E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১৩ মাস কাজের পরে এক টাকাও বেতন পাননি সরকারের নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীরা

২০১৯ জুন ১৭ ১৮:০৬:৫৭
১৩ মাস কাজের পরে এক টাকাও বেতন পাননি সরকারের নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীরা

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : সরকারী চাকুরী করে বছর পার হলেও কোন বেতন ভাতা না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অর্থকস্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে আগৈলঝাড়ায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী কর্মচারী পরিবারগুলোর সদস্যরা। অর্ত কস্টের মানবেতর জীবন যাপন থেকে উত্তরনের জন্য তাদের প্রাপ্য বেতন ভাতা পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বৃহস্পতিবার লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী ওই কর্মচারীরা। 

কর্মচারীদের আবেদন সূত্রে জানা গেছে, আউট সোর্সি এর মাধ্যমে সরকার আগৈলঝাড়া উপজেলার ৪১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসের ০৫.১০.০৬০২.০০০.৩৫.০১০.১৭-১৭৭ নং স্মারকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার শুপারিশের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিগন তাদের স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে মুপারিশকৃত কর্মচারীদের নিয়োগপ্রত্র প্রদান করেন।

নিয়োগপত্র পেয়ে কর্মচারীরা ওই বছর ২৬ এপ্রিল তাদের কর্মস্থলে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকে তারা এপর্যন্ত কর্মস্থলে নিয়মিত কাজ করে আসলেও গত ১৩ মাসেও তারা বিদ্যালয় থেকে সরকারের কোন বেতন ভাতা তুলতে পারছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাকুরী প্রার্থীরা ওই সময় এলাকার বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের আর্থিকভাবে ম্যানেজ করেও কাঙ্খিত চাকুরী না পাওয়ায় এবং তাদের দেয়া টাকা ফেরত পাবার আশায় ওই সকল প্রভাবশালীদের কথানুযায়ি চাকুরী বঞ্চিতদের দিয়ে চাকুরী পাওয়া প্রার্থীসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী শিক্ষা অফিসার (ইউনিয়নের দ্বায়িত্বে কর্মরত), ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকসহ ১১জনকে বিবাদী করে বরিশাল সহকারী বিজ্ঞ জজ আদালতে মামলা করিয়ে দেয়।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলায় এরকম আটটি মামলা করা হয়। আদালতে মামলার অযুহাত দেখিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আটজন কর্মচারীকে গত ১৩ মাস যাবত কোন বেতন ভাতা প্রদান করেননি।

ভুক্তভোগীরা এ প্রতিনিধিকে জানান, আদালতে মামলা চলমান থাকলেও বিজ্ঞ আদালত তাদের বেতন ভাতা প্রদানের বিপক্ষে কোন নির্দেশনা বা রায় প্রদান করেননি। বেতন ভাতা প্রদানের বিপক্ষে আদালতের কোন নির্দেশনা না থাকলেও শিক্ষা কর্মকর্তা ওই মামলার অযুহাত দেখিয়ে তাদের বেতন ভাতা প্রদান করছেন না।

কাজ করেও বেতন ভাতা না বঞ্চিত ৩৬নং কদমবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মচারী কিরন অধিকারী, ৫০নং চক্রিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মচারী আইউব খান, ৪১নং জয়রামপট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মচারী মোঃ মাসুদ দাড়িয়া ও ৪৭নং দক্ষিণ চাঁদত্রিশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মচারী মিরাজ হাওলাদার পৃথক পৃথকভাবে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল হক তালুকদার বলেন, নিয়োগ কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শুপারিশক্রমে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগের পরে আদালতে আটটি মামলা হওয়ায় তাদের বেতন প্রদান করা যায়নি। আদালত বেতন প্রদানে কোন নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালত বেতন না দেয়ার যেমন নির্দেশনা দেয় নি।, তেমনি বেতন দেয়ারও কোন নির্দেশনা প্রদান করেন নি। ভুক্তভোগীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ১৯ জুন ধার্য তারিখে আদালত বেতন প্রদানের নির্দেশনা দিলে তাদের বেতন দিতে এক দিনও বিলস্ব হবে না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। সরকার যেহেতু তাদের নিয়োগ দিয়েছে এবং নিয়মিত তারা দ্বায়িত্ব পালন করছেন তাই তাদের বেতন প্রাপ্য। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে আদালত যেহেতু কোন নির্দেশনা প্রদান করেননি, সেহেতু তাদের বেতন প্রদানে বাধা থাকার কোন কথা নয়। তার পরেও বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে বেতন প্রদান ও দ্রুত মামলা নিস্পত্তির আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

(টিবি/এসপি/জুন ১৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test