E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মা দিবসে গোবিন্দগন্জে বৃদ্ধাশ্রমে মা’দের খোজঁ রাখেনি কেউ

২০১৯ মে ১৩ ১৪:৫৯:০৯
মা দিবসে গোবিন্দগন্জে বৃদ্ধাশ্রমে মা’দের খোজঁ রাখেনি কেউ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : রবিবার (১২ মে) বিশ্ব মা দিবস। এ দিবসে সকল মায়ের খোঁজ-খবর রেখেছেন তাদের সন্তানরা। কিন্ত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বৃদ্ধাশ্রমের স্বজনহারা মা’দের খোঁজ রাখেনি কেউ! এমন কি প্রশাসন কিংবা জন প্রতিনিধিরাও খবর রাখেনি। জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ছোট সোহাগি গ্রামস্থ বৃদ্ধাশ্রমটি অবস্থিত।

ওই এলাকার একদল যুবক গত দুই বছর আগে নিজ নিজ উদ্যোগে বৃদ্ধাশ্রমটি প্রতিষ্ঠিত করে।
রবিবার বিকেলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বৃদ্ধাশ্রম মায়েরা বেঁচে আছেন অশ্রজলকে অবলম্বন করে। তারা অশ্রুসিক্ত কন্টে অছ্রিত আছমা বেগম জানান, সব সময় সন্তানের কথা মনে পড়ে, রাতে ঘুম ধরে না, আর ঘুমালেও গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখন ছেলেটার মুখ খুব দেখতে ইচ্ছে করে।

আছমাকে আকড়ে ধরার জন্য অন্য দশটা মায়ের মতো তারও সন্তান ছিলো। কিন্তু আছমার সেই কলিজার ধনটি এক সড়ক দূর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর থেকে অসহায় হয়ে পড়ে। জহুরা খাতুন নামের আরেক বৃদ্ধ মা বলেন, একদিন তার সবই ছিল। কপাল দোষে আজ এই অবস্থা হয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তানরা যার যার মতো সংসার পেতে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু কারো কাছেই মায়ের জায়গা হয়নি। ফলে দুই বছর আগে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তারপর ঠাঁই হয় গোবিন্দগঞ্জ বৃদ্ধাশ্রমে। শুধু জহুরা বেগমই নয় বৃদ্ধাশ্রম ঠাঁই হওয়াসহ আশ্রিত সাতজন মায়ের জীবনের গল্পগুলো আরও করুণ তারা আরও অসহায়।

আশ্রমটিতে দেখা গেছে, সেখানে ১২ জন বৃদ্ধ ও সাতজন বৃদ্ধা কেউ শুয়ে কেউ বা বসে আছেন। কেউবা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আকাশ পানে তাকিয়ে কী যেন ভাবছেন আরেক মা। কাছে গিয়ে সন্তানদের কথা জিজ্ঞেস করতেই চোখ দুটো ছলছল করে ওঠে তার। সন্তানদের ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি তিনি।

আশ্রমটির পরিচালকদের একজন মেহেদী হাসান বলেন, গত ২০১৭ সালে বৃদ্ধসেবা বৃদ্ধাশ্রম নামের এই প্রতিষ্ঠানটি কয়েকজন বন্ধু সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়। এখানে যারা আছেন তাদের বেশিরভাগই ছিন্নমূল, হতদরিদ্র । ফলে নিজেদের প্রচেষ্টায় মাঝে-মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও কিছু মানুষের দান-সদকা, জাকাত-ফিতরা, কুরবানির পশুর চামড়ার টাকা-পয়সায় এটি পরিচালিত হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগক্তারা জানায়, শুরুতে বাসা ভাড়া নিয়ে আশ্রিতদের ব্যবস্থা করা হতো। এর পর এক ব্যাক্তি (নামপ্রকাশ না করা শর্তে) গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের সোহাগী গ্রামে ছয় শতাংশ জমি দান করলে সেখানে স্থানান্তর করা হয় এখনো সেখানেই রয়েছে।

আশ্রমটির হিসাব রক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি চালাতে প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ব্যয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে দুই টন টিআর ছাড়া সরকারি ভাবে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধির কাছে সহযোগিতা চেয়ে যোগাযোগ করা হলেও কেউ পাশে আসেনি। তবে দেশের বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিন।

(এসআরডি/এসপি/মে ১৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test