E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাড়ে ১৬ কেটি টাকা লুটপাট

সাতক্ষীরা হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জনসহ ৯ জনের নামে দুদকের মামলা

২০১৯ জুলাই ০৯ ২৩:২১:১৩
সাতক্ষীরা হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জনসহ ৯ জনের নামে দুদকের মামলা

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে সাজানো টেন্ডারে শতভাগ সরকারি অর্থ লোপাটের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় আসামীরা হলেন,সাতক্ষীরার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান, স্টোর কিপার একেএম ফজলুল হক, হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেন, রাজধানীর ২৫/১, তোপখানা রোডের বেঙ্গল সায়েন্টেফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোম্পানির কর্ণধার ঠিকাদার মো. জাহের উদ্দিন সরকার। তার ছেলে মো. আহসান হাবিব। জাহের উদ্দিনের বাবা মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার হাজী আবদুস সাত্তার সরকার এবং তার ভগ্নিপতি ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের কর্ণধার মো. আসাদুর রহমান, জাহের উদ্দিন সরকারের নিয়োগকৃত প্রতিনিধি কাজী আবু বকর সিদ্দিক, মহাখালী নিমিউ অ্যান্ড টিসির সহকারী প্রকৌশলী এএইচএম আবদুল কুদ্দুস।

গত ১৮ এপ্রিল স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি অফিস থেকে একটি পর্যবেক্ষণ টিম সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে এসে ২০১৭-১৮ ও ২০১৯ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা কমপ্লেক্সে ১৮ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা ও সরবরাহে অনিয়ম লক্ষ্য করেন। এ সম্পর্কিত সম্পর্কিত সংবাদ ১৯ এপ্রিল স্থানীয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ আন্দোলন শুরু করে।

একপর্যায়ে তারা ২৪ এপ্রিল সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। দুদকের অনুসন্ধানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে সাজানো টেন্ডারে শতভাগ সরকারি অর্থ লোপাটের প্রমান মেলে। ১৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার কার্যাদেশের মধ্যে ১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকাই লোপাট করা হয়েছে বলে জানা যায়।

বাকি প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ কেটে রাখা হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে হাসপাতালের জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থও হাতিয়ে নেয় একটি চক্র।

যন্ত্রপাতি কেনাকাটার নামে ভুয়া রেজিস্টার দেখিয়ে আত্মসাতের রাস্তা তৈরি করেন সাতক্ষীরার তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান। তার তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারসহ ৮ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট নানা কৌশলে ওই হাসপাতালের কেনাকাটাসহ অন্যান্য খাতে এক বছরের জন্য সরকারি বরাদ্দের পুরোটাই গিলে ফেলে বলে তদন্ত কমিটির প্রধান দুদক উপপরিচালক মো. সামসুল আলম নিশ্চিত হন।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, সরকারি তদন্তে ওই হাসপাতালে ১৭ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে ১২ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর বিষয়টিতে হাত দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকের অনুসন্ধানে দুর্নীতির পুরো চিত্র বেরিয়ে আসে। এতে দেখা যায়, প্রকৃতপক্ষে সাড়ে ১৬ কোটি ৬১ লঅখ টাকা লোপাট হয়েছে। সাতক্ষীরার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান, স্টোর কিপার একেএম ফজলুল হক, হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেন, রাজধানীর ২৫/১, তোপখানা রোডের বেঙ্গল সায়েন্টেফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোম্পানির কর্ণধার ঠিকাদার মো. জাহের উদ্দিন সরকার। তার ছেলে মো. আহসান হাবিব। জাহের উদ্দিনের বাবা মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার হাজী আবদুস সাত্তার সরকার এবং তার ভগ্নিপতি ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের কর্ণধার মো. আসাদুর রহমান, জাহের উদ্দিন সরকারের নিয়োগকৃত প্রতিনিধি কাজী আবু বকর সিদ্দিক, মহাখালী নিমিউ অ্যান্ড টিসির সহকারী প্রকৌশলী এএইচএম আবদুল কুদ্দুস সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ডা. তওহীদুর রহমান ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও এর আওতাধীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার একটি তালিকা তৈরি করেন।

তালিকা অনুযায়ী এর স্পেসিফিকেশন ও বর্তমান বাজারদর পাঠানোর জন্য মহাখালীর নিমিউ অ্যান্ড টিসির চিফ টেকনিক্যাল ম্যানেজারকে অনুরোধ করেন। তা পাওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রকৌশলী এএইচএম আবদুল কুদ্দুস নিজেই টেন্ডার সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করেন।

তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই ক্ষমতাবহির্ভূতভাবে এএইচএম আবদুল কুদ্দুস তৎপর হয়ে ওঠেন। কোনো ধরনের বাজারদর সংগ্রহ বা যাচাই না করে ১৫৯ ধরনের মেডিকেল যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশনসহ নিজের মনগড়া দর তৈরি করে সাতক্ষীরায় সিভিল সার্জনের কাছে পাঠান।

ওই স্পেসিফিকেশনসহ দরপত্র পেয়ে তৎপর হয়ে ওঠেন সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান। তিনি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতালের চাহিদাপত্র বা প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৫৯ ধরনের যন্ত্রপাতি কিনতে ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর টেন্ডার বা দরপত্র আহবান করেন।

টেন্ডার আহবানের পর আগে থেকে ঠিক করে রাখা একই পরিবারের মালিকানাধীন তিনটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানি, ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশন ও মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের তিন প্রতিষ্ঠান সাজানো টেন্ডারে অংশ নিয়ে পরিকল্পনামতো দর দিয়ে আলাদাভাবে দরপত্র জমা দেয়।
মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের লাইসেন্স জাহের উদ্দিন সরকারের পিতা মো. আবদুর সাত্তার সরকার এবং ছেলে মো. আহসান হাবীবের যৌথ নামে।

বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির লাইসেন্স তার নিজ নামে এবং ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের লাইসেন্স তার ভগ্নিপতি মো. আসাদুর রহমান নামে করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কাগজ-কলমে তিনটি প্রতিষ্ঠান দেখা গেলেও বাস্তবে দাখিলকৃত তিনটি দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মূলত জহির উদ্দিন সরকারই।

অফিস প্রধান হিসেবে জহির উদ্দিন সরকার নিজেই যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা করেন। মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া দরপত্র দাখিলসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তার ম্যানেজার (প্রশাসন ও অপারেশন) কাজী আবু বক্কর সিদ্দিককে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান করেন। কাজী আবু বক্কর সিদ্দিক দাখিলকৃত দরপত্রে কৌশলে অন্যান্য দরপত্রের চেয়ে আইটেম অনুযায়ী কম মূল্য উল্লেখ করেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় ওই তিনটি দরপত্র গ্রহণযোগ্য হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে সদস্য হিসেবে মহাখালীর নিমিউ অ্যান্ড টিসির সহকারী প্রকৌশলী এএইচএম আবদুল কুদ্দুস অন্তর্ভুক্ত হন। অথচ তার কর্তৃপক্ষ তাকে এ কাজে মনোনয়ন করেনি।

তিনি অবৈধভাবে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে উপস্থিত হয়ে মনগড়া দর গ্রহণে সহায়তা করেন। পরিকল্পিতভাবে দর দিয়ে সর্বনিু দরদাতা হন মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। এভাবে সাজানো দরপত্রে সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান ২০১৮ সালের ১৩ মে ১০৬টি আইটেমের যন্ত্রপাতির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড (কার্যাদেশ) প্রদান করেন।

ওই দিনই তিনি জাহের উদ্দিন সরকারের মনোনীত প্রতিনিধি কাজী আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেন। চুক্তি অনুযায়ী ১০৬ আইটেমের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার কথা। কিন্তু বাস্তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করেই ভুয়া চালান ওই বছর ৩১ মে সিভিল সার্জন বরাবর দাখিল করে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্টোরকিপার একেএম ফজলুল হক তাতে স্বাক্ষর ও সিল দিয়ে যন্ত্রপাতিবিহীন চালান গ্রহণ করেন। পরে তিনি (একেএম ফজলুল হক) সার্ভে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর স্ক্যান করে চালানের অপর পৃষ্ঠায় বসিয়ে ৭ জুন যন্ত্রপাতি সার্ভে হয়েছে মর্মে নাটক রচনা করেন। তাতে তিনি নিজে স্বাক্ষর করে সিল প্রদান করেন।

এছাড়া স্টক রেজিস্টারে মেডিকেল অফিসারের প্রত্যয়ন করার নিয়ম থাকলেও তা না করে সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমানের প্রত্যয়নে নতুন স্টক রেজিস্টার খুলে ১৩ মে স্টক রেজিস্টারে মিথ্যাভাবে যন্ত্রপাতি সরবরাহ দেখানো হয়। স্টক রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ যন্ত্রপাতি সরবরাহ বুঝে নেয়ার সত্যতা প্রমান করতে রেজিস্টারের রিমার্কস কলামে ডা. তওহীদুর রহমান স্বাক্ষর করেন। যা ছিল অবৈধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এরপরও দরপত্র আহবান না করে ডা. তওহীদুর রহমান দ্বিতীয় দফায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে আরও ১৬টি আইটেমের যন্ত্রপাতি সরবরাহের কার্যাদেশ দেন। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও স্বাক্ষর করেন সিভিল সার্জন। দ্বিতীয় দফায়ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয় চক্রটি। চুক্তি অনুযায়ী যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করে আমমোক্তার গ্রহীতা কাজী আবু বক্কার সিদ্দিক মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের লিখিত প্যাডে ১৬টি আইটেমের যন্ত্রপাতি সরবরাহের মিথ্যা চালান সিভিল সার্জনের বরাবর দাখিল করেন।

এছাড়া অবৈধভাবে আগের দরপত্রে দেয়া দামে তৃতীয় দফায় আরও তিনটি আইটেমের ৯টি যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য একই প্রতিষ্ঠানকে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। এই চুক্তি অনুযায়ীও যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করে আমমোক্তার গ্রহীতা কাজী আবু বক্কর সিদ্দিক মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের লিখিত প্যাডে তিনটি আইটেমের যন্ত্রপাতি সরবরাহের মিথ্যা চালান সিভিল সার্জন বরাবর দাখিল করেন।

এসব বিলেও স্টোরকিপার ফজলুল হক সার্ভে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর ও সিল অন্য জায়গা থেকে স্ক্যান করে এনে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবহার করেন। যাতে প্রতিস্বাক্ষর করেন সিভিল সার্জন। এভাবে ধাপে ধাপে এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়।

টেন্ডার পেয়ে মালামাল সরবরাহ না করেই ভ্যাট-ট্যাক্স বাদে ১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার বিল তুলে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

বিষয়টি ফাঁস হলে তড়িঘড়ি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার জাহের উদ্দিন সরকার বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে তার প্রতিনিধির মাধ্যমে স্টোরকিপার একেএম ফজলুল হক ও আনোয়ার হোসেনের সহায়তায় সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই স্টোরে এবং অফিসের বারান্দায় বেশ কিছু বাক্স বন্ধ অবস্থায় রাখার ব্যবস্থা করেন।
এছাড়া কিছু যন্ত্রপাতি খোলা অবস্থায় সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ও অন্যান্য স্থানে রাখা হয়। যন্ত্রগুলো আনইনস্টল অবস্থায়ই রয়েছে।

(আরকে/এসপি/জুলাই ০৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test