E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সড়কের মাঝখানে বিদ্যুৎ খুঁটি রেখেই পিচ ঢালাই

২০১৯ জুন ১৩ ১৩:৪৬:২৩
সড়কের মাঝখানে বিদ্যুৎ খুঁটি রেখেই পিচ ঢালাই

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রায় শেষের পথে কিশোরগঞ্জের নিকলী ও করিমগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সড়কের কাজ। কিন্তু ১০ দশমিক ২ কিলোমিটার (নিকলী-করিমগঞ্জ) এ সংযোগ সড়কের মাঝখানে পল্লী বিদ্যুতের ১৩ খুঁটি রেখেই শেষ করা হয়েছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ! ফলে রাত-বিরাতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। তখন কাঁচামাটির রাস্তা ছিল। হাওরে পল্লী বিদ্যুতায়ন শুরু হলে উপজেলার কারপাশা, বদলপুর, গৌরিপুর, শান্তিপুর, সহরমুল, জালালপুর ও নানশ্রী গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য রাস্তার পাশে খুঁটি স্থাপন করা হয়। এখন সড়কটি পাকা করার ফলে প্রশস্ত হয় দ্বিগুণ। এতে বিদ্যুতের খুঁটি সড়কের মাঝখানে পড়ে যায়। কিন্তু এগুলো না সরিয়েই নিকলী অংশের প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং কাজ শেষ করে ফেলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এদিকে নানা জটিলতায় করিমগঞ্জ অংশের প্রায় ২ কিলোমিটার সড়কের কাজ মন্থর গতিতে চলছে। এ অংশে এখনো ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি বলে জানা যায়।

এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিভিন্ন যানবাহনে করে এ সড়ক দিয়ে যাওয়া-আসা করে। মাস সাতেক আগে এ সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হলেও আজও এসব পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তরের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। এতে করে দিনের বেলায় সড়কে কিছু দুর্ঘটনা ঘটলেও রাতের বেলায় উপজেলার বাইরে থেকে আসা অনিয়মিত যানবাহনগুলো এসব বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা কারার ইফতিয়ারুল আহম্মেদ শরীফ জানান, খুঁটিগুলো না সরানোর ফলে ঝুঁকি নিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল করছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়েই চলছে। দ্রুত খুঁটিগুলো সরানোর দাবি জানাচ্ছি।

কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মনির উদ্দিন মজুমদার জানান, সড়কের মাঝখান থেকে খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদারের লোকজন ইতিমধ্যে নতুন খুঁটি বসানোর কাজ শুরু করেছে। সড়কের মধ্যস্থল থেকে খুঁটি সরিয়ে কিছু দিনের মধ্যেই নতুন খুঁটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থানান্তর হবে।

স্থানীয় কারপাশা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল হাসান বাবুলসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে। এখনই অনেক জায়গায় সিসি ব্লক সরে গেছে। এছাড়াও নানশ্রী চেয়ারম্যান বাজার হতে চালিটেক ও কোনাবাড়ি চৌরাস্তা মোড় হতে বড়ফল্লা পর্যন্ত দু’টি সংযোগ রাস্তা মূল সড়কে সংযুক্ত না করে দিলে হাওরের বোরো ধান নিয়ে বাড়ি যেতে পারবে না কৃষক। এতে করে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। নির্মাণাধীন পাকা সড়ক কৃষি জমি থেকে অনেক উঁচু হওয়ায় ওই দু’টি রাস্তার সংযোগ কাজ করে দেওয়ার দাবি জানান তারা।

এদিকে এলজিইডির নিকলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহমান মুহিম জানান, নানা টালবাহানার পর কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুকূলে খুঁটি স্থানান্তর ব্যয়বাবদ ১২ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো খুঁটিগুলো সরিয়ে নেয়নি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এছাড়াও নিকলী অংশের সড়কের কাজ ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুর্গম হাওর জনপদে এ সড়ক দিয়ে নিকলী উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের লোকজন কিশোরগঞ্জ জেলা সদরসহ করিমগঞ্জ, তাড়াইল এবং দেশের যেকোনো জায়গায় যাওয়াত করে থাকেন। ফলে এটি হাওরের মানুষদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক।

(ওএস/পিএস/১৩ জুন, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test