E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৩০ লাখ টাকা মূল্যের রাস্তার গাছ কেটে নিলো প্রভাবশালী ঠিকাদার!

২০১৯ জুলাই ০৬ ১৭:৫২:৫৯
৩০ লাখ টাকা মূল্যের রাস্তার গাছ কেটে নিলো প্রভাবশালী ঠিকাদার!

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সিঙ্গাহার গ্রামের প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার আনুমানিক প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ৩শ’ টি ইউক্লাপিটাস গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এই অভিযুক্ত ঠিকাদার বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলার চকসুখানগাড়ী এলাকার মেসার্স নজরুল ইসলাম ’ছ’ মিল এন্ড কাঠঘরের প্রোঃ মোঃ মফিজুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে দ্রুত সুষ্ঠ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, বগুড়ার সামাজিক বন বিভাগ থেকে আদমদীঘি উপজেলার বন্তইড় এলাকার কিছু গাছ গত ২৯-০২-২০১৬ তারিখে বিক্রির জন্য টেন্ডার আহবান করে। ওই গাছগুলো বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চকসুখানগাড়ী এলাকার মেসার্স নজরুল ইসলাম ’ছ’ মিল এন্ড কাঠঘরের প্রোঃ মোঃ মফিজুল ইসলাম টেন্ডারের গাছ পান। টেন্ডারে উল্লেখ করা হয়েছে, আদমদীঘি উপজেলার বন্তইড় হইতে রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তার গাছ টেন্ডার দেয়া হয়।

এর মধ্যে রাণীনগর উপজেলার সিমানার মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার গাছ পড়েছে। ওই গাছগুলো কাটার পাশাপাশি ঠিকাদার মফিজুল ইসলাম স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় রাণীনগর উপজেলার আবাদুপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সিঙ্গাহার গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ৩শ’টি ইউকা¬িপটাস গাছ কেটে নেয়। স্থানীয়রা রাণীনগর উপজেলা অংশের গাছ কাটতে বাধা দিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে গাছগুলো কেটে নিয়ে যান। এছাড়াও কর্তনকৃত কিছু গাছ সেখানে এখনো পড়ে রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাদপুকুর এলাকার অনেকেই জানান, অনেক দিন আগে আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পাশ থেকে আদমদীঘি উপজেলা সীমান্ত এলাকায় গাছগুলো লাগানো হয়। গাছগুলো বেশ মোটা হয়েছে। গত ২-৩ দিন আগে থেকে রাণীনগর উপজেলার অংশের গাছগুলো কাটা শুরু করেন ঠিকাদারের লোকজন। টেন্ডার অনুযায়ী পূর্বে আদমদীঘি উপজেলার অংশের গাছ কাটা শেষ হলেও রাণীনগর উপজেলার মধ্যে থাকা প্রায় ৩শ’টি ইউকা¬িপটাস গাছগুলো এলাকার প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় কাটেন তারা। এ সময় অনেকেই বাধা দিলে তাদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। রাণীনগর উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে বিষয়টি। গাছ কাটার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঠিকাদার মফিজুল ইসলাম বলেন, এটা আমার কাছে থেকে না জেনে বগুড়া বন বিভাগ থেকে জেনে নেন। বগুড়া সামাজিক বন বিভাগের প্রধান সহকারী খায়রুন নাহার বলেন, ওইটা টেন্ডার দেয়া হয়েছিলো। এ বিষয়ে মাঝখানে একটু ঝামেলা হয়েছিলো সেটা ঠিক হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

নওগাঁ বন বিভাগের কর্মকর্তা মেহেদী জামান জানান, রাণীনগর উপজেলায় আমাদের যে দায়িত্বে আছেন, তাকে আমি এ বিষয়ে সব বলেছি। সে আমাকে তথ্য দিলে আপনাকে জানাবো। এছাড়াও তার কাছে রাণীনগর উপজেলার গাছ বগুড়া সামাজিক বন বিভাগ টেন্ডার দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেননি। তিনি রাণীনগর বন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা বলতে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

রাণীনগর বন বিভাগের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বিভিন্ন তালবাহানা করে আদমদীঘির কর্মকর্তার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তাদের এমন বক্তব্যে বোঝা যায় গাছ কাটার এসব অনিয়মের সঙ্গে এরা সকরেই জড়িত।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর লোক পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(বিএম/এসপি/জুলাই ০৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test