E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফিরে এসেছে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়া মাদারীপুুরের ৮ জন 

২০১৯ জুন ২২ ২২:৪৯:২৯
ফিরে এসেছে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়া মাদারীপুুরের ৮ জন 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নিখোঁজ থাকা ৬৪ বাংলাদেশীর মধ্যে শুক্রবার দেশে এসেছে ১৭ জন। যার মধ্যে মাদারীপুরের ৮ জন। বাকিরা ৪/৫ দিনের মধ্যে দেশে আসতে পারবে বলে জানান আগতরা। 

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে আসা ৮ জন হলো সদর উপজেলার হাজরাপুর এলাকার হারুন বেপারীর ছেলে আজাদ রহমান, কুনিয়া ইউনিয়নের মাহবুল মাতুব্বরের ছেলে রাজিব মাতুব্বর ও একই ইউনিয়নের মকলেছুর মাতুব্বরের ছেলে রাসেল মাতুব্বর, ঘটকচর এলাকার লিয়াকত মাতুব্বরের ছেলে আকমন মাতুব্বর ও একই এলাকার লুৎফর মাতুব্বরের ছেলে লাদেম মাতুব্বর, রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের গফুর মোল্লার ছেলে পেয়ার আলী ও একই গ্রামের জুলহাক সেজালের ছেলে জুয়েল সেজাল, কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার মীর মাহাবুবুর রহমানের ছেলে মীর আজিজুল ইসলাম।

এর মধ্যে আজাদ দুপুরে বাড়ি এসেছে। বাকি সাতজন কেউ ঢাকাতে আছে আবার কেউ মাদারীপুর নিজ বাড়িতে আসার জন্য পথে আছে।

খোঁজ নিয়ে আরো জনা যায়, একই বোডে থাকা তিউনেশিয়ার সাগর থেকে উদ্ধার হওয়া মাদারীপুরের আরো ১০ জন আছে। তারা হলেন কেন্দুয়া ঘটকচর এলাকার ইলিয়াস চৌকিদারের ছেলে নয়ন চৌকিদার, আমিনুর রহমান দুলালের ছেলে জিসান মাতুব্বর, মনি হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার, হেলাল হাওলাদারের ছেলে নাঈম হাওলাদার, মিরাজ খাঁর ছেলে আরমিন খাঁ, সাধু কবিরাজের ছেলে সুমন কবিরাজ, জলিল মোল্লার ছেলে শফিক মোল্লা, দুলাল মাতুব্বরের ছেলে হৃদয় মাতুব্বর, শওকত সন্নবাদ এর ছেলে নাঈম সন্নবাদ, রাজৈরের দুর্গাবর্দী এলাকার আবুল কালাম হাওলাদারের ছেলে জাহিদুল হাওলাদার। এরা তিউনিশিয়ার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে আছে। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে মাদারীপুরে আসবে বলে জানা গেছে পরিবার সূত্রে।

তিউনিশিয়া থেকে আসা মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের হাজরাপুর গ্রামের আজাদ রহমান বলেন, আমি এক বছর আগে লিবিয়া গিয়েছিলাম। এক মাস আগে আমি লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য দালালরা প্রথমে একটি বড় জাহাজের ছবি দেখিয়ে সাগর পাড়ে নিয়ে ছোট বোডে জোর করে উঠিয়ে দেয়। বোডে না উঠলে গুলি করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। তাই বাধ্য হয়ে বোডে উঠি। দালালরা ৭৫ জনকে একটি বোডে উঠিয়ে সাগর পথে ইতালির উদ্দেশ্যে পাঠায়।

বোডটি সাগরের মধ্যে নষ্ট হয়ে গেলে বোডে ভাসমান তিন দিন থাকার পরে খাবারের অভাবে আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তিউনিশিয়ার একটি জাহাজ এসে আমাদের সবাইকে উদ্ধার করে। পরে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি টিম আমাদের একটি ক্যাম্পে রেখে শুক্রবার ১৭ জনকে বাংলাদেশে পাঠায়। যার মধ্যে মাদারীপুরের ৮ জন রয়েছি। শনিবার দুপুরে বাড়ীতে আসলাম।

আজাদ রহমানের পিতা হারুন বেপারী বলেন, আমার ছেলেকে লিবিয়া থেকে জাহাজে করে ইতালি নেয়ার কথা ছিল। এ জন্য আমি দালালকে অনেক টাকা দিয়েছি। দালাল আমাদের সাথে বেইমানি করেছে। আমি দালালের শাস্তি চাই। সরকারকে ধন্যবাদ যে আমার ছেলেকে দেশে এনেছে। কোন বাবা -মা তার সন্তানকে যেন সাগর পথে বিদেশে না পাঠায়।

মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য আমিনুর রহমান দুলাল বলেন, ২০/২৫ দিন পূর্বে ৭৫ জন যাত্রী নিয়ে লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিশিয়ার সিমান্তবর্তী সাগরে একটি বোডের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে ৬৪ জন বাংলাদেশী ছিল। যার মধ্যে আমার ছেলেও ছিল।

সাগরের মধ্যে বোর্ডে ভাসমান তিন দিন থাকার পরে তিউনিশিয়ার একটি জাহাজে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে উদ্ধার হওয়াদের তিউনিশিয়ার সেনাবাহিনী একটি ক্যাম্পে রাখে। সেখান থেকে কয়েকজন বাংলাদেশীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আমার ছেলে বলেছে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সবাইকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। আমার এলাকার আছে ১০ জন।

(এএস/এসপি/জুন ২২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test