E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ব্রহ্মপুত্র নদে সেতু নির্মাণের দাবি

কাপাসিয়া-মনোহরদীর ১০ গ্রামের মানুষের বাঁশের সাঁকোতে পারাপার 

২০১৯ জুলাই ১৪ ১৬:৩৬:১৯
কাপাসিয়া-মনোহরদীর ১০ গ্রামের মানুষের বাঁশের সাঁকোতে পারাপার 

সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার পূর্ব সীমান্তে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর একটি পাকা সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কাপাসিয়া-মনোহরদী উপজেলার ১০ গ্রামের মানুষ।  

স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় ৮ হাজার মানুষকে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ভোগান্তি লাগব করা এই দুই উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি।

কাপাসিয়ার সনমানিয়া ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ। সনমানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও, মির্জানগর, সনমানিয়া, আড়াল গ্রামের মানুষ এ নদের ওপর দিয়ে চলাচল করে থাকেন। পাশাপাশি মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কোঁচেরচর, কীর্ত্তিবাসদী, নিশ্চিন্তপুর, কেরানীনগরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এই দুই পারের লোকজন মিলে এলাকা থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরী করে তার ওপর দিয়ে চলাচল করেন। বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে প্রতিদিন দুটি কলেজ, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি ফাযিল মাদরাসা ও তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৭/৮ হাজার মানুষ এপার-ওপার চলাচল করে থাকেন।

সনমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন বিএসসি বলেন, মির্জানগর চরে সারাবছরই উৎপাদিত শাক-সবজি দৌলতপুরের রথখলা বাজার, লাখপুর বাজার, কোচেরচর নতুন বাজার, হাতিরদিয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে তাদের স্কুল কলেজ, মাদরাসায় যেতে পারবে এবং কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দ্রুত সময়ে বাজারজাত করতে পারবেন।

সনমানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন মাষ্টার বলেন, কাপাসিয়ার সনমানিয়া ও মনোহরদীর দৌলতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মাঝে শত শত বছর ধরে সামাজিক সম্পর্ক বিরাজ করছে। সেতু নির্মাণ হলে দু’পারের মানুষের মাঝে সম্পর্ক আরো গভীর হবে। পাশাপাশি শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী আল-ফাহাদ বলেন, উভয় পাড়ের শির্ক্ষাথীদের স্কুল-কলেজও মাদ্রাসায় যেতে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আগত অনেক মেহমানেরই সাঁকোতে চড়ার অভ্যাস নেই এবং ছোট-ছোট শিশুরা দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো বেয়ে নদ পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাছাড়া রাতের বেলায় অন্ধকারে নদ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকে চোর-ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বশান্ত ও আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি নিরসনে এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ করা বর্তমান সময়ের দাবী।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মনোহরদীর দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাদিউল ইসলাম জানান, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে সেতু নির্মাণ সনমানিয়া ও দৌলতপুর ইউনিয়নের জনগণের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী। এখানকার দুর্ভোগ লাগবে সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত আবেদন জানিয়েছি। সেতুটি বাস্তবায়িত হলে দুই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন তৈরী হবে।

(এসকেডি/এসপি/জুলাই ১৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test