E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এসএসসি‘র ফল জানা হলোনা ওদের

২০১৯ এপ্রিল ১১ ১৭:১৮:১৩
এসএসসি‘র ফল জানা হলোনা ওদের

শরীয়তপুর প্রতিনিধি: ওরা দু‘জনই এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। ভালো ফল পাবার আশার ছিল। চোখ জুড়ে স্বপ্ন ছিল ভালো কোন কলেজে ভর্তি হবে। পরীক্ষার ফল ঘোষনার দিন যতই ঘনিয়ে আসছিল, ততই ওদের স্বপ্নটা প্রগাঢ় হচ্ছিল। কিন্তু সে স্বপ্ন নিমিষেই মিলিয়ে গেল একটি সড়ক দূর্ঘটনায়। ওদরে আর পরীক্ষার ফল জানা হলোনা। লাশ হয়ে ফিরতে হলো অভাগা মা-বাবার কাছে।

গতকাল বিকেল শরীয়তপুর থেকে মাদারীপুর লেকের পাড় মোটর বাইক নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল দুই বন্ধু দীগন্ত আর জুম্মন। বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত ১০টার পরে মাদারীপুর থেকে ফেরার পথে মাদারীপুর সদর উপজেলার মডেরবাজার সংলগ্ন শরীয়তপুর-মাদারীপুর সড়কে লোহার রড বহনকারি একটি ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয় দীগন্তের মোটর সাইকেলের। ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় দুই বন্ধুর।
নিহতরা হলেন, শরীয়তপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড তুলাসার গ্রামের ইউনুস মোল্যার ছেলে দিগন্ত (১৭) ও ৫নং ওয়ার্ড উত্তর বালুচড়া গ্রামের খোকন সরদারের ছেলে সুমন সরদার ওরফে জুম্মন (১৭)। তারা দু‘জনই এবছর পালং তুলাসার গুরুদাস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে শরীয়তপুর শহরবাসী। নিহত দুজনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাবা-মা আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের শোকের মাতম। সহপাঠী ও বন্ধুবান্ধবরাও তাদের বাড়িতে গিয়ে বন্ধুদের হারানোর বেদনায় কান্নায় ভেঙ্গে পরেছে। তাদের আহাজারীতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দিগন্তর চাচা আলী আহম্মদ মোল্যা জানান, দিগন্ত আমার মেজ ভাইর একমাত্র পূত্র সন্তান। আদরের ছেলেকে পরীক্ষার পর বাইক কিনে দিয়েছিলো তার বাবা। দিগন্ত এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে যার রেজাল্ট এখনও বের হয়নি। তাই পড়ালেখার চাপ না থাকায় সহপাঠী ও বন্ধুরা মিলে নিজের বাইকে মাদারীপুরে ঘুরতে গিয়েছিলো। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাদারীপুর থেকে ফেরার পথে একটি গাড়ি সাইড দিতে গিয়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা রড বোঝাই ট্রাকের সাথে দিগন্তের মটরসাইকেলের সংঘর্ষ হলে ওদের শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। মোটরবাইটিও ভেঙ্গে চুরমার হয়ে য়ায়। আজ বাদ জোহর জানাজা নামাজ শেষে ওদের দাফন করা হয়েছে।

দীগন্তের বাবা ইউনুছ মোল্যা একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকুরী করতো। জুম্মনের বাবা খোকন সরদার ঢাকায় রিক্সা চালায়। জুম্মন দূর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর পেয়ে সকালে বাড়ি আসে খোকন সরদার। তারাও দুই বোন এক ভাই। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক মা-বাবা, আত্মীয় স্বজন। বাড়ির পাশেই জুম্মনকে দাফন করা হয়েছে।

(ওএস/পিএস/এপ্রিল ১১, ২০১৯)







পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test