E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে ডেঙ্গু আতঙ্ক : সাপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্ত ২৬

২০১৯ আগস্ট ০১ ১৫:৪০:১০
মৌলভীবাজারে ডেঙ্গু আতঙ্ক : সাপ্তাহের ব্যবধানে আক্রান্ত ২৬

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে জেলাজুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্কে এক সাপ্তাহের ব্যবধানে এ-পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ২৬ জন । ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেলা জুড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা পঁচিশজন হলেও গত চব্বিশ ঘন্টার ব্যবধানে একজন করে বেড়ে ছাব্বিশজনে দাঁড়ায়।

সর্বশেষ তথ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন ডা: শাহজাহান কবির চৌধুরী বলেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রোগীদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
জানা যায়, আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগ ঢাকা থেকে ফিরে এসে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চা শ্রমিকের সন্তানসহ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধিন আছেন নারী-পুরুষসহ ৯ জন । ভর্তি হওয়া ৯ জনের মধ্যে ৫জন পুরুষ ও ৪জন নারী রয়েছেন বলে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

সরেজমিন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালের চতুর্থতলার ডেঙ্গু কর্ণারে ভর্তি আছেন ৫জন পুরুষ রোগী। এদের সবাই প্রয়োজনীয় কাজে ঢাকা থেকে ফিরে এসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে । সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন পৌর শহরের কাজিরগাঁও এলাকার সুমি চক্রবর্তী (২৪), সদর উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাড়ন্তী গ্রামের লিজা বেগম (২১) পৌর শহরের পূর্ব সুলতানপুর এলাকার গৃহকর্মী শিপা বেগম (১৮) শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান চাবাগানের চা শ্রমিকের মেয়ে পল্লবী উড়িয়া (১৩) বিজিবি সদস্য আশিকুর রহমান (২২) ,সদর উপজেলার দূর্লভপুর গ্রামের কামরান আহমেদ (৪০) । এর বাহিরে মৌলভীবাজার শহরের লাইফলাই কার্ডিয়াক হসপিটালে একজন ও শহরের মৌলভী পলি ক্লিনিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন ৬জন।

এদের মধ্যে সদর উপজেলার আমতৈল ইউনিয়নের মুমিন খান (৩০) শহরের সৈয়ারপুর এলাকার সালাম মিয়া (২০), একই এলাকার প্রশান্ত চন্দ্র পালের ছেলে পিঙ্কু চন্দ্র পাল (২৭) কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানের চা শ্রমিক রাজকুমার, সদর উপজেলার বর্ষিজোড়া গ্রামের প্রিয়া আক্তার (১৫) শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাজীপুর গ্রামের রুমি বেগম (১৫) কে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী লিজা বেগম এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, তার স্বামী ঢাকায় একটি প্রাইভেট ফার্মে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন , সেই সুবাধে ঢাকায় স্বামীর সাথে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তিনি, সেখানে শরীরে জ্বর অনুভব হলে চলে আসেন নিজ বাড়ি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ বাড়ন্তী গ্রামে, পরে জ্বরের তীব্রতা বাড়তে থাকলে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ডেঙ্গু ধরা পড়ে।

তিনি জানান, বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থ আছেন। পাশের বেডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন শিপা বেগম নামে এক গৃহকর্মী। তিনি মৌলভীবাজার শহরের পূর্ব সুলতান পুর এলাকার একটি বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন, সেখানে শরীরে জ্বর অনুভব হলে তিনি পরবর্তিতে ভর্তি হন সদর হাসপাতালে । সেখানেই তার শরীরে ডেঙ্গু ধরা পরে।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: রতœদীপ বিশ্বাস বলেন, সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে দুইজনকে নিয়ে আমরা একটু চিন্তিত, হয়তো তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হতে পারে।

এদিকে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ২৫টি রেপিড টেস্ট হস্তান্তর করা করেছেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব ফজলুর রহমান।

গত রবিবার (২৮ জুলাই) সিভিল সার্জন ডা: শাহজাহান কবির চৌধুরীর হাতে এসব ডিভাইস হস্তান্ত করেন তিনি। পরে দ্বিতীয় দফায়ও তিনি আরো ২৫টি ডিভাইস হস্তান্তর করেন ।

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্থে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতিদিনই বাড়ছে। এডিস মশার বিস্তার ঘটার কারণে এমনটি হচ্ছে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে বলে বিভিন্নস্থানে পানি জমছে। সেখানে এডিস মশা ডিম দিচ্ছে। মশার বংশবৃদ্ধি বেশি বেশি হচ্ছে। মশার সংখ্যা বাড়ার কারণে সেসব মশা কামড়াচ্ছে। ফলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

(একে/এসপি/আগস্ট ০১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test