E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

তিন বছর ধরে দাড়িয়ে আছে ব্রিজের খাম্বা, চরম দূর্ভোগ

২০১৯ জুন ২২ ১৪:২৪:১৯
তিন বছর ধরে দাড়িয়ে আছে ব্রিজের খাম্বা, চরম দূর্ভোগ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর-ভবানীপুর চৌতাপাড়া নামকস্থানে প্রায় তিন বছরেও শেষ হয়নি ফুট ব্রিজের নির্মাণ কাজ। খালের দুই পাড়ে শুধুমাত্র সাড়ে ১৮ লক্ষ টাকা ব্যায়ে খাম্বা তৈরির পর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাই চোখের সামনে প্রায় তিন বছর ধরে শুধু দাড়িয়ে আছে খালের মধ্যে খাম্বা। ফলে ওই এলাকার প্রায় ২০ গ্রামের জনসাধারণদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় ০৭ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে কাশিমপুর-গোনা ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেষে বয়ে গেছে রতনডারি খাল। ১৯১৪ সালে কৃষি জমিতে সেচ ব্যবস্থা ও নৌ চলাচলের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য এবং পানি প্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশলী রাণীনগরের উদ্যোগে কুজাইল সুইচ গেট থেকে হাতিরপুল হয়ে রক্তদহ বিল পর্যন্ত খাল খনন করা হয়। বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের বেশি সময় ধরে বন্যার পানি থৈ থৈ করে।

এসময় পারিবারিক প্রয়োজনে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। যানবাহন চলাচলের উপযোগী সরাসরি কোন পথ না থাকায় ওই এলাকার দুইটি ইউনিয়নের সর্বরামপুর, কাশিমপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, মঙ্গলপাড়া, ভবানীপুর, পীরেরা, বয়না, বেতগাড়ী, দূর্গাপুর, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি, বেতগাড়ীসহ প্রায় ২০ টি গ্রামের বসবাসরত সাধারণ মানুষ, স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের রতনডারি খাল পাড় হতে চরম র্দূভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এছাড়া স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পন্যসামগ্রী সহজ ভাবে পরিবহন ও বাজারজাত করতে না পারায় নায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে এলাকাবাসির। তাই এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল, একটি ব্রিজ নির্মাণ করা।

স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে এবং জন দূর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে রতনডারি খালের উপর কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বরামপুর-ভবানীপুর চৌতাপাড়া নামকস্থানে ফুট ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের মার্চ মাসে একটি দরপত্র আহবান করা হয়। এতে নওগাঁ সদরের পার-নওগাঁ মহল্লার মো: গোলাম কিবরিয়া নামের ঠিকাদার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান। এর পর শুষ্ক মৌসুমে ওই খালের দুই পাড়ে খাম্বা নির্মাণ কাজ শুরু হলে শুধু মাত্র খালের মধ্যে খাম্বা নির্মান করার পর রহস্যজনক কারণে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও এই ফুট ব্রীজটি নিমার্ণে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে ওই এলাকার প্রায় ২০ গ্রামের জনসাধারণদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আসলাম আলী, ছোলাইমান, আব্দুর রহিমসহ শ্রমীক-মজুর, ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় তিন বছর ধরে চোখের সামনে আমরা শুধু খাম্বাই দেখছি। কিন্তু নির্মান কাজের কোন নমুনা দেখছিনা। জনদূর্ভোগ থেকে রেহায় দিতে দ্রুত নির্মান কাজ শেষ করার দাবি জানান তারা।

উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবু জানান, নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য আমি বার বার সংশ্লিষ্টদের কাছে ধরণা দিয়েছি। কিন্তু অদ্যবদি ফুট ব্রিজের বাঁকি কাজগুলো শুরু না হওয়ায় আংশিক অবকাঠামোও অপচয়ের দিকে চলে যাচ্ছে।

ব্রিজটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করাএকান্ত জরুরি জানিয়ে রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো: শাইদুর ইসলাম মিঞা বলেন, ওই সময় যে পরিমান ব্যয় ধরে কাজ শুরু করা হয়েছিল তা পাইলিং-টাওয়ার নির্মান করতেই টাকা শেষ হয়ে গেছে। ওই ব্রিজের নির্মান কাজ শেষ করতে এখনো প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা লাগবে। আগামী অর্থ বছরে টাকা বরাদ্দ পেলে কাজটি শেষ করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

(এসকেপি/এসপি/জুন ২২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test