E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিনা মূল্যে রোজাদাদের সেহরী খাইয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আব্দুর রশিদ

২০১৯ মে ৩১ ১৫:৩১:০৯
বিনা মূল্যে রোজাদাদের সেহরী খাইয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আব্দুর রশিদ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : রাত্রি কালীন দূর পাল্লার রোজাদার যাত্রীদের বিনামূল্যে সেহরী খাইয়ে মানবতার অনন্য দৃস্টান্ত স্থাপন করেছেন মাতবর হোটেল। ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী পরিবহন বাস স্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে অবস্থিত মাতবর হোটেল এ্যান্ড রেষ্টুরেন্টে রোজা শুরুর দিন থেকে প্রতিদিন কয়েক’শ রোজাদার যাত্রীর ভোর রাতে সেহরী খাবার পরিবেশন করে আসছেন হোটেলের মালিক আবদুর রশিদ।

ঢাকা থেকে বরিশাল, কুয়াকাটাসহ দক্ষিনাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে যাতায়াতকারী রোজাদার যাত্রীরা ভোর রাতে মাতবর হোটেলে বিনামূল্যে সেহরী খাবার সুযোগ পাচ্ছেন। যাত্রীদের সেহরী খাবারের এই ব্যবস্থা ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিনাঞ্চলগামী পরিবহন চালক ও যাত্রীদের জন্য এক নতুন চমক সৃস্টি হয়েছে।

হোটেলের মালিক আবদুর রশিদ জানান, মহানগরী ঢাকা, যশোর-খুলনা-বেনাপোলসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর জন্য ছেড়ে আসা পরিবহনের রোজাদার যাত্রীরা তাঁর এই হোটেলে বিনা মূল্যে সেহরী খাবার সুযোগ পাচ্ছেন। অধিকাংশ পরিবহন গৌরনদী বাস স্ট্যান্ডে আসার মধ্যেই সেহরী খাবার সময় হয়। সেহরীর পাঁচ দশ মিনিট সময় বাকী থাকলেও পরিবহন চালকেরা বিষয়টি জেনে এই হোটেলের সামনেই গাড়ি দাড় করান। চালক ও রোজাদার যাত্রিরা নেমে হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেন নিজেদের ইচ্ছামত মাছ, মাংস, সবজিসহ হোটেলের রান্না করা তাজা সকল আয়োজনের খাবারে।

অনেকে বিষয়টি জানলেও নতুন যাত্রিরা খাবার পরে বিল দিতে গিয়ে তাদের চোখ বড় হয়ে যায়। কারণ, নতুন যাত্রীরা তখনই জানতে পারেন যে, এই হোটেলে সেহরীর বিল নেয়া হয় না ! যদিও খাবারের আগে যাত্রিরা খাবারের দাম জিজ্ঞেস করলে হোটেল কর্মচারীরা জানিয়ে দেয় আগে খাবার খান, তার পর বিল। রোজার মাসে সেহরী খাবার ব্যবস্থা থাকায় দাম নিয়ে কোন যাত্রীই খাবারের মূল্য নিয়ে তেমন উদ্বিগ্ন না থাকলেও আগে থেকে তাদের দামের ব্যপারে কিছুইু জানানো হয় না। কারণ, বিনা মূল্যের কথা জানালে অনেক যাত্রী খাবেন, আবার অনেকে খাবেন না। এছাড়াও বিনা মূল্যে খাবার খাওয়া নিয়ে যাত্রীরা সংকোচে পড়ে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ি খাবারও তখন তারা খাবেন না। তাই কর্মচারীরা বিল নেয়ার কথা জানায় না।

খাবার পরে বিল পরিশোধ করতে গিয়ে হোটেল মালিক আবদুর রশিদ তাদের জানিয়ে দেন যে, সেহরীর খাবার জন্য কারো কাছ থেকে কোন টাকা নিবেন না। যাত্রীরা খাবারের দাম না নেয়ার কারণ জানতে চাইল তার সাফ উত্তর, বছরের ১১মাস যাত্রীদের নিয়ে তার ব্যবসা। রমজানের এক মাস সেই সকল যাত্রীদের কথা চিন্ত করে মানবতার জন্য পুরো রমজান মাস তিনি বিনা মূল্যে যাত্রীদের সেহরী খাবারের আয়োজন করেছেন।

যাত্রীরা জহানান, হোটেল মালিক খাবারের বিল তো নেয়নি ; উপয়ন্তু তাদের সাথে মালিক ও কর্মচারীদের ব্যবহার ছিল অভাবনীয়। বর্তমানে বানিজ্যিক মনোভারে এই দেশে রোজাদারদের বিনা মূল্যে সেহরী খাইয়ে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মাতবর হালে এ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক আবদুর রশিদ। এজন্য তিনি রোজাদারসহ স্থানীয়দের ভূয়ষী প্রশংসাও পাচ্ছেন সর্বত্র।

(টিবি/এসপি/মে ৩১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test