাড়িতে বসবাসরত কয়েকটি ভাড়াটিয়া পরিবারকে এমনকি মালিক হিসাবে আমাদের কাউকে কোনো নোটীশও দেয়নি আদালত। বাড়ি ভাংচুর করার সময় সেখানে থাকা কয়েক লাখ টাকার সম্পদও ধ্বংস করে দেয় তারা।

দিলারা তার লিখিত বক্তব্যে জানান, এ বিষয়ে পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় এক দাগে ৭০ হাজার ও আরেক দাগে ৮০ হাজার টাকা বিক্রয় দেখানো হয়েছে যা অত্যন্ত হাস্যকর। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন যে সম্পদের দাম অন্ততঃ দেড় কোটি টাকা তা দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে না কোনো মস্তিস্ক বিকর্তত লোকও। সুদখোর ও ভূমিদস্যু মুঞ্জুরুজ্জামান তার ভায়রা আলিমকে ব্যবহার করে এবং অ্যাফিডেভিটের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বাড়িটি গুড়িয়ে এখন সমতল করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন মায়ের কাছ থেকে পাওয়া ওই জমি তিনি তার একমাত্র পুত্র সাহাবুদ্দিনের নামে হেবা দলিল করে দেন ২০০৪ সালে। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন কালো টাকার প্রভাবে জালিয়াতি করে দিলারা পরিবারের জমি বাড়ি দখল করেছে ভূমিদস্যু সুদখোর মুঞ্জুরুজ্জামন । দিলারা এর প্রতিকার দাবি করে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

(আরকে/এসপি/মার্চ ২৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test