E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাভার-আশুলিয়া-ধামরাইয়ে সীসা কারখানা, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

২০১৯ মে ১৭ ১২:৩০:৫৮
সাভার-আশুলিয়া-ধামরাইয়ে সীসা কারখানা, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসী

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা জেলার অন্তভূক্ত সাভার আশুলিয়া ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে পুরাতন ব্যাটারী পুড়িয়ে সীসা তৈরীর কারখানা। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যর জন্য ঝুঁকি এবং এই ব্যাটারী পুরনোর বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদিপশু ও শিশুসহ এলাকার আশপাশের বিভিন্ন বয়সের লোকজন ও এধরনের সমস্যার কারনে যেমন পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে তেমনি করে এলাকার মানুষের মাঝে নতুন করে দেখা দিয়েছে আতংক।

সাভার ও আশুলিয়ার, টংগাবাড়ী কাঠগড়া, বিরুলিয়ার খাগান শিমুলিয়ার গাজীখালী নদীর পাড় ধামরাইয়ের বড় চন্ডাল ইটভাটার পাশে বুলবুল আহম্মেদ দুটি সীসা কারখানা রয়েছে তার এই অবৈধ সীসা কারখানার ব্যাটারী পুড়িয়ে সীসা তৈরীর কারনে কারখানা হতে বিষাক্ত বর্জ্য এসিডের পানি নির্গত হয়ে আশপাশের ফসলি জমিগুলো ফসল ফলানোর অপযোগী হয়ে পড়ছে ও বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় গাছপালা নষ্ট গবাদিপশু শিশু সহ রোগকান্ত হচ্ছে সকল বয়সের মানুষ।

আশুলিয়া শিমুলিয়া ইউনিয়নের রাঙ্গামাটির একজন কৃষক নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় দেলোয়ার হোসেন ব্যাটারী পুড়িয়ে সীসা তৈরীর কারনে আমাদের গ্রামে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে আমার দুটি গবাদিপশু গরু হঠাৎ কি যেন হলো স্ট্রোক করে মারা গেল আমাদের শিশুসহ বড়দেরও শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে এবং বিভিন্ন রোগের দেখা দিয়েছে।

এব্যাপারে উক্ত ফ্যাক্টরির মালিক আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই ব্যাটারী ফ্যক্টরির চালানোর জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র ও বৈধ কাগজপত্র নিয়েই ফ্যক্টরি চালাচ্ছি।

এলাকাবাসী জানান, গত কয়েকদিন আগে বংশী নদীর পাড়ে একটি ডেইরি ফার্মের ২০/২৫টি গাভী হঠাৎ করে মারা যায় এবং পরে বিভিন্নভাবে অনুমান করে জানাযায় এগুলো ব্যাটারীর বিষাক্ত এসিডের পানির ও ধোঁয়ার কারনে মারা যায় এবং এরকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর।

ফ্যক্টরিগুলো দেখতে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, চারপাশে টিন দিয়ে বেড়া ও বেড়ার ভিতরে টিনশেডের তৈরী ঘরের মধ্য তৈরী করছে পুরাতন ব্যাটারী জালিয়ে সীসা আর এসব কারখানা গুলোর একটিরও নেই কোন বৈধ কাগজপত্র এবং সাইনবোর্ড বিহীন চলছে এসব কারখানা। আর এসব কারখানায় যারা কাজ করছে তাদের মধ্য শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারীপুরুষ এরাও রয়েছে মারক্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।

নেই কোন পরীক্ষিত ব্যবস্থা এবং এদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও কারখানাতেই আর শ্রমিকদের ২৪ঘন্টায় দুই শিপ্টে কাজ করতে হয় বলে জানান ফ্যাক্টরিতে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক।

এসকল ফ্যাক্টরির অধিকাংশ মালিক স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বুক ফুলিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ফ্যক্টরিগুলো।

গাজীখালী নদীর পাড় সীসা কারখানার মালিক বলেন, ভাই এসব বলে লাভ কি আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও সকলকে মেনেজ করেই কারখানা চালাচ্ছি।

তবে এসমস্ত অভিযোগের ব্যপারে ফ্যক্টরি মালিকদের কোন মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে আর এসকল বিপর্যয় ফ্যাক্টরির বিরূদ্ধে প্রয়োজনীয় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তিপক্ষের স্বদায় দৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

এব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডক্টর এম আমির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সীসা একটি খুবই বিপদজনক উপাদান যা থেকে মানুষের শরীরে ক্যান্সারের মত মারাত্নক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে। শুধু তাই নয় শ্বাসকষ্ট এজমার মতো কঠিন রোগেও আক্রান্ত হয়ে থাকে এছাড়া সীসা মিস্রীত এসিডের পানি যেখানে পড়বে সেই মাটিতে যেসকল ফসল হবে সেগুলো খেলেও ক্যান্সার হতে পারে এবং এসকল অবৈধ সীসা কারখানা দ্রূত বন্ধ করা দরকার বলে মনে করেন এই অভিজ্ঞ মহল।

(টি/এসপি/মে ১৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test