E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

লিবিয়ায় বিমান হামলায় মাদারীপুরের একজন নিহত 

২০১৯ জুলাই ০৪ ২৩:০২:৪৮
লিবিয়ায় বিমান হামলায় মাদারীপুরের একজন নিহত 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার একটি অভিবাসী আটক কেন্দ্রে বিমান হামলায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগছাড়া গ্রামের ফজেল কাজীর ছেলে শাহাজালাল কাজী মারা গেছেন। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম নিখোজ আছেন। বিমান হামলায় নিহতের চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী জীবিত আছেন। তিনি আহত হয়ে ঐ দেশের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জুয়েল কাজী বৃহস্পতিবার দুপুরে মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে নিহতের ঘটনার কথা জানিয়েছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার দালাল নাসির শিকদারের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। সেই সাথে সরকারের কাছে লাশ বাংলাদেশে এনে দাফন করার দাবী করেছেন।

স্থানীয়, পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগছাড়া গ্রামের ফজেল কাজীর ছেলে শাহাজালাল কাজী, তার স্ত্রীর ভাই শহিদুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী এই তিনজন রোজার সময় দালালের সাথে জন প্রতি ১২ লাখ টাকা করে চুক্তির মাধ্যমে ইতালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। লিবিয়া হয়ে যাবার পথে তারা ঐ দেশে পুলিশের হাতে আটক হন।

এদিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামের নাসির শিকদার নামের ঐ দালাল তাদের জানান, ওরা তিনজন ইতালী পৌছে গেছে। আরো টাকা দিলে তাদের সাথে কথা বলিয়ে দিব। এই টাকা চাওয়া নিয়ে ঐতিন পরিবারের সাথে দালাল নাসিরের কথা কাটাকাটি চলছিলো।

বুধবার ভোররাতে লিবিয়ার ত্রিপোলির পূর্বাঞ্চলের ওই অভিবাসী আটক কেন্দ্রে বিমান হামলা চালানো হয়। এতে শাহাজালাল কাজী মারা যায় এবং তার স্ত্রীর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম নিখোজ হয়। এই ঘটনায় বেচে যাওয়া নিহতের চাচাতো ভাই জুয়েল কাজী বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে জানায়। এই খবর পাওয়ার পর থেকেই নিহত শাহাজালারের পরিবারের চলছে শোকের মাতম। প্রতিবেশীরা তাদের সান্তনা দেয়ার জন্য নিহতের বাড়িতে ভীর করছে।

নিহতের বাবা ফজেল কাজী কেদে কেদে বলেন, ধার দেনা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। আজ সেই ছেলের এমন করুন মৃত্যু হলো। তা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। অনেক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। আমাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো। আমরা সরকারের কাছে ওর লাশ দেশে আনার ও দালালের শাস্তির দাবী জানাই।

নিহতের মা হাজেরা বেগম বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। তাকে সান্তনা দেয়ার মতো ভাষা কারো জানা নেই। তিনি দালালের শাস্তি দাবী করে বলেন, ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ছেলেকে ইতালী পাঠাই। যাতে করে পথে কোন সমস্যা না হয়। সেই সমস্যা তো হলোই। আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হলো। আমি দালাল নাসির শিকদারের শাস্তির দাবী জানাই। যাতে করে সে এমন কাজ আর করতে না পারে। আর সরকার যেন আমার ছেলের লাশটি দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করে দেন।

নিহতের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, আমার মেয়ে মিমের বয়স সাত বছর। অল্প বয়সেই সে এতিম হয়ে গেলো। এখন কাকে বাবা বলে ডাকবে। আমার সব শেষ হলে গেলো। আমরা পথে বসে গেলাম। সরকারের কাছে ঐ দালালের শাস্তি ও আমার স্বামীর লাশ দেশে আনার দাবী চাই।

(এএস/এসপি/জুলাই ০৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test