E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাগুরায় বাঘ নিয়ে বিপাকে পুলিশ

২০১৯ ডিসেম্বর ৩০ ১৫:৩৮:০৮
মাগুরায় বাঘ নিয়ে বিপাকে পুলিশ

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার সদরের গোপালগ্রাম ইউনিয়নের শিয়ালবাড়ি গ্রামের নবগঙ্গা নদী সংলগ্ন সুধির দাসের বাড়ির পাশের বাগান থেকে গতকাল রাতে একটি বিরল প্রজাতির মেছবাঘ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রামবাসীর পাতা ফাঁদে  বাঘটি আটকের পর সেটিকে উদ্ধার করে শত্রুজিৎপুর ফাড়ি পুলিশ। এদিকে বাঘ উদ্ধারের পর তা হস্থান্তরের জন্য বন বিভাগকে জানানো হলেও  তা গ্রহন না করায় থানার হাজত খানায় আটকে রেখে বাঘ নিয়ে বড় বিপাকে পড়েছে পুলিশ।

শিয়ালবাড়ি এলাকার সুধীর দাসের ছেলে সুবীর দাস জানায়, বিগত কিছুদিন যাবৎ শিয়ালবাড়ি গ্রামসহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষের গৃহপালিত হাস, মুরগীসহ বিভিন্ন পশু বন্যপ্রাণীর হামলার শিকার হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে সম্প্রতি শিয়াল অথবা বন বিড়ালের আক্রমণ ভেবে সেটি ধরতে বাশের চটা দিয়ে ফাঁদ তৈরি করে বাগানে পেতে রাখে।

এ অবস্থায় গতকাল শনিবার রাতে বিলুপ্ত প্রজাতির মেছ বাঘটি সেই খাচায় আটকা পড়ে। খবর ছড়িয়ে পড়লে বিলুপ্ত প্রজাতির বাঘটি দেখতে ভিড় জমায় আশেপাশ অঞ্চলের মানুষ। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছে সেটিকে জীবিত উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সাইদুর রহমান জানান, গতকাল রাতে খবর জানার সাথে সাথেই বিরল প্রজাতির জীবিত বাঘটি উদ্ধারের পর প্রথমে শত্রুজিৎপুর ফাড়ি ও পরে মাগুরা সদর থানার হাজত খানায় এনে রাখা হয়েছে। বাঘ উদ্ধারের পর রাতেই বন বিভাগকে সেটি হস্তান্তর ও সংরক্ষণের জন্য জানানো হলে বন বিভাগ থেকে রাতে সম্ভব নয় তবে সকালে মাগুরার থেকে গ্রহন করবেন বলে জানায়। এ অবস্থায় আজ দুপুর গড়িয়ে গেলেও কোনো উপায় করতে না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাঘটিকে বাশের চটার তৈরি খাচাসহ আসামীদের হাজত খানায় ভরে রেখেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের বন্যপ্রাণী আটক বা সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ কলা কৌশলের বিষয়ে পুলিশের তেমন কোন ধারনা না থাকায় সেটি নিয়ে বিপাকে পড়েছে তারা। বাধ্যহয়ে বাঘটিকে থানায় এনে আটকে রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক কর্মকর্তা জানান, বিলুপ্ত প্রায় বিরল প্রজাতির এ সকল বন্যপ্রানি সংরক্ষনের বিষয়ে সরকারের নির্দেশনায় সাধারন মানুষসহ সকলেই আজ আগের চেয়ে অনেক সচেতন। যার জন্য বাঘটিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কিন্তু এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারনে এখোনও সেটি থানার হাজত খানায় পড়ে রয়েছে । এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকার ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাগুরা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস, এম, আবুল বাশার জানান, রাতে বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীটি উদ্ধারের ঘটনা জানতে পেরে সকালে পুলিশকে অফিসে পৌছে দিতে বলা হয়েছে। এ সকল ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনে তাদের করনিয় বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন বর্তমান বন্য প্রানি সংরক্ষন নিয়ম অনুযায়ী প্রাকৃতিক ভাবে যার অবস্থান যেখানে সেখানেই তাকে সংরক্ষণের ব্যাবস্থা করার বিধান রয়েছে।

তবে এক্ষেত্রে যেহেতু গ্রামবাসী সেটিকে হত্যা করতে পারে সেই কারনে আমরা সেটিকে খুলনা বন্য প্রানি সংরক্ষন অধিদপ্তরের নিকট পাঠানোর ব্যাবস্থা করবো। বিলুপ্ত বন্যপ্রাণীটি আনার জন্য এখনই থানায় লোক পাঠানো হচ্ছে এবং সংরক্ষনের জন্য আজকেই খুলনাতে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে জানালেন তিনি।

(ডিসি/এসপি/ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test