E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

২০১৪ জুলাই ২৬ ১৩:২৪:০৯
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অপহরণের মামলা করায় আসামীরা বাদি ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে। নিরুপায় হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দেড়মাস যাবৎ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শনিবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নেংগী গ্রামের  দিনমজুর বৃদ্ধ আকবর কারিকর।

আকবর আলী কারিকর তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৯ সালে তার মেঝ মেয়ে আকলিমা খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার ফতেপুর গ্রামের বদরুজ্জামান কারিকরের ছেলে সুমন কারিকরের বিয়ে হয়। পরে জানতে পারেন সুমন একজন সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মোটর সাইকেল ছিনতাইকারি। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে যৌতুকের দাবিতে আকলিমাকে মারপিট করত সুমন। একপর্যায়ে বিয়ের সময় দেওয়া যৌতুক বাবদ দেড় লক্ষাধিক টাকার সোনার জিনিস বিক্রি করে দেয় সুমন। এরপর ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে আকলিমার উপর শারীরিক নির্যাতন চালাতো সুমন ও তার পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে ২০১২ সালের মাঝামাঝি নাগাদ আকলিমাকে নির্যাতনের পর বাচ্চাসহ আমার বাড়িতে তুলে দেয়। দেড় বছর পর সুমন ১২/১৪ জন সন্ত্রাসীসহ তার (আকবর) বাড়িতে এসে আকলিমাকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মেয়েকে দেওয়ার কথা বললে সুমন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা স্ত্রী হাসিনা খাতুন, ছেলে মিণ্টু, টিপু, মেয়ে আকলিমাকে মারপিট করে চলে যায়।এরপর থেকে সুমন আমার ছোট মেয়ে নেঙ্গী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী পলি খাতুনকে স্কুলে যাওয়া ও আসার ক্ষেত্রে উত্যক্ত করত।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয় চলতি বছরের ১লা ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ছোট মেয়ে পলি খাতুনকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাহাউদ্দিনের দোকানের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে সুমন, বদরুজ্জামান ও সামছুর রহমান।

এ ঘটনায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থানায় ওই তিনজনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (জিআর- ৪৬ কালীগঞ্জ)করেন তিনি। থানায় মামলার পর পুলিশ আসামী বদরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে। এ খবর পেয়ে সুমন ভারতীয় মোবাইল থেকে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের হুমকি দেয়। এব্যাপারে চলতি বছরের ২ এপ্রিল তিনি খুলনা র‌্যাব- ৬ এর কাছে অভিযোগ করি। পরদিন পুলিশ পলিকে উদ্ধার দেখায়। ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই নকীব অয়জুল হক আমার মেয়ে পলিকে সাতক্ষীরা কোর্টে আনলে সুমনের মামা কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আবুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা পলিকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ আদালত চত্বরে চলে আসায় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। গ্রেফতারের চার মাস পর বদরুজ্জামান জামিনে মুক্তি পেয়ে তার ও পরিবারের সদস্যদের উপর নতুন করে জীবননাশের হুমকি দেয়। এর কয়েকদিন পর আমাদের প্রতিবেশি ও প্রতিপক্ষ জবেদ আলী ও মোহাম্মদ আলীর সহায়তায় সুমন ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা তার ও পরিবারের সদস্যদের খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। ভয়ে তিন ছেলে মিন্টু, টিপু, মিয়ারাজ, স্ত্রী, হাসিনা, মেয়ে আকলিমা, পলি ও নাতনি সুমাকে নিয়ে দেড়মাস ধরে তিনি পালিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এ ঘটনায় তিনি কালীগঞ্জ থানায় গত ২ জুলাই একটি সাধারণ ডায়েরী (৬৭৩নং) করেন। বর্তমানে তিনি অনাহারে অর্ধাহারে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পলি খাতুনকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত ও হুমকিদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানানো হয়। একইসাথে বাড়িতে ফিরে নিরাপদে বসবাস করতে পারার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আকবর আলী কারিকরের দু’ ছেলে মিন্টু, টিপু ও শ্রীধরকাটি গ্রামের রফিকুল শেখ।

এ ব্যাপারে সুমন কারিকর বলেন, তার স্ত্রীকে কোন কারণ ছাড়াই আটকে রেখেছে তার বাবা। পলি নিজের ইচ্ছায় অন্যত্র চলে গেলেও তাদের নামে মিথ্যা অপহরণ মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। কোন প্রকার হুমকি ধামকির কথা অস্বীকার করে সুমন।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নকীব আয়জুল কবীর জানান, পলি কাতুন অপহরণ মামলায় ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত আসামীদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। সুমন একজন সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাদি পরিবার যাতে বাড়িতে থাকতে পারে সেজন্য তাদেরকে সব ধরণের সহায়তা করা হবে।

(আরকে/এটিআর/জুলাই ২৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test