E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধেয়ে আসছে ঘূণিঝড় ফণি, উত্তাল বঙ্গোপসাগর 

২০১৯ এপ্রিল ২৭ ২২:৩৪:০১
ধেয়ে আসছে ঘূণিঝড় ফণি, উত্তাল বঙ্গোপসাগর 

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আবহাওয়াবিদদের দেওয়া নাম অনুযায়ী এই ঘূর্নিঝড়টির নাম ‘ফণি’। বর্তমান ঝড়টির গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ে ফণি’র প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। 

শনিবার বিকাল থেকেই সাগরে আছড়ে পড়ছে বিশাল-বিশাল ঢেউ। বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। এমন অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে টিকতে না পেরে মাছ ধরা ফিশিং ট্রলার ও বোডগুলো সুন্দরবনসহ উপকূলের মৎস্য বন্দরগুলোতে নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে শুরু করেছে। মোংলাসহ দেশের সব সমুদ্র ও নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহওয়া বিভাগ। তবে, মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১৫টি জাহাজে পন্য ওঠা-নামা স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ।

আবহাওয়া অধিদফতর এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত অবস্থায় উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে ভারতের অন্ধ্র-তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঝড়টি বিকেলে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমদ্র্র বন্দর থেকে ১ হাজার ৮৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছে বঙ্গোসাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপক’লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবিঘাটে সন্ধ্যায় খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ায় আজ বিকাল থেকে অনেক ফিশিং ট্রলার ও বোড বঙ্গোপসাগর থেকে ফিরে আসছে। ফিরে আসা ট্রলারের জেলেরা জানায়, শনিবার সকাল থেকেই বঙ্গোপসাগরে আছড়ে পড়ছে বিশাল-বিশাল ঢেউ। বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। আবহাওয়া বিভাগও সাগরে অবস্থানরত ফিশিং ট্রলার ও বোডগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে। এমন অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে টিকতে না পেরে মাছ ধরা ফিশিং ট্রলার ও বোডগুলো সুন্দরবনসহ উপকূলের মৎস্য বন্দরগুলোতে নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সাগর থেকে সুন্দরবনের দুবলা, কটকা, কচিখালী, হিরনপয়েন্টসহ বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবিঘাট, শরণখোলা, মোংলা, বরগুনার পাথরঘাটা ও পটুয়াখালীর মহিপুর-আলীপুর বন্দরে কয়েক শত ট্রলার ও ফিশিং বোড ফিরে এসেছে। সুন্দরবনেও ট্রলার ও ফিশিং বোড আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বন বিভাগ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার দুরুল হুদা জানান, বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠলেও ঘূর্ণিঝড়টি মোংলা বন্দর থেকে ১ হাজার ৯২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে। আবহওয়া বিভাগ মোংলাসহ দেশের সব সমুদ্র ও নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। এই পরিস্থিতিতে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১৫টি জাহাজে পন্য ওঠা-নামা স্বাভাবিক রয়েছে।

(এসএকে/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test