E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোংলায় স্কুল শিক্ষিকাকে লাঞ্চিতের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা  

২০১৯ অক্টোবর ২৫ ১৭:০৫:৫২
মোংলায় স্কুল শিক্ষিকাকে লাঞ্চিতের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা  

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার হলদিবুনিয়ায় খ্রীষ্ট্রান সম্প্রদায়ের এক স্কুল শিক্ষিকাকে লাঞ্চিতের ঘটনায় এলাকার দু’গ্রপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল বিকেলে বাগরেহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুই প্রতিবেশী প্রতিপক্ষের জমির সীমানা প্রাচীর নিয়ে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে স্থানীয় ক্যাথলিক মিশনের ধর্মযাজকসহ জনপ্রতিনিধিরাও কয়েক দফায় এ বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, মোংলার চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া গ্রামের দিলিপ হালদার ও প্রতিবেশী রবিন মল্লিক পরিবারের মধ্যে বছর দু’য়েক আগ থেকেই বাড়ির সীমানা প্রাচীর নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সরকারি ভুমি জরিপকারীসহ চিলা ও চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রথম দফায় এ বিরোধ মিমাংসা করে। কিন্তু এতে রবিন মল্লিকের মনোপুত না হওয়ায় এ দ্বন্ধ থেকে যায় দু’পরিবারের মধ্যে। স্থানীয় ক্যাথলিক মিশনের ধর্মযাজকসহ জনপ্রতিনিধিরাও কয়েক দফায় এ বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।

গত ১৫ অক্টোবর দুপুরে দিলিপ হালদার সীমানা প্রচীরের ঘেরা-বেড়া সংস্কার করতে গেলে প্রতিপক্ষ রবিন মল্লিকের স্ত্রী মারিয়া মল্লিক, কন্যা মিশনারী স্কুলের শিক্ষিকা প্রনতি মল্লিক তাতে বাঁধা দেয় এবং বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দু’পরিবারের নারী-পুরুষরা পরস্পর বিরোধী হামলা ও পাল্টা হামলায় লিপ্ত হলে দু’পরিবারের ৪/৫ জন আহত হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে আহত মারিয়া মান্না হালদার (৫০), ববিতা হালদার (৪০) এবং প্রনতি মল্লিককে তাৎক্ষনিক মোংলা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য আহতদের মধ্যে প্রনতি মল্লিককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

আহত প্রনতি’র মা মারিয়া মল্লিক বলেন, তার মেয়েকে প্রতিপক্ষের বখাটে যুবকরা কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রাচীর নিয়ে সৃষ্ট ঘটনার সময় ওই বখাটেরা তার মেয়েকে বেদড়ক মারধর করে।
অপর দিকে দিলিপ হালদার বলেন, তার পরিবারের সবাই ঢাকায় বসবাস করেন, মাঝে মধ্যে গ্রামে বেড়াতে আসেন। ঘটনার দিন তিনি প্রাচীরের তার কাঁটার বেড়া সংস্কার করতে গেলে প্রনতি মল্লিক, বোন সুচিত্রা ও তার মা মারিয়া মল্লিক তার ওপর চড়াও হয়।

এ পরিস্থিতিতে স্ত্রী মারিয়া মান্না হালদার ও বাড়িতে বেড়াতে আসা তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে দিপ্ত হালদার ও ভাইপো পিয়াস হালদার এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা তাদের জুতা পেটা করে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তিনি (দিলিপ হালদার) অভিযোগ করে আরও বলেন, ছাগল নিয়ে বিরোধের জের ধরে ছোট ভাই তপন হালদারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল প্রনতি মল্লিক বাদী হয়ে শীøলতাহানী ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করে হয়রানী করছে।

এছাড়া স্কুল শিক্ষিকা প্রনতিকে কু-প্রস্তাবের বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন তিনি। পেশাগত কারণে স্বপরিবারে ঢাকায় থাকার সুযোগ নিয়ে প্রতিপক্ষরা নানা অজুহাতে পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন বলে তার অভিযোগ। এদিকে দু’পরিবারে সীমানা প্রাচীরের এ দ্বন্ধে এখন পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন হলদিবুনিয়া গ্রামের খ্রীষ্টান সম্প্রদায়। আর এ নিয়ে ক্রমেই গ্রামবাসির মধ্যে ক্ষোভ উত্তেজনা বাড়ছে।

গতকাল বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। এর আগে দুপুরে মোংলা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন, মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার ও চাদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা তারিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয় মোংলা থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, মিশনারী ধর্মযাজকের অনুমতির অজুহাত দেখিয়ে এখনও কেউই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

(এসএকে/এসপি/অক্টোবর ২৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test