E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

 

পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ, আটক ২

২০১৯ জুন ২৮ ১৮:২০:২৮
পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ, আটক ২

মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরে পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় পুলিশ সুপারের বডিগার্ডসহ ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বডির্গাডসহ ২ কনস্টেবলকে আটকের পর নেয়া হয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টাসে। 

এছাড়া একই অভিযোগে আরো দুইজনকে জেলা থেকে অন্যত্র বদলি করেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে অপরাধীদের ধরার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারের দেহরক্ষী পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান সুমনকে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণের নগদ টাকাসহ আটক করা হয়।

একই অপরাধে পুলিশ লাইন্সের ম্যাস ম্যানেজার জাহিদ হোসেনকে আটক করা হয়। পরে দুজনকেই ঢাকা হেডকোয়ার্টাসে পাঠিয়ে দেয় হয়।

এছাড়াও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর গোলাম রহমান এবং পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালার কাছ থেকেও ঘুষের টাকা উদ্ধার করা হয়। তাদের দুজনকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

ঘটনাটি গত সোমবার রাতে হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কয়েক দফায় মাদারীপুর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয় কথা বলতে রাজি হয়নি। পরে বিষয়টি জানতে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সোহেল রানাকে মাদারীপুরের সাংবাদিকরা অবগত করলে তিনি আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতেই মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জরুরী সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিষয়টি অবগত করেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া এন্ড পিআর) সোহেল রানা মোবাইলে মাদারীপুরের সাংবাদিকদের জানান, মাদারীপুরের একাধিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে টাকা গ্রহণের অভিযোগে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ হিসেবে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। আমরা সুস্থ এবং নির্ভেজাল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার পুলিশ হেডকোয়ার্টার তা করেছে। যে সকল জেলা থেকেই আমরা খবর পেয়েছি সেখানেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘গত ২৪ জুন গোপন সংবাদে জানা যায় পুলিশ লাইন্সের ম্যাস ম্যানেজার জাহিদ হোসেন মোটা অঙ্কের উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিনই ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ ও মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে পুলিশ প্রহরায় আটক করে ঢাকা হেডকোয়ার্টাসে পাঠিয়ে দেয় হয়।

তিনি আরো জানান, পরের দিন একই অভিযোগে এসপির বডিগার্ড নূরুজ্জামান সুমনকে ৩ লাখ টাকাসহ আটক করে ঢাকা পাঠানো হয়।

এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় প্রতারণার অভিযোগে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর গোলাম রহমান ও পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের স্বাস্থ্য সহকারী পিয়াস বালাকে অন্যত্র বদলী করা হয়। আকটকৃত ও বদলিকৃতদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জব্দ করা হয়। এদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত চলছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

মাদারীপুরে এবার ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে ডিআইজিসহ পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ কার্য পরিচালনা করছে বলে পুলিশ সুপার জানান’।

এদিকে নাম না প্রকাশে কয়েকজন জানান, ‘গত ২২ জুন মাদারীপুর জেলা থেকে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্যে শারিরীক পরীক্ষা নেয়া হয়। সেখান থেকে উত্তীর্ণদের ২৩ জুন সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজে একটি কক্ষে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়। পরের দিন বিকেল ৫টার মধ্যে ফলাফল দেয়ার কথা থাকলেও রাত ১০টার দিকে ফলাফল জানানো হয়। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়।’

অভিযোগ উঠে, এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল মোটা অঙ্কের উৎচোকের বিনিময় অনেক প্রার্থীকে চাকুরী দিয়েছে।

(এএসএ/এসপি/জুন ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test