E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুই সন্তানের জননীকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী পলাতক 

২০১৯ আগস্ট ০১ ১৮:৫৩:৫৪
দুই সন্তানের জননীকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী পলাতক 

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে দুই সন্তানের জননী সাকিলা আক্তার শ্যামলী (৩২) কে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাসুদ রানা (৩৬) এর বিরুদ্ধে।

বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিম্বা গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। ওই রাতে ঘটনাস্থল থেকে রাণীনগর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ওই রাতেই গৃহবধুর বাবা আব্দুস সাত্তার বাদি হয়ে রাণীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হঠাৎ করে দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে পারিবারিক দ্বন্দ-ফাঁসাদ থেকেই এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের সিম্বা গ্রামের আফসার আলীর ছেলে মাসুদ রানা প্রায় ১৬ বছর আগে একই উপজেলার বেলবাড়ি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সাকিলা আক্তার শ্যামলী (৩২) কে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে করে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম গ্রহণ করে। ছেলে সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। আর মেয়ের বয়স সাড়ে চার বছর। বিয়ের পর থেকে ভালই চলছিল তাদের দাম্পত্তজীবন। হঠাৎ করে গত প্রায় দুই মাস আগে স্ত্রীর অজান্তে দ্বিতীয় বিয়ে করে মাসুদ রানা। দ্বিতীয় স্ত্রী একই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের বিধবা মেয়ে তিন সন্তানের জননী সালমা বেগম (৩০)। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রীর প্রতি শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এনিয়ে পারিবারিক ও সামাজিক ভাবে সমাধানের লক্ষ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও মাসুদ রানার দাম্ভিকতার কারণে তার সুষ্ঠু কোন সমাধান হয়নি।

এরই এক পর্যায় বুধবার বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে স্ত্রী শ্যামলীকে পিটিয়ে হত্যার পর মাসুদ নিজেই শ্বশুর বাড়িতে খবর দেয় যে তাদের মেয়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য। তাড়াতারি আমার বাড়িতে আসেন হাসপাতালে নিতে হবে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন দ্রুত সেখানে পৌছা মাত্রই তড়িঘরি করে মাসুদ রানা একটি ভ্যান ভাড়া করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে কৌশলে সে পালিয়ে যায়।

পথিমধ্যে শ্বশুর বাড়ির লোকজন বুঝতে পাড়ে তাদের মেয়ে আর বেঁচে নেই। পরে তারা লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরে গিয়ে রাণীনগর থানা পুলিশকে খবর দিলে বুধবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তবে পুলিশের প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে গৃহবুধ শ্যামলীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহৃ ও ক্ষত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন থানা পুলিশ।

গৃহবুধর বাবা আব্দুস সাত্তার জানান, গত প্রায় দুই মাস আগে মাসুদ দ্বিতীয় বিয়ে করে। ওই বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে লাগলে পারিবারিক ও গ্রামের লোকজনদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠকও করা হয় কিন্তু মাসুদ ওই সব বৈঠকের সমাধান না মেনে নির্যাতন অব্যহত রাখে। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার দিন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমার মেয়ের হত্যাকারীর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুব আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় গৃহবধুর বাবা আব্দুস সাত্তার বাদি হয়ে থানায় মাসুদ রানাকে প্রধান আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক সুরতহালে গৃহবধু শ্যামলীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহৃ ও ক্ষত পাওয়া গেছে। আসামীকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যহত রয়েছে।

(এসকেপি/এসপি/আগস্ট ০১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test