E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

কর্ণফুলীতে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ 

২০১৯ এপ্রিল ২৮ ১৫:৪৫:৩০
কর্ণফুলীতে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ 

চট্টগ্রাম  প্রতিনিধি : কর্ণফুলীতে এক গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি। অবশেষে পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ডাঙ্গারচর এসএ গ্রুপের ট্যাঙ্ক ফ্যাক্টরীর সামনে ভোলা নিবাসী রনির ভাড়া ঘরে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করায় গত তিন দিন যাবত ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসেনি বলে জানা যায়।

ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রত্মা রানী দে জানায়, গত ২৫শে এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ১১টায় কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর ১নং ওয়ার্ড এলাকার গৃহবধু মরিয়ম-২৮ (ছদ্মনাম) তার বাসায় গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এবং গৃহবধূ বলেন স্বামীর অবর্তমানে এক সন্তান নিয়ে বাসায় থাকাকালে সাবেক ইউপি সদস্য মৃত বাবুল হকের বকাটে ছেলে ইমন (২৬) তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

পরে ধর্ষক তাকে ২০ হাজার টাকার লোভ দেখান বলে ধর্ষিতা মহিলা মেম্বারকে তথ্য দেন। ঘটনাটি শুনে তিনি তাদের থানায় যেতে পরামর্শ দেন।

পরে তারা ২৬ এপ্রিল কর্ণফুলী থানায় হাজির হয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে । ধর্ষিত গৃহবধূ ও পরিবার থানায় জিডি করতে চাইলে পুলিশ বিষয়টি শুনে বুঝিয়ে বলেন এ বিষয়ে জিডি হবেনা, ঘটনা সত্য হলে আপনারা দ্রুত মামলা করেন আমরা আইনী ব্যবস্থা নেবো। প্রতি উত্তরে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানায়, তারা স্থানীয় ভাবে চেয়ারম্যান মেম্বারকে প্রথমে বলে দেখবেন এবং ভেবে আসতেছি বলে কৌশলে থানা থেকে বের হয়ে আর যোগাযোগ করেনি। এমনটি তথ্য জানালেন কর্ণফুলী থানার অপারেশন অফিসার আওরঙ্গ দেব।

তার পরেও বিষয়টি সেনসেটিভ হওয়ায় উক্ত অফিসার ঘটনাটি অতিসত্বর কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলমগীর মাহমুদ কে অবহিত করলে তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি সুজন বড়ুয়াকে নির্দেশ দেন এবং ঘটনাস্থল ও ভিকটিমের বাসায় গিয়ে যোগাযোগ করে খবরাখবর যাচাই বাচাই পুর্বক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার।

এদিকে গৃহবধূ ধর্ষণে অভিযুক্ত ইমনেরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তারা স্থানীয়ভাবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমঝোতার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে বলে স্থানীয় সুত্রে অভিযোগে উঠেছে। তবে বিষয়টি উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হলে তারা মামলার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিক আহমদ বলেন, ঘটনাটি শুনে তাদেরকে বলেছি এটা স্থানীয়ভাবে সমাধানের বিষয় না, যেহেতু ধর্ষণের ঘটনা সুতরাং তাদের থানায় যেতে পরামর্শ দিয়েছি।’

শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব-ইনস্পেক্টর সুজন বড়ুয়া বলেন, আমি এখন ঘটনাস্থলে আছি। বিষয়টি নিয়ে গৃহবধূ ও ভিকটিমের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ কি বলছে সেটা দেখতেছি।’

ভিকটিম পরিবার ভিন্ন জেলার হওয়ার সহজে ভয়ে মুখ খুলছেনা। তারা যা বলার পুলিশকে বলবেন বলে জানান।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, এত বড় ঘটনা এখনো থানায় এজাহার বা মামলা হয়নি উল্টো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ইমন একজন বকাটে মাদকাসক্ত তাকে দ্রুত আটক করে মামলা দায়ের ও ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা এবং মামলা না করার ব্যাপারে কেউ চাপ সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান স্থানীয়রা।

(জেজে/এসপি/এপ্রিল ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test