E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বন্ধের পথে মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলের ড্রেজিং, নেই মাটি ফেলার জায়গা

২০১৯ জুলাই ১৭ ১৭:০৮:১৮
বন্ধের পথে মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলের ড্রেজিং, নেই মাটি ফেলার জায়গা

বাগেরহাট প্রতিনিধি : ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার জায়গা সংকটের কারণে মোংলা-ঘাষিয়াখালী আর্ন্তজাতিক নৌ চ্যানেলের খনন কাজ হুমকির মুখে পড়েছে। চ্যানেলটির মোংলা ও রামপাল অংশের প্রায় ২৬ কিলোমিটার নদীর দু’পাড়ের জায়গা ভরাট হবার পর নতুন করে জায়গা না পাওয়ায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে জনগুরুত্বপূর্ন এই নৌপথের ড্রেজিং কার্যক্রম। এই অবস্থায় বিনামূল্যে ড্রেজিংয়ের মাটি সরবরাহের বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এখন কাউকে পাচ্ছেনা বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএ জানায়, সরকার মোংলা বন্দরের সাথে সারাদেশের নৌপথের দূরত্ব কমাতে ১৯৭৪ সালে ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ মোংলা-ঘাষিয়াখালী আর্ন্তজাতিক নৌ চ্যানেলটির খনন করা হয়। কিন্তু ৮০’এর দশকের পর থেকে স্থানীয়রা ওই চ্যানেলটির সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলোতে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে চিংড়ি মাছ চাষ শুরু করে। এর ফলে জোয়ার-ভাটার পানি সংযুক্ত খাল দিয়ে নিচু ও ফসলী জমিতে প্রবাহিত হতে না পারায় দ্রুত পলি পড়ে মুল চ্যানেলই ভরাট হতে শুরু করে।

এক পর্যায়ে ২০১০ সালে চ্যানেলটির ২২ কিলোমিটার নৌপথ পলি পড়ে ভরাট হয়ে নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৪ সালের ১ লা জুলাই ২শত ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ভরাট হয়ে যাওয়া চ্যানেলটির পলি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করে পুনরায় চালু করা হয়। তারপর থেকেই নিয়মতি ভাবেই চলছে এ চ্যানেলটির খনন কাজ। কিন্তু দ্রুত পলি পড়তে থাকায় বর্তমানে খননকৃত মাটি ফেলার জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ চ্যানেলের দু’পাড়ে খননকৃত মাটি ফেলতে ফেলতে আর কোন জায়গা অবশিষ্ট নেই।

মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী আলহাজ্ব এইচ এম দুলাল বলেন, আর্ন্তজাতিক এ নৌ চ্যানেলটি পুনরায় চালু হওয়ায় মোংলা বন্দরের আমদানী-রপ্তানীতে গুরুত্ব বেড়েছে। স্থায়ীভাবে এ চ্যানেলটির নাব্যতা ঠিক রাখতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবেও বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। চ্যানেলে খনন কাজে বাঁধার সৃষ্টি হলে নৌ চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই চ্যানেলটি চালু রাখতে সরকারের সব রকম পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আনিচ্ছুজামান বলেন, মোংলা-ঘাষিয়াখালী নৌ চ্যানেলের নাব্যতা ঠিক রাখতে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ২৭৭ দশমিক ৪৬ লক্ষ ঘনমিটার মাটি খনন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কয়েক’শ একর সরকারী বেসরকারী জমি ভরাট করা হয়েছে।

এছাড়া নদী খননের মাটি মোংলা ও রামপাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই দেয়াও হয়েছে। বিনামূল্যে মাটি দিতে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েও এখন কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই নদী খননের মাটি ফেলার জায়গা না পেলে মোংলা-ঘাষিয়াখালী নৌ চ্যানেল খননেও বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে।

তবে, মোংলা-ঘাষিয়াখালী নৌ চ্যানেল খননের মাটি দিয়ে নদীর দু’পাড়ের নিচু জমি ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষি ও শিল্পায়ন সৃষ্টির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জমির দামও বেড়েছে কয়েকগুন। নদী খননের এসব মাটি নদীর দু’পাড়েই ফেলা হয়েছে। একই জায়গায় একাধিকবার এ মাটি ফেলায় উঁচু টিলার সৃষ্টি হয়েছে। যা যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশংকা রয়েছে। নতুন করে জায়গার সৃষ্টি না হলে ড্রেজিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকার কথাও জানান তিনি।

(এসকেপি/এসপি/জুলাই ১৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test