E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এসিল্যান্ড যখন ঠিকাদার

২০১৯ সেপ্টেম্বর ১২ ১৭:৩৬:২২
এসিল্যান্ড যখন ঠিকাদার

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা ভূমি অফিস ও তার আওতাধীন ২টি ইউনিয়ন ভুমি অফিসে সংস্কার ও নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে সর্ম্পূণ হয়েছে। তবে এ কাজে সরকারী নিয়মকে কাগজে কলমে দেখিয়ে গোপনে সম্পূর্ণ করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সোহাগ চন্দ্র সাহার বিরুদ্বে। সরকারী বিধিমালাকে উপক্ষো করে এসিল্যান্ড নিজেই এ কাজ করায় উপজেলায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা সরকারী বরাদ্দের ৫ লাখ টাকা ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে উপজেলা ভুমি অফিস ও ২টি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সংস্কার কাজ সর্ম্পূণ করেছেন বলে কাগজে কলমে দেখিয়েছেন। অপরদিকে সংস্কারের নামে বাচোর ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে এক লাখ অনুদান নিয়েছেন এসিল্যান্ড। অনুদান দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র নাথ।

ঠিকাদার নিয়োগ হলেও কাজটি এসিল্যান্ড নিজেই করেছেন বলে নিয়োগকৃত ঠিকাদার খায়রুল ইসলাম সম্প্রতি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও কাজের শ্রমিকদের বেতন এসিল্যান্ড অফিসের নাজির পরিশোধ করেছেন বলে জানান শ্রমিকরা।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছুটা অস্বচ্ছতার। স্থানীয় ও জেলার নিয়মতি ঠিকাদাররা এ কাজের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি আহবানের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল উপজেলা ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, এ কাজের যে কখন দরপত্র আহবান করা হলো তা আমরা জানি না।

সংস্কারের কাজ করা হয়েছে ২টি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের একটি ধর্মগড়-কাশিপুর ইউপির উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এটা কোন বরাদ্দ থেকে হয়েছে জানিনা। এসিল্যান্ড স্যার আমার অফিসের পিয়ন দিয়ে দেখা শুনা করিয়ে অফিসের দরজা জানালা প্রাচীর কাজটি করিয়ে নিয়েছেন শুধু এটা জানি। এর বাইরে কিছুই জানি না। এখানে কোন ঠিকাদার কিংবা কোন প্রকৌশলীকে কখনো আসতে দেখেনি।

আরেকটি ইউনিয়ন ভুমি অফিস বাচোর ইউপির উপ-সহকারী ভুমি কর্মকর্তা রহমত আলী জানান,কাজটি কিভাবে হলো কার অর্থায়ানে হলো জানিনা একদিন দেখলাম ইট সিমেন্ট বালু নিয়ে এসে এসিল্যান্ড রাজমিস্ত্রি দিয়ে আমার অফিসের ডান দিকে ইটের প্রাচী নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করলো এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবো না।

উপজেলা ভুমি অফিস সুত্রে জানা যায়, সরকারী নিয়মে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উপজেলা ভুমি অফিসের ফ্রন্ট ডেস্ক নির্মাণ ২টি ইউনিয়ন ভুমি অফিস সংস্কার বাবদ ৫লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করা হয়েছে।

তবে দরপত্র আহবান বা কার্যাদেশ প্রদানের সময় ও তারিখ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে উপজেলা ভুমি অফিসের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দরপত্র আহবানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করার বিধান থাকলেও এসিল্যান্ড স্যার নামে মাত্র ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে নিজের তত্বাবধানে কাজটি করেছেন। এবং কর্মরত শ্রমিকদের বেতন মুজুরী ও মালামাল ক্রয়ের টাকা আমাদের অফিসের লোক দিয়েই পরিশোধ করেছেন।

নির্মাণ কাজের রাজ মিস্ত্রি আমির আলী বলেন, এ কাজের ঠিকাদার আছে কিন্তু তাকে আমি দেখিনি আমাকে ভূমি অফিসের নাজির টাকা পরিশোধ করেছে।

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি সোহাগ চন্দ্র সাহা গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে নিজে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন,আমি দরপত্রের কাজের চেয়েও অতিরিক্ত কাজ করেছি। তাই অনুদানও নিয়েছি। আপনারা এসে দেখে যান।

(কেএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test