E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কেন্দুয়ার ৭৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই 

২০১৯ জুলাই ১০ ২১:৫৭:৩৫
কেন্দুয়ার ৭৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই 

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে ধর্ষণ, ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়ে চললেও নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ৭৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনটিতেই যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই। এতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আতংক ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মোঃ শাহেদুল কবীর চৌধুরী চলতি বছরের গত ১৮ এপ্রিল হাই কোর্টের রীট পিটিশন নং- ৫৯১৬/২০০৮ এর আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং এর আওতাধীন অফিস ও সকল সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি গঠনের জন্য একটি চিঠি দেন।

একই চিঠি কেন্দুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্র্তৃপক্ষ বরারব পাঠানো হয়। চিঠিটি কেন্দুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে চলতি বছরের ২২ এপ্রিল গ্রহণ করা হয়। প্রায় ৩ মাস সময় পেরিয়ে গেলেও কেন্দুয়া উপজেলার ৭টি কলেজ, ৩৬ টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১৭টি দাখিল মাদ্রসা ও ১৯টি এবতেদায়ি মাদ্রাসার কোনটিতেই যৌন হয়রানী প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়নি।

অতি সম্প্রতি কেন্দুয়া উপজেলার সান্দিকোনা স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরনের পর ধর্ষণ এবং পৌর এলাকার বাদে আঠারোবাড়ী মহল্লার মা হাওয়া (আঃ) কওমী মহিলা মাদ্রসার ১১ বছরের এক ছাত্রীকে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের বেলালী ধর্ষন করে। ধর্ষনের পর স্থানীয় জনতা ও অভিভাবকগণ তাকে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবুল খায়ের বেলালী গত এক বছরে আরো ৬ ছাত্রীকে ধর্ষনের কথা স্বীকার করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর থেকে উপজেলার সব কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা, এবতেদায়ী মাদ্রাসা ও কওমী মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী অভিভাবকদের মধ্যে আতংক উৎকন্ঠা দেখা দেয়।

এদিকে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির বিষয়ে কোন সার্কুলার আছে কি না জানতে চাইলে, বুধবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল একটি চিঠি পেয়েছি, চিঠিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন কেন্দুয়া উপজেলায় ৭৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ৫ সদস্যের কমিটিতে কাদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ঠভাবে উল্লেখ না থাকায় এখন পর্যন্ত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ৫ সদস্যের কমিটির বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যখ্যা পেলেই আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জরুরী ভিত্তিতে কমিটি গঠন করে কার্যক্রম চালাব। তবে কমিটি গঠন করা না হলেও মৌখিক ভাবে সব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সচেতন থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, ধর্ষন, গণধর্ষন ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।

তিনি বলেন, মাদ্রসা, মসজিদের ইমাম ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের নিয়ে আমরা মতবিনিময় সভা শুরু করেছি। এ বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সামাজিক ভাবে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

(এসবি/এসপি/জুলাই ১০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test