E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ, ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ

দিনাজপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

২০১৯ আগস্ট ১০ ১৫:৫৯:৫৪
দিনাজপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : দিনাজপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের নামে প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকা গোচ্ছা যাচ্ছে। এতে দিনাজপুরবাসী যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে,তেমনি ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। এবারে দিনাজপুরে বন্যা না হলেও বিভিন্ন স্থানে বাঁধ মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬৭ লাখ টাকা খরচ দেখাচ্ছে। বাঁধ মেরামতের নামে কাগজে-কলমে এই খরচ দেখানো হলেও বাস্তব চিত্র উল্টো। অভিযোগ রয়েছে- প্রতি বছরই বাধ মেরামত করার নামে দায়সারা কাজ করছে সরকারের এই সংস্থাটি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, পুরোপুরি বালু দিয়ে বাধ নির্মাণ করা ও অনিয়মের কারনে বর্ষায় নদীর পানির চাপ বাড়লেই এসব বাঁধের হদিস মিলবে না।  

দিনাজপুরের সদর উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের গোষ্ঠের ডাঙ্গা এলাকা। গর্ভেশ্বরী নদীর এই উৎসমুখে এবারে ৪১০ মিটার বাঁধ মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ড খরচ দেখাচ্ছে ৩০ লাখ টাকা। তবে কাগজে ৪১০ মিটার দেখানো হলেও বাস্তবে এটি দেড়’শ মিটারের বেশি নয়। আবার মেরামতেরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি, বালু দিয়ে দায়সারা কাজ করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এলাকার মোয়াজ্জেম,শমশের,কালু রাম,কলেন্দ্র,শান্তু জানান,প্রতিবছর বাঁধ নির্মাণের নামে কি কাজ হয় তারা কিছুই জানেনা। লোক দেখানো বালু দিয়ে কাজ করে তারা। ফলে কয়েকদিনে তা আবারো ভেঙ্গে যায়।

শুধু তাই নয়, প্রতি বছরই বর্ষার সময়ে এই বাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু মেরামতের নামে টাকা উত্তোলন করা হলেও এলাকাবাসীর আতঙ্ক কমার মত কোন কাজ হয়না বলে অভিযোগ তাদের।

দিনাজপুরে এবার বন্যা না হলেও আপদকালীন বাঁধ মেরামতে খরচ দেখানো হয়েছে, গোষ্ঠের ডাঙ্গায় ৩০ লাখ টাকা,মালঝার চকচকায় ৯ লাখ টাকা,রাজারামপুরে ১৮ লাখ টাকা এবং কর্ণাইয়ে ১০ লাখ টাকা।
এবারে বন্যায় ক্ষতির নামে সদরের কর্ণাই ও গোষ্ঠেরডাঙ্গা এবং বিরল উপজেলার মালঝার, রাজারামপুর এলাকায় বাধ মেরামতে প্রায় ৬৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এলাকাবাসীর দাবি, শুধু মেরামতের নামে অর্থ আত্মসাতেই সীমাবদ্ধ না হয়ে স্থায়ী সমাধান চাই তাদের। যাতে করে বন্যার সময়ে ক্ষতির হাত থেকে তারা রক্ষা পান।

কাজের মানের প্রশ্নে সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারেননি দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রক্যেশলী মো.ফইজুর রহমান। তবে এলাকাবাসীর সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান,এলাকার লোকজনের কাজ সম্পর্কে ধারনা নেই। কি দিয়ে কাজ করতে হয় তারা জানেনা। তাই তাদেও অভিযোগ।

দিনাজপুরে মোট বাধের পরিমাণ ২০৮ কিলোমিটার, এরমধ্যে শহররক্ষা বাধের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৯৬ কিলোমিটার। গত ২০১৭ সালের বন্যায় শহররক্ষা বাধের ৪টি স্থানসহ ৫৮টি স্থানে বাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় দিনাজপুর। এই বন্যায় বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি মারা যায় ২৯ জন মানুষ।

দিনাজপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের নামে প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকা গোচ্ছা যাচ্ছে। এতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না তাতে। তাই দিনাজপুরবাসী টাকা লোপাটের বিষয়টি খতিয়ে দেখাসহ বন্যার কবল থেকে জেলাবাসীকে বাঁচাতে স্থায়ী ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছে।

(এস/এসপি/আগস্ট ১০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test