E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিশু মাহিম হত্যা : বাবার ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন

২০১৯ অক্টোবর ২১ ২৩:৪১:০৩
শিশু মাহিম হত্যা : বাবার ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার  জয়নগর গ্রামের ছয় মাসের শিশু মাহিম হত্যা মামলায় দীর্ঘ দু’ বছর তিন মাস ২৩ দিন পর সিআইডি তার বাবা নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার দিবাগত রাত  দু’ টোর দিকে তাকে তার জয়নগরের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত নজরুল ইসলাম সরদারের(৫৫) বাবার নাম মৃত ধনাই সরদার।

জয়নগর গ্রামের একাধিক সূত্র জানায়, নজরুল ইসলাম সরদার দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে মাদক ও হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে। সে ইতিপূর্বে খুকুমনি, করিমুন্নেছা, সালমা, জাহেরা, সুফিয়া, আমিনা, গোলাপী, ফরিদা ও মমতাজসহ কমপক্ষে দু’ ডজন নারীকে বিয়ে করেছেন। ওইসব নারীদের ১১টি সন্তান রয়েছে। বিয়ে করার পর বাচ্চা হওয়ার আগে বা পরে সে নির্যাতন চালিয়ে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দিত। সর্বশেষ কালিগঞ্জ উপজেলার বাবা ও মা পরিত্যক্তা মমতাজ বেগমকে বিয়ে করে। তাদের মাহিম নামে এক শিশু জন্মগ্রহণ করার পর থেকে মমতাজের উপর নির্যাতন চালাতো নজরুল। একপর্যায়ে সন্তনকে নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য স্বামীর ভিটার অদুরে ছোট একটি মুদি দোকান পরিচালনা করতো মমতাজ।

তারা আরো জানান, ২০১৭ সালের ২৭ জুন দুপুরে ভাত খাওয়ার পর বাড়ির সামনের পুকুরের পাড়ে একটি চৌকি নিয়ে তাতে মাহিম, মমতাজ ও সে শুয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর মমতাজ মাহিমকে রেখে দোকানে চলে যায়। বিকেল চারটার দিকে নজরুল দোকানে যেয়ে মমতাজকে বলে তার চেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একপর্যায়ে পুকুরের পাড়ে মাহিমকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। ময়না তদন্ত ছাড়াই মাি মের লাশ দাফন করা হয়। ওই বছরের ৫ জুলাই মমতাজ বাদি হয়ে সতীন জাহেরা ও তার দু’ ছেলে রফিক ও শফিকের নাম উল্লেখ করে শ্যামনগর থানায় ১৫ নং হত্যা মামলা(জিআর-২৭৮/১৭) দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক বিএম লিয়াকত আলী এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। নজরুল তার এক মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে শফিককে বাড়ি তার নামে লিখে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিমাতা ভাই রফি মাহিমকে গলা টিপে হত্যা করেছে এবং শফি লাশ পানিতে ফেলে দিয়েছে মর্মে পুলিশের কাছে বলায়। একপর্যায়ে মামলাটি সিআইডিতে গেলে সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মোফাজ্জেল হোসেন আদালতে আবেদন করে লাশ ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেন। ময়না তদন্তে লাশ পচনের ফলে মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করা যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

পরবর্তীতে মামলাটি সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মনচ্যাংলার হাত ঘুরে বর্তমানে শেখ জাকির হোসেনের উপর বর্তায়। তিনি মামলার মোটিভ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সাতক্ষীরা সিআইডি’র সহকারি পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম ও খুলনা সিআইডি পুলিশের সুপার আব্দুল কাদেরের সঙ্গে পরামর্শ করে সোর্স নিয়োগ করে বিষ্ণুপুর গ্রাম থেকে মমতাজের সঙ্গে কথা বলে রবিবার দিবাগত রাত দু’ টোর দিকে জয়নগর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নজরুলকে গ্রেপ্তার করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ জাকির হোসেন বলেন, নজরুল দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল। নজরুলকে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনেসর রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়েছে।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test