E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খাটাল লতিফ বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ সহোদর ভাই আবদুল আহাদের 

২০১৯ আগস্ট ০৩ ১৮:৩২:১৬
খাটাল লতিফ বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ সহোদর ভাই আবদুল আহাদের 

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : লতিফ রাসেল পলাশ বাহিনীর তান্ডবের পর পুলিশি হানায় দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রাম এখন পুরুষশুন্য। শুক্রবার রাসেল বাহিনীর তান্ডবের মুখে মুসুল্লিরা কামার বায়সা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে পারেন নি। তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। স্কুল কমিটি গঠনে মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের সদস্য করার প্রতিবাদ করায় লতিফ-রাসেল বাহিনী মারপিট করেছে। আমরা মামলা দিয়েছি। সে মামলা পুলিশ নেয়নি। বরং লতিফ রাসেলের অনুগত আরেক মাদক ব্যবসায়ী শফিকুলের ছেলে শরিফুল যে ভুয়া মামলা দিয়েছে তাই রেকর্ড হয়েছে থানায়। তবে পুলিশ বিষয়টি অনুধাবন করেছে যে  আসলে দোষী কারা। 

শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন দক্ষিণ কামার বায়সা গ্রামের আবদুল লতিফের আপন সহোদর মো. আবদুল আহাদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন আবদুল লতিফ যাকে খাটাল লতিফ বললে মানুষ চেনে সেই লতিফ একজন মামলাবাজ ও চাঁদাবাজ। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এলাকায় তার রয়েছে এক বিশাল বাহিনী। এই বাহিনীকে ব্যবহার করে লতিফ এলাকায় তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ৩১ জুলাই দক্ষিণ কামারবায়সা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে লতিফ বাহিনী প্রধান তার ছেলে আমিনুল হাসান রাসেল ও তার সহযোগী শরিফুল ইসলাম শরিফ, মোমেন, মঞ্জরুল ইসলাম, সবুজ, উজ্জ্বল হোসেন, সুমনসহ অনেকেই দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আনারুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আরিজুল ইসলাম এবং তাকে (আবদুল আহাদ) মারপিট করতে থাকে। তিনি বলেন এতে বাধা দিলে তারা বৃদ্ধ স্ত্রী সেলিনা খাতুন, ছেলে মোজাম্মেল হক, তোজাম্মেল হক ও মোস্তাফিজুরকে মারপিট করে আহত করে। তারা সেলিনা খাতুনের গলায় শাড়ি পেচিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে খাটাল লতিফ গনপিটুনি খেয়ে ভোঁ দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধ আবদুল আহাদ বলেন ঘটনার পরপরই আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই। কিন্তু পুলিশ সেটি চেপে রেখে সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য শরিফুলের দেওয়া মামলাটি রেকর্ড করেছে।
আবদুল আহাদ বলেন সন্ত্রাসীদের দ্বারা মারধর খেয়ে ও অপমানিত হয়েও মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছি আমিসহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরাও। এতে এলাকার নিরীহ মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছেন। তারা প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়ার দাবি করেছেন। একই সাথে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিরীহ লোকদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বৃদ্ধ আবদুল আহাদ আরও বলেন গত ৬ জুন বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলির সন্তানদের কাছে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে ওই বাহিনী মনিরুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। এতে বাধা দেওয়ায় বৃদ্ধ আহাদকে মারপিট করে লতিফ রাসেল বাহিনী। সাজানো ম্যানেজিং কমিটি তৈরি করে তাতে লতিফের ছেলে রাসেল হয়েছেন স্বঘোষিত সভাপতি। দক্ষিণ কামারবায়সা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে ঢুকানো হয়েছে গাঁজাখোর ও মাদকসেবীদের।

এদের মধ্যে মোজাম মাদকসেবী, বদিরুজ্জামান মাদকসেবী, শরিফের বাবা শফিকুল মাদক ব্যবসায়ী। সংবাদ সম্মেলনে আবদুল আহাদ বলেন রাসেল ও পলাশ বাহিনী গরু বিক্রির টাকা কেড়ে নিয়েছিল। বেশ কিছুদিন আগে গরু বিক্রির পর পুলিশের মাধ্যমে বিক্রেতাদের আটক করে সেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল লতিফ রাসেল পলাশ বাহিনী। তাদের এসব অপকর্মে বাধা দিলেই সন্ত্রাস বাড়িয়ে দেয় লতিফ রাসেল পলাশ বাহিনী।

বৃদ্ধ আবদুল আহাদ এসবের প্রতিকার দাবি করেন। তিনি সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন সন্ত্রাস দমনে তিনি নিশ্চয়ই কাজ করবেন । তারা লতিফ বাহিনীর শাস্তি দাবি করে বলেন আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। গ্রামে শান্তিতেই থাকতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলাকার রাশিদুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, আবদুর রশীদ শেখ, রওশন আলি, আঞ্জুয়ারা খাতুন, সফিকুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন, মো. আবদুল্লাহ, আনারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test