E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাগলের অভিনয় করে জামিন পেলেন যৌতুক মামলার আসামি

২০১৯ জুলাই ১১ ১৭:৩১:৩৫
পাগলের অভিনয় করে জামিন পেলেন যৌতুক মামলার আসামি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধা সিনিয়র জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলায় জেল হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর জামিন।

পাগলের অভিনয় করে বিচারকের চোখ ফাঁকি দিয়ে জামিনে মুক্তির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত ৪ আগাস্ট গাইবান্ধা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের মামলার হাজিরার তারিখে আসামি হাকিম তার বড় ভাইয়ের পরামর্শে চেতনানাশক ইনজেকশন শরীরে পুশ করে এবং হাতে পায়ে লোহার শিকল পড়ে শিকলে আবার তালা ঝুরিয়ে হাজিরা দিতে আদালতে আসে। বিচারক শবনম মোস্তারী আসামিকে জেল হাজাতে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদেশ অনুযায়ী আসামিকে প্রাথমিকভাবে কোর্ট পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। মামলার কাগজসহ বিকালে আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠানোর কথা থাকলেও আব্দুল হাকিম হাজতে অন্যন্য আসামিদের মারধর করাসহ কোট চত্বরে হট্টগোল সৃষ্টি করে। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহাদুল আলম আসামিকে মানসিক রোগী ও অসুস্থ বলে জামিনের আবেদন করেন।

গাইবান্ধা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শবনম মোস্তারী সরেজমিনে কোর্ট জেল হাজতে এসে আসামিকে অচেতন অবস্থায় দেখে জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলার বাদী সিমা বেগম জানান, জামিনে এসে আসামি আব্দুল হাকিম মোবাইল ফোনে তাকে মামলা তোলার জন্য চাপ দেয়। মামলা না তুললে উল্টো মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দেয় এবং এ মামলার সাক্ষীদেরও মারপিট ও নতুন মামলার আসামি করা হবে বলে ভয় দেখায়। ফলে তার পরিবার ও মামলার সাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

আসামি আব্দুল হাকিমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি পাগল? কে বলেছে আমি পাগল। মামলাটা হালকা করতে পাগলের বেশ ধরেছিলাম। এবার পাগলের সার্টিফিকেট এনে বাদী ও সাক্ষীদের নামে মামলা দেব।

হাকিমের গ্রামের বাসিন্দা কচুয়া ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহাবাব হোসেন জানান, এ গ্রামে আব্দুল হাকিম নামের কোনো পাগল নেই।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মিলা বেগম জানান, এ প্রথম কোনো আসামি পাগলের অভিনয় করে জামিন পেয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ আইনের প্রতি আস্থা হারাবে।

প্রসঙ্গত, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের বড়াইকান্দি গ্রামের আব্দুল হাকিম ২০১৪ সালে একই উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের বাংগাবাড়ী গ্রামের সিমা আক্তারকে বিয়ে করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই সুখের সংসারে চেপে বসে যৌতুকের লোভ। সংসারে নেমে আসে অশান্তি। এরপর স্ত্রী সিমার ওপর শুরু হয় নির্যাতন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে সিমা গাইবান্ধা আমলি আদালতে যৌতুক মামলা করেন। মামলার পরে হাকিম নতুর কৌশল অবলম্বন শুরু করে এবং নিজেকে পাগল প্রমাণিত করতে ভুয়া কাগজপত্র সংগ্রহ করে ।

(এস/এসপি/জুলাই ১১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test