E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাটমোহরে স্বামী পরিত্যক্তা নারীর আত্মহত্যা

২০১৯ জুলাই ২০ ১৬:৪৯:২০
চাটমোহরে স্বামী পরিত্যক্তা নারীর আত্মহত্যা

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা
করেছেন শারমিন আক্তার (২৪) নামের এক স্বামী পরিত্যক্তা নারী।

শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শারমিন উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চড়ইকোল পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবু সাইদের মেয়ে।

তবে তার আত্মহত্যার কারণ নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পরিবারের দাবি, শারমিনের মাথায় সমস্যা (মানসিক রোগ) ছিল। আর স্কুল শিক্ষকরা দাবি করেন, শারমিন খুবই ভাল মেয়ে ছিল। তাকে দেখে কখনও মনে হয়নি যে, তার মাথায় কোনো সমস্যা ছিল।

পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, শারমিনের বাবা আবু সাইদ ঢাকায় রিক্সা চালান। বাড়িতে তারা দুই বোন ও এক ভাই মায়ের সাথে থাকেন। চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস এইটে পড়া অবস্থায় তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার চামটা গ্রামে শারমিনকে বিয়ে দেয়া হয়। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় দেড় বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর বাড়িতে থেকে পুনরায় লেখাপড়া শুরু করেছিলেন শারমিন।

নিহতের ছোট বোন চাটমোহর সরকারি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী শান্তা খাতুন জানান, শুক্রবার রাতে খাবার পর তারা ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত একটার দিকে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙে তার। বাইরে গিয়ে দেখেন বাড়ির পাশে আমগাছের নিচে নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে নিয়েছেন বড় বোন শারমিন আক্তার। তারা আগুন নেভানোর অনেক চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শারমিনের।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যে আত্মহত্যা বলেই প্রতিয়মান হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। তারপরও এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের বাবা আবু সাইদ জানান, আমি ঢাকায় থাকি। রাত দু’টার দিকে গায়ে আগুন দিয়ে শারমিনের মৃত্যুর খবর পাই। কি কারণে মেয়েটা আত্মহত্যা করলো তা বুঝতে পারছি না। এখানে অন্যকোনো ঘটনা আছে কি না, তাও জানি না। তবে মেয়ের মাথায় একটু সমস্যা ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস রঞ্জন তলাপাত্র জানান, মেয়েটি তাদের স্কুলে ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়া অবস্থায় তার বাবা-মা গোপনে বাল্যবিয়ে দেয়। স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর গেলো এবছর জানুয়ারি মাসে স্কুলে পড়ালেখা করার জন্য আমাদের কাছে ইচ্ছাপোষণ করে। পরে তাকে ক্লাস নাইনে রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। সে নিয়মিত ক্লাস করতো, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার স্কুলে এসেছিল। সে খুবই ভাল মেয়ে ছিল। তাকে দেখে ও কথাবার্তা শুনে কখনও মনে হয়নি তার মাথায় কোনো সমস্যা ছিল।

এদিকে এলাকার একাধিক সুত্র জানায়, স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর মানসিক দুশ্চিন্তা ও পারিবারিকভাবে মায়ের সাথে কলহের কারণে শারমিন আক্তার আত্মহত্যা করেছেন।

(এস/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test