E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা এখন ৬৩ নম্বর রাজাকার, মাও রাজাকার

২০১৯ ডিসেম্বর ১৬ ১৭:৪৫:২০
গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা এখন ৬৩ নম্বর রাজাকার, মাও রাজাকার

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়সংলগ্ন সরকারি পরিবহন পুল ভবনের ছয়তলায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা ঘোষণা করা হয়। রাজাকারদের প্রকাশিত তালিকায় গেজেটেড এক মুক্তিযোদ্ধার নাম পাওয়া গেছে।

ওই মুক্তিযোদ্ধার নাম অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী। যার ক্রমিক নম্বর ১১২, পৃষ্ঠা নম্বর ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়ে থাকেন। কিন্তু রাজাকারের প্রকাশিত তালিকায় ৬৩ নম্বর স্থানে রয়েছেন তপন কুমার চক্রবর্তী। একই সঙ্গে এই মুক্তিযোদ্ধার মাকেও রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার মেয়ে ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী বাসদ নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী।

এটিকে নিজের ‘রাজনীতির খেসারত’ আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশালের সদস্য সচিব এই মুক্তিযোদ্ধাকন্যা।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে মনীষা চক্রবর্ত্তী লিখেছেন, ‘মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে।’

তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাবা অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, ক্রমিক নং ১১২ পৃষ্ঠা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়ে থাকেন। আজ রাজাকারের তালিকায় ৬৩ নম্বর রাজাকার তিনি।আমার ঠাকুরদা অ্যাডভোকেট সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীকে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। তার সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্ত্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

মনীষা চক্রবর্ত্তী আরও লিখেছেন, ‘শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের জন্য আমার রাজনীতি করার খেসারত দিতে হচ্ছে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগ সরকারকে। আমার দল বাসদ আমাকে শিখিয়েছে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে। মিছিল থেকে গ্রেফতার করে থানায় নির্যাতন করে ওরা বলেছিল আন্দোলন যেন না করি, নির্বাচনে যেন অংশ না নিই। রাজি না হওয়ায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে অজামিনযোগ্য মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। আমরা জেল খেটেছি, নির্যাতন সহ্য করেছি। কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি। ভয় দেখিয়ে বা বিপদে ফেলে আমাদের কিছু করা যাবে না। অভুক্ত-অর্ধভুক্ত গরিব খেটে খাওয়া মানুষ আছে আমাদের দলে। আছে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী। অতীতের মতো আজ এবং আগামীতে আপনাদের পাশে পাব সেই প্রত্যাশা রাখছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসদ নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা ষড়যন্ত্র করে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে রাজাকার বানিয়ে দিয়েছে। এখানেই তারা থেমে থাকেনি, আমার মুক্তিযোদ্ধা দাদার স্ত্রীকেও রাজাকার বানিয়ে দিয়েছে। ওসব নেতাদের এমন কাজে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে রাজাকারের এই তালিকা কারা করেছে বিষয়টি আমরা জানতে চাই।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test