E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাগরে ৬৫ দিন মাছ শিকার বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি

২০১৯ মে ১২ ১৭:১০:৫১
সাগরে ৬৫ দিন মাছ শিকার বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি

বাগেরহাট প্রতিনিধি : মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয় কর্তৃক গোটা বঙ্গোপসাগরে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বাগেরহাটসহ উপকুলীয় এলাকার জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। এবারে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক সকল নৌযান এ নিষিদ্ধের আওতায় এসেছে।

এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে ইতিমধ্যে বাগেরহাট, শরণখোলা, বরগুনা, পাথরঘাটা, পিরোজপুরসহ উপকুলীয় জেলা ও উপজেলাগুলিতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে জেলেদের বিভিন্ন সংগঠন।

জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ী নেতারা জানান, জৈষ্ঠ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত বাগেরহাটসহ উপকুলের লক্ষাধিক জেলে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরন কওে থাকে। জৈষ্ঠ মাসে প্রথমে সমুদ্র যাত্রার জন্য গত চৈত্র মাস থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা মহাজনদের কাছ থেকে দাদনের টাকা নিয়ে এবং কেউ কেউ ব্যাংক ও এনজিও থেকে লোন নিয়ে জেলেদের অগ্রীম টাকা প্রদান করেন। ট্রলার মেরামত এবং জাল ক্রয় কিংবা জাল মেরামত করে যখন সমুদ্রে যাবার প্রস্ততি শেষ করেন। ঠিক তখন মাছ ধরায় মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার খবরটি যেন তাদের মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।

শরণখোলার রাজৈর এলাকার এফবি খায়রুল ইসলাম ফিশিং ট্রলারের মালিক জাকির হোসেন, এফবি ৮ ভাই ফিসের মালিক আনোয়ার হোসেন, এফবি মায়ের দোয়ার মালিক রফিকুল ইসলাম ও এফবি জিসানের মালিক মনির হোসেনসহ অন্যান্যরা জানান, সরকার এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে জেলেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়বেন।

বাগেরহাট জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আবেদ আলী ও শরণখোলা উপজেলা মৎসজীবি সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, এবারে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক সকল নৌযান এ নিষিদ্ধের আওতায় এসেছে। এটি সরকারের একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। হঠাৎ এরকম সিদ্ধান্তে উপকুলের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এ সময়ে ভারতসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের জেলেরা বঙ্গোপসাগর থেকে সকল প্রকার মাছ ধরে নেয়ার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি সরকারকে পুনঃ বিবেচনা করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে গত ২৮ এপ্রিল বরগুনায় উপকুলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার ১৫ হাজার জেলেদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বড় ধরনের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত স্মারকলিপি বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেছে জেলে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও উপকুলের বিভিন্ন স্থানে একই দাবীতে একাধিক কর্মসুচী পালিত হয়েছে। এসব কর্মসুচীতে জেলে পরিবারের হাজার নারী পুরুষ অংশগ্রহন করেছে।

মৎস্য বিভাগের খুলনা বিভাগের উপ-পরিচালক রনজিৎ কমার পাল বলেন, এর পূর্বে প্রতি বছর সাগরে ট্রলিং ট্রলারের ক্ষেত্রে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর ছিল। এবারে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক সকল নৌযান এ নিষিদ্ধের আওতায় এসেছে। এ সময়টায় অধিকাংশ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারনেই সরকার এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, অক্টোবরের শেষ থেকে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের অবরোধ কার্যকর থাকবে বলে তিনি জানান।

(এসএকে/এসপি/মে ১২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test