E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন

‘যোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ওসি-শিক্ষকদের হট্টগোল

২০১৯ জুলাই ১৩ ১৮:৩২:২০
‘যোগ্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ওসি-শিক্ষকদের হট্টগোল

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও  প্রতিবাদে তার অপসারণ চেয়ে শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে লাইব্রেরী কক্ষে সমবেত হলে সেখানে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে নানা রকম কথা বললে প্রতিবাদ করেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ওসি ও শিক্ষকদের মাঝে হট্টগোল শুরু হয়। খবর পেয়ে সহকারি এএসপি (চাটমোহর সার্কেল) কলেজে যায়।

শনিবার সকালে কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ ও বহিরাগতদের উপস্থিতি এবং অধ্যরেক্ষর অপসারণ চেয়ে শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে লাইব্রেরী কক্ষে সমবেত হলে সেখানে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে থানার ওসি নানা রকম কথা বললে প্রতিবাদ করেন শিক্ষকরা। পরে ওসি-শিক্ষকের মধ্যে হট্টগোল শুরু হলে এএসপি (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন কলেজে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। কথা বলেন আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ চাটমোহর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদের এবং তার অপসারণ চেয়ে ৫৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীরা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন করে আসছে। এরই অংশ হিসেবে শনিবার শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে লাইব্রেরী কক্ষে সমবেত হন। এরপর ক্লাস না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যায়। পরে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে চাটমোহর থানার ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন এবং অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে কথা বলার কিছুক্ষণ পর ওসি লাইব্রেরী কক্ষে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে ওসি’র বাদানুবাদ শুরু হয়। এতে করে কলেজ ক্যাম্পাসে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এএসপি (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন এসে পরিবেশ শান্ত করে শিক্ষকদের কথা শোনেন এবং এরজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ সময় শিক্ষকরা এএসপি সার্কেলকে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আপনারা ক্লাস বর্জন করার কে? আপনাদের শিক্ষক হওয়ার কোন যোগ্যতাই নেই। আমি গালাগালির ট্রেনিং নিয়ে এসেছি। আমি এর আগেও আপনাদের হুশিয়ারি দিয়ে গেছি। আপনারা আমার কথা শুনছেন না। আমি লাস্ট ওয়ারনিং দিচ্ছি, আপনারা কথা না শুনলে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। শুধু তাই নয়, ওই কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামাল মোস্তফাকে ‘পালের গোদা’ বলে আখ্যায়িত করেন ওসি। এরপর শিক্ষকরা ওসি’র এই কথার প্রতিবাদ করলে ওসি থানায় ফোন দিয়ে পুলিশ সদস্যকে কলেজে আসতে বলেন। পরে অনভিপ্রেত এ ঘটনার জন্য এএসপি শিক্ষকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন বলেন, প্রিন্সিপাল অভিযোগ করেছিল বহিরাগত লোকজন নিয়ে শিক্ষকরা ছাত্রদের ক্লাস থেকে বের করে দিচ্ছে এ কথা শুনে কলেজে গিয়েছিলাম। পরে শিক্ষকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে তারা প্রিন্সিপালের বহিস্কারাদেশের কথা বললে আমি তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কথা বলেছি। তিনি আরও বলেন, আমি পালের গোদা বলিনি। আমি তাদের লিডারকে কথা বলতে বলেছি। পরে এএসপি স্যারের সামনে তারা (শিক্ষক) যখন কথা বলে তখন এসব অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে এএসপি (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরীন বলেন, ওসি এবং শিক্ষকদের মধ্যে কি কথা হয়েছে এটা আমার জানা নেই। পরে আমি কলেজে গিয়ে শিক্ষকদের সাথে কলা বলে যেটুকু জেনেছি তাতে মনে হয়েছে শিক্ষকরা ওসি’র আচরণে চরম ক্ষুব্ধ। এছাড়া ওসি’র এসব কথা বলার এখতিয়ারও নাই। তবে ওসি এরজন্য একবার দুঃখিত বলেছে। এরপর কিছু বললে আমরা ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

(এস/এসপি/জুলাই ১৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test