E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধর্ষণের এক বছর পর জীবন প্রদীপ নিভে গেল আছিয়ার!

২০১৯ জুন ১৭ ১৮:২৯:৪৭
ধর্ষণের এক বছর পর জীবন প্রদীপ নিভে গেল আছিয়ার!

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধর্ষণের এক বছর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ধুঁকে ধুঁকে জীবন প্রদীপ নিভে গেল আছিয়া নামের আট বছরের এক ফুটফুটে শিশুর।

সোমবার (১৭ জুন) ভোররাতে শিশুটি ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় পেটে যন্ত্রনা অনুভব করলে মৃত্যুবরণ করে সে। এর আগে গত বছরের ৯ জুন শিশুটিকে ধর্ষণ করে উপজেলার মালতী গ্রামের তায়েজ আলীর বখাটে ছেলে মাহবুব (১৮) নামের এক যুবক।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৯ জুন ধর্ষক মাহবুব বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আছিয়াকে ডেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এতে রক্তক্ষরণ হয়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য হলে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। পরে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা চাপ সৃষ্টি করলেও আছিয়ার বাবা আশরাফ আলী বাদী হয়ে একই গ্রামের তায়েজ আলীর ছেলেকে আসামী করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ধর্ষক মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে প্রেরন করে। কিছুদিন পর আসামী জামিনে বের হয়ে আসে।

এ বিষয়ে শিশু আছিয়ার নানা হযরত আলী খান বলেন, ধর্ষণের পরেও প্রভাবশালীদের যেমন চাপ ছিলো, শিশুটি মারা যাবার পরেও তেমনি চাপে রয়েছেন বলে অভিযোগ করে বলেন, ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় আজ ভোররাতে আছিয়া ব্যাথা অনুভব করে ছটফট করতে থাকে। হাসপাতালে নেয়ার সুযোগই পাইনি। সকালের দিকে তাকে গ্রামের বাড়ি উপজেলার মালতীতে আনা হয়। এরপর স্থানীয় চেয়ারম্যান শুকুর মাহমুদ বাড়িতে এসে তার দাফনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করতে নির্দেশ দেন।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার (পিও) মো. বাইজিদ বলেন, সে সময় ধর্ষণের ফলে তার ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। এতে জনন অঙ্গ ছিড়ে মলদ্বারের সাথে এক হয়ে যায়। ক্ষতস্থানে আটটি সেলাই করা হয়। এরপরেও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এতোদিন ধরে সে চিকিৎসাধীন ছিলো। কোন অবস্থাতেই তার উন্নতি হচ্ছিলনা। ধর্ষণের যন্ত্রণা নিয়েই ধুঁকে ধুঁকে আজ ভোররাতে তার জীবন প্রদীপ নিভে যায়।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হলে ধর্ষক মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে প্রেরন করা হয়েছিল। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

(আরকেপি/এসপি/জুন ১৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test