E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁর নান্দাইবাড়ী বেরিবাঁধ হুমকির মুখে

২০১৯ জুলাই ১৪ ১৮:২২:৩২
নওগাঁর নান্দাইবাড়ী বেরিবাঁধ হুমকির মুখে

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি বেরিবাঁধ এখন হুমকির মুখে। তবে এই বাঁধ সরকারের কোন দপ্তরের অধীনে তা কেউ স্বীকার করছেনা। বিগত ২০১৭ সালে বেরিভাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছিলা জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

চলতি বর্ষা মৌসুমে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে ছোট যমুনা নদীর পানি। বর্তমানে এই বাঁধটি দুই উপজেলার মানুষের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। আর এতেই চরম আতঙ্কে রয়েছে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাবাসী। কারণ দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করায় রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ী, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকার প্রায় ৮কিঃমিঃ নদীর বেরিবাঁধ চরম ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। রবিবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এই ঝুঁকিপূর্ন বাঁধপরিদর্শন করেছেন।

জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর দুই ধারের মানুষদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। কারণ কখন কোথায় বেরিবাঁধ ভাঙ্গবে তা কেউ জানেনা। নদীর পানি আটকানোর জন্য আশির দশকে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ী, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকায় স্থানীয় সরকারের সহায়তায় স্থানীয়রা তৈরি করেন এই বেরিবাঁধ। এরপর থেকে সরকারের কোন দপ্তর এই বেরিবাঁধের কোন সংস্কার করেনি।

কয়েক বছর আগে স্থানীয়রা বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে কোনমতে রক্ষা করে আসে এই বাঁধটি। কিন্তু বর্তমানে এই বাঁধের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। নদীতে পানির প্রবাহ তেমন বৃদ্ধির আগেই ভাঙ্গতে শুরু করেছে মাটির বড় বড় চাপ। ভাঙ্গনের ফলে বাঁধের ওপর দিয়ে পায়ে হেটে যাওয়ার মতো কোন রাস্তা নেই। যে কোন সময় এই বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হতে পারে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার কয়েকশ’ গ্রাম আর হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল। তবুও কোন দপ্তরের নজর নেই বাঁধের দিকে।

উপজেলার ৩নং গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হাসনাত খাঁন হাসান বলেন, সবচেয়ে দু:খের বিষয় এই বাঁধটি কোন দপ্তরের আওতায় তাই এখনও জানতে পারিনি। এই বাঁধ নাকি কোন দপ্তরেরই নয়। তাই আমি সংস্কার কাজের আবেদন দেবো কোন দপ্তরে। যোগাযোগ করবো কোন দপ্তরের সঙ্গে। তাহলে সংস্কার করবে কে? আমাদের পরিষদেও তেমন কোন বরাদ্দ আর আসে না যে সেখান থেকে কিছু দিয়ে কিছুটা সংস্কার করবো।

সরকারের উর্দ্ধতন মহল পর্যন্ত গিয়েছি কিন্তু এই বাঁধের কোন মালিক না থাকায় কোন ফল করতে পারিনি। শুধুমাত্র যখন বাঁধ ভেঙ্গে যায় তখন বড় বড় কর্মকর্তারা এসে বড় বড় আশ্বাস দিয়ে যায়। কিন্তু পরবর্তিতে কোন বাস্তবায়ন হয় না তাদের দেয়া সেই আশ্বাসগুলোর। দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করায় বাঁধটি এখন মরনফাঁদে পরিণত হয়েছে। তাই বাঁধটি আজও ভঙ্গুর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কখন যে ভেঙ্গে যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। আমরা চেষ্টা করবো এই সময়ে বাঁধের কোন সংস্কার করা যায় কিনা। বিষয়টি আমি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, বাঁধটি এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ন। কিন্তু বাঁধটি কোন দপ্তরের তা কেউ স্বীকার করছে না। আর এই বাঁধটি সংস্কার করার জন্য অনেক টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন যা আমার পরিষদের একার পক্ষে সরবরাহ করা অসম্ভব। তবে সব দপ্তর মিলে যদি পদক্ষেপ নেয়া যায় তাহলে এই কাজটি করা সম্ভব। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো বাঁধটি ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সংধাংশ কুমার সরকার বলেন, বাঁধটি আমরা নির্মাণ করিনি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাঁধটি আমাদের আওতায় পড়ে না। তবুও আমি বাঁধটি পরিদর্শন করার জন্য জনবল পাঠিয়েছি। পরির্দশনের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

(বিএম/এসপি/জুলাই ১৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test