E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বড় ভাইকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে ছোট ভাই

২০২০ জানুয়ারি ১১ ১৫:১২:৫৬
বড় ভাইকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে ছোট ভাই

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও মাদক ব্যবসায়ি শ্যালককে ব্যবহার করে বড় ভাবীকে মারপিট ও বড় ভাইকে বাড়ি ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছে ছোট ভাই এর বিরুদ্ধে। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কলিমাখালি গ্রামের ঘটনা এটি।

কলিমাখালি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম গাজীর স্ত্রী বৃদ্ধা ছামিদা খাতুন জানান, তার দু’ ছেলের মধ্যে অ্যাড. নুরুল আমিন বর্তমানে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী। পেশাগত কারণে তাকে সাতক্ষীরায় থাকতে হয়। স্বামী মৃত্যুকালে বসত বাড়িসহ ৩০ বিঘা জমি রেখে যান। ওই জমির মধ্যে বিলান অংশে ভাগাভাগি মেনে নিলেও বাড়ি ও মেইন রাস্তার পাশে জমির ভাগাভাগি মানেনা ছোট ছেলে সাইফুল আলম। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে শালিসি বৈঠক হলেও সিদ্ধান্ত মানে না সাইফুল।

সাইফুলের অত্যাচার চোখে দেখতে না পেরে তিনিও একপ্রকার বাড়ি ছাড়া। গত বছরের ২৫ জুলাই নুরুল আমিন হ্বজ্বে যায়। ২০ জুলাই বাড়িতে গেলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী ও মামা মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের উপস্থিতিতে বড় ভাইকে মারতে যায় সাইফুল ও পারুল। ৫ আগষ্ট হ্বজ্বে থাকাকালিন বাড়িতে গেলে বড় বৌমা নাজমা আমিনকে পিটিয়ে জখম করে সাইফুল ও তার স্ত্রী পারুল।

এ ঘটনায় নাজমা বাদি হয়ে আদালতে মামলা করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদক ব্যবসায়ি শ্যালক কালিগঞ্জের জাফরপুরের সেলিম ও শ্রীউলা ইউপি’র এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিকে ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে উপপরিদর্শক বেলাল হোসেনকে দিয়ে নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তার করানোর পরিকল্পনা করে সাইফুল। গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় নূরুল আমিন সাতক্ষীরা কোর্টে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিল।

এরপর উপপরিদর্শক বেলাল হোসেনকে দিয়ে তার অংশের ঘরের তালা ভেঙে মালামাল লুটপাট করে নাটকীয়ভাবে সাতক্ষীরা ডিবি পুলিশকে দিয়ে নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তার করিয়ে কাল্পনিক ঘরভাঙা ও লুটপাটের মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। দুর্ভাগ্য হলেও সত্যি এ মামলায় সাইফুল তাকে (মা) ও মামা মতিয়ার রহমানকে সাক্ষী করেছে।

২৯ ডিসেম্বর নুরুল আমিন জামিন পাওয়ার পর তিনি বিষয়টি জানতে পেরে ভাই মতিয়ারকে নিয়ে মামলায় বর্ণিত ঘটনা সত্য নয় বলে এফিডেফিড দিয়েছেন। এভাবে হামলা ও মামলা দিয়ে সাইফুল তার বড় ভাইকে যৌথ সম্পত্তিতে থাকা দোকানের ভাগ ও বাড়ির অংশ থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। বিষয়টি তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গত শুক্রবার সকালে কলিমাখালি গ্রামে গেলে মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত সরদার , সাবেক ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলী, ইলিয়াস হোসেন, অয়জুদ্দিনসহ কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে শালিস না মানা সাইফুল ইসলামের অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন। একইভাবে শ্যালক সেলিমের মাধ্যমে মাদক এনে সাইফুল তার স্ত্রী পারুলকে গভীর রাত পর্যন্ত দোকানে রেখে বিক্রি করাচ্ছেন। ফলে মাদক বিক্রির চুক্তির টাকা পুলিশকে দিয়ে বড় ভাইকে জব্দ করার কাজে ব্যবহার করছে।

জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, তার বড় ভাই কোন শালিস মানে না। ভাবী নাজমা তার উপর মারপিটের কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে তার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে। তাতেও খুশী না হতে পেরে মা ও মাকে ম্যানেজ করে বাড়িতে এসে ভাঙচুর চালিয়ে লুটপাট করেছে। এ ঘটনায় তার দায়েরকৃত মামলায় বড় ভাইকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তবে শ্যালকের বিরুদ্ধে কয়েকটি মাদকের মামলা থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি।

তবে আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক বেলাল হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে কলিমাখালি গ্রামে ভাঙচুরের তদন্তে গিয়েছিলেন মাত্র।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test