E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও জনমনে অস্বস্তি!

২০১৯ ডিসেম্বর ০৪ ১৭:০৬:৫৭
টাঙ্গাইলে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও জনমনে অস্বস্তি!

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করায় দাম কিছুটা কমলেও এখনো মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরেই রয়েছে। ফলে অধিকাংশ ক্রেতা প্রয়োজনের তুলনায় কম পেঁয়াজ কিনছেন। কেউ কেউ পেঁয়াজ কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। পুরনো ও নতুন পেঁয়াজের দামে বিস্তর তফাৎ থাকায় ক্রেতা সাধারণ অস্বস্তিতে ভুগছেন।  

টাঙ্গাইল শহরের পার্কবাজার, ছয়আনী বাজার, টাঙ্গাইল শহরের পার্কবাজার, ছয়আনী বাজার, আমিন বাজার(গোডাউন বাজার), সাবালিয়া বাজার, নতুন বাস টার্মিনাল বাজার, বটতলা বাজার, বৈল্যা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন পেঁয়াজ প্রতিকেজি ২০০-২৩০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ(কালী পেঁয়াজ) প্রতিকেজি ৮০-১১০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টাঙ্গাইলে পাইকারী বিকিকিনির একমাত্র স্থান শহরের পার্ক বাজার। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ বাজারে পেঁয়াজ আমদানি হয়। উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, বগুড়া ও পাবনা থেকে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ এ বাজারে আসে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকেও চাষীরা এ বাজারে নতুন পেঁয়াজ নিয়ে আসেন।

পার্ক বাজারে পুরাতন পেঁয়াজ প্রতি পাঁচ কেজি(স্থানীয় ভাষায় এক পাল্লা) পাইকারী ৯০০-৯৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ(কালী পেঁয়াজ) প্রতি পাঁচ কেজি(প্রতি পাল্লা) পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৪০০টাকা দরে। এছাড়া মিশর থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ পার্ক বাজারের একটিমাত্র দোকানে ১৬০-১৭০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন-পুরাতন পেঁয়াজের দামে এমনতর বিস্তর তফাৎ হওয়ায় ক্রেতারা অনেকটা অস্তস্তিতে ভুগছেন। তারা পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসার অপেক্ষা করছে। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় অল্প পরিমানে পেঁয়াজ কিনে কোন রকমে দিন পাড়ি দিচ্ছেন।

পার্ক বাজারে খুচরা পেঁয়াজ ক্রেতা সজিব, মনোহর, রাজু, শিমলা, তনু সহ অনেকেই জানান, দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ২০০-২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তারা সাধারণত পেঁয়াজ পাল্লা(পাঁচ কেজি) হিসেবে কিনে থাকেন। দাম বেশি থাকায় মাত্র আধাকেজি/এককেজি করে পেঁয়াজ কিনেছেন। তারা জানান, বিদেশি পেঁয়াজের কথা শুনলেও বাজার ঘুরে মাত্র একটি দোকানে পেঁয়াজ দেখতে পান। মিশরীয় ওই পেঁয়াজের দাম প্রতিকেজি ১৬০-১৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মিশরীয় পোঁজ বিক্রেতা মো. খলিলুর রহমান জানান, তিনি ঢাকার শ্যামবাজার থেকে ১৫২টাকা কেজি দরে কিনে এনে ১৬০-১৭০টাকায় বিক্রি করছেন।

অপরদিকে, টিসিবি’র উদ্যোগে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে প্রতিকেজি ৪৫ টাকা দরে প্রায় ৩(তিন) মেট্রিক টন শহরের বিভিন্ন স্পটে বিক্রি করলেও তার কোন প্রভাব বাজারে লক্ষ করা যায়নি।

পাইকারী পেঁয়াজ বিক্রেতা রমিজ উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, রওশন আলী, মুনছের সহ অনেকেই জানান, পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। সেজন্য ক্রেতারা পরিমাণে কম কিনছেন। বিক্রেতারা জানান, প্রতিকেজি দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ২০০-২২০টাকা, দেশি নতুন পেঁয়াজ(কালী পেঁয়াজ) ৮০-১১০টাকা এবং মিশরের পেঁয়াজ ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

টাঙ্গাইল পার্ক বাজারে নতুন পেঁয়াজ(কালী পেঁয়াজ) নিয়ে আসা সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের ডোয়াজানী গ্রামের কৃষক মেনহাজ উদ্দিন, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। বাজারে একমন(৪০ কেজি) কালী পেঁয়াজ নিয়ে এসেছেন। প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি করছেন ৮০ টাকায়।

একই উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের দাইন্যা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, এখন যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে এসেছে- এাঁ মূলত কালী পেঁয়াজ। শীতকালিন সবজি হিসেবে এাঁ বাজারে আনা হয়। এবার পেঁয়াজের সঙ্কট হওয়ায় তারা দাম বেশি পাচ্ছেন। তিনি আরো জানান, আগামি ফাল্গুন মাসে মূলত নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। তখন পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন মে.টন পেঁয়াজ খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ পুরোপুরি এলে তখন দাম কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

(আরকেপি/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test