E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রবীন্দ্রনাথের কাছারি বাড়ির পাশে মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করে দিলো প্রশাসন

২০১৪ আগস্ট ০৫ ১০:৫৪:১৯
রবীন্দ্রনাথের কাছারি বাড়ির পাশে মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করে দিলো প্রশাসন

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজরিত কাছারি বাড়ি সংলগ্ন একটি বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেন উপজেলা প্রশাসক। প্রত্নতত্ব বিভাগের আওতাধীন শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িটির পাশেই সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে শাহজাদপুরের কতিপয় সুতা ব্যবসায়ী এক প্রকার গায়ের জোরেই কাছারি বাড়ির কাষ্টোডিয়ানকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এই ভবন নির্মাণ করছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় সুতা ব্যবসায়ীরা।

কাছারি বাড়ির দক্ষিণ পাশে স্থানীয় সুতা ব্যবসায়ীরা পুরাকৃতির বিধি বিধান না মেনে রবীন্দ্র কাছাড়ি বাড়ির দক্ষিণ পাশে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন (সুতা মার্কেট) নির্মান কাজ শুরু করার পর রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির কাষ্টোডিয়ান মোঃ মুজিবুর রহমান বলেন, পুরাকৃীতি আইনের ১২ (৩) এবং ১৯ (চ) ও (২) ধারা অনুযায়ী সংরক্ষিত পুরাকৃীতির সন্নিকোটে কোন ভবন নির্মাণ, সৌন্দর্যহানী কিংবা কোন প্রকার ক্ষতি সাধন আইনত দন্ডনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ, একই ভাবে এ নির্মাণ কাজ বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩ ও ২৪ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর দেরিতে হলেও সোমবার শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজে উপস্থিত হয়ে এই কাজ বন্ধ করে দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্নতত্ব বিভাগ রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির দায়িত্ব নেয়ার পর, এ বাড়িটিকে রবীন্দ্র স্মৃতিযাদুঘর হিসেবে রুপান্তরিত করা হয়। এর সৌর্ন্দয্য বৃদ্ধির জন্য বহু টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর, অত্যাধুনিক মিলনায়তন, অভ্যন্তরিন পাকা সড়ক, বাগান, পাঠাগার নির্মান করা হয়।

জানা গেছে বিধি বর্হিভূত ভাবে ২০০৪ সালে শাহজাদপুর উপজেলা ইয়ার্ণ মার্সেন্ট এ্যসোসিয়েশনের (সুতা ব্যবসায়ীর সংগঠন) ৬৫ জন সদস্য কাছারিবাড়ীর দক্ষিণ পাশে প্রায় ৬৫ শতাংশ জমির উপর বহুতল ভবন (মার্কেট) নির্মান কাজ শুরু করলে প্রত্নতত্ব বিভাগ থেকে এখানে দ্বিতল ভবন না করার জন্য নিষেধ করে। কৌশল অবলম্বন করে ২০০৬ সালে উক্ত ভবনের উপর দ্বিতীয় তলা মার্কেটের সম্প্রসারন কাজ শুরু করে। এক তলা ভবন নির্মাণ করার পর সুতা ব্যবসায়ীরা বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করলে প্রত্নতত্ব বিভাগ থেকে এ সুতা ব্যবসায়ীদের লিখিতভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য জানানো হয়। কিন্তু তা উপেক্ষা করে পুনরায় এ ভবনের কাজ শুরু করার পর প্রত্নতত্ব বিভাগ প্রশাসনের সহযোগীতা চাইলে বিলম্ব হলেও প্রশাসন থেকে এ কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রত্নতত্ব বিভাগের অভিযোগ পাওয়ার পর নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আহমেদ নিজে সহকারী কমিশনার (ভুমি) সন্দীপ সরকার ও পুলিশ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে উপস্থিত হয়ে এ কাজ বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে কাছারিবাড়ির দায়িত্বে নিয়োজিত (কাস্টোডিয়ান) মোঃ মুজিবুর রহমান বলেন, পুরাকৃর্তির আইননুযায়ী উক্ত স্থানে একতলা ভবন নির্মান করা যেতে পারে। তারা সকল নিয়ম লংঘন করে বিধি বর্হিভূত ভাবে বহতল ভবন নির্মান করেই যাচ্ছে। পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।

এ ব্যপারে সুতা ব্যবসায়ী সমিতির এক সদস্য এনামুল হাসানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শাহজাদপুর তাঁতসমৃধ এলাকা। যে কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসার স্বার্থে বহুতল ভবন নির্মান করা হচ্ছে। আমরা রবীন্দ্রনাথের পুরাকৃীতির সৌন্দর্য হানীকর কোন কাজ করবো না। তিনি আরো বলেন, প্রত্নতত্ব বিভাগ থেকে আমাদের ভবনের কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলে নাই। শুধু উপজেলা প্রশাসন থেকে মৌখিক ভাবে নিষেধ করা হয়েছিল ভবন নির্মাণ না করার জন্য। শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আহম্মেদ জানান, ইতিপূর্বে সুতা ব্যবসায়ীদের কাজ বন্ধ করার জন্য একাধিকবার নোটীশ জারি করা হলেও তারা বন্ধ রাখেনি। যে কারনে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

(এআরপি/এইচআর/আগস্ট ০৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test