E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

একটি ব্রীজের জন্য আট কোটি টাকার সড়কে চলাচল বন্ধ

২০২০ জানুয়ারি ২৫ ১৫:১৯:৫৮
একটি ব্রীজের জন্য আট কোটি টাকার সড়কে চলাচল বন্ধ

খুরশিদ আলম শাওন, রাণীশংকৈল : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন মহাসড়ক ঘেঁষা মীরডাঙ্গী থেকে ঐতিহ্যবাহী কাতিহার হাট পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটার পাকা সড়কে কার্যত চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে একটি ভাঙ্গা ব্রীজের জন্য। 

জানা গেছে, বছর চারেক আগে কয়েকধাপে মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহার হাট পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটার পাকা সড়ক প্রায় আট কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা হয়েছে। পাকা সড়ক নির্মাণের পর থেকেই সড়কটিতে স্কুলের ছাত্র ছাত্রী স্থানীয় মানুষসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ব্যাপক ভাবে বেড়ে ব্যাস্ততম সড়কে পরিণত হয়ে পড়ে। তবে নতুন সড়ক নির্মাণের সময়েও বহু পুরোনো এই ব্রীজটি বেহাল থাকলেও নতুন করে নির্মাণ না করায় ভাঙ্গা এই ব্রীজ নিয়ে বর্তমানে দূর্ভোগে রয়েছে পথচারীসহ স্থানীয়রা।

শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মীরডাঙ্গী টু কাতিহার হাট সড়কের বাকসা সুন্দরপুর এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পাকা সড়কের একটি ব্রীজ দুই ধাপে ভেঙ্গে পাথরের ঢালাই উঠে খাল হয়ে প্রায় দুই ফিট করে দুই স্থানের রড বেরিয়ে পড়েছে। ব্রীজটির উপর দিয়ে সাইকেল মোটরসাইকেল দেখে শুনে চলাচল করা গেলেও রাতের আধারে অচেনা গাড়ী চালক পথচারীরা পড়ে যেতে পারে বিপদে। সর্বোচ্চ তিন চাকার একটি ভ্যান অথবা থ্রি হুইলার গাড়ী পারাপার করতে অনেক সাবধানতা অবল্মন করতে হয়। তবে এক্ষেত্রে রাতের আধারে সামান্যতম অসাবধনতা হলেই ঘটে যেতে পারে দূর্ঘটনা। স্থানীয়রা বলছে ব্রীজটি দিয়ে কোন ভাড়ী চার চাকার যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

সম্প্রতি একজন অচেনা পথচারী মোটরসাইকেল চালক অসাবধনতা বশত ভাঙ্গা ব্রীজের অংশে গাড়ী উঠিয়ে দিয়ে র্দূঘটনার কবলে পড়লে স্থানীয়রা উদ্বার করে হাসপাতালে নেই। ভাঙ্গা ব্রীজটির কারণে এমন দূর্ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে থাকে। স্থানীয়রা আশংকা করে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রীজটি নতুন করে নির্মাণ করা না হলে ঘটে যেতে পারে বড় দূর্ঘটনাসহ ঝড়ে যেতে পারে কোন পথচারীর তাজা প্রাণ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হলেও মাত্র দশ ফিট প্রস্থ ও প্রায় পঞ্চাশ ফিট দৈঘ্যর ব্রীজটি তখন নির্মাণ না করায় বর্তমানে আমরা সড়কটির যথাযথ ব্যবহার করতে পারছি না। নতুন সড়ক নির্মাণের সময় কর্তৃপক্ষকে বার বার তাগাদা দেওয়া হলেও তারা গুরুত্ব দেয় নি।। তাই কার্যত সড়কটিতে চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় মুরবিব সালাম জব্বার বরকত বলেন, এই ব্রীজটি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের আগের হতে পারে । কারণ আমাদের নাবালক সময় থেকেই এই ব্রীজটি আমরা দেখে আসছি। তারা আরো জানান,একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে ব্রীজটি। তবে একদিকে সংস্কার করার বছর না ঘুরতে আরেক দিকে ধসে ব্রীজের রড বেরিয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে স্থানীয় কৃষক শ্রমিক যানবাহন চালকসহ পথচারীরা।

বিশেষ করে সপ্তাহে প্রতি শনিবার ঐতিহ্যবাহী কাতিহার হাটে নেকমরদ গাজীর হাট মীরডাঙ্গী সহ বিভিন্ন এলাকার গরু গাড়ী ধানের গাড়ীসহ বিভিন্ন পণ্যে বহনের গাড়ী গুলো কয়েক মাস যাবৎ শুধু মাত্র ভাঙ্গা ব্রিজটির কারণে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধান গম সহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন শেষে ঘরে কিংবা বাজার তুলতে ব্রিজের কারণে আমরা গাড়ী পারাপার করতে পারি না। এতে আমরা চরম ভোগান্তি ভোগ করে আসছি । তাই পথচারী ও স্থানীয়রা দাবী জানিয়েছেন দ্রুত বীজটি পূর্ণ-নির্মাণ করার।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস বলছে, মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহার সড়কটি আমাদের উপজেলা সড়ক ক্যাটাগরিতে পড়ে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সে-সড়কের মধ্যে থাকা পুরোনো ব্রীজটি ইতিমধ্যে দুইবার সংস্কার করা হয়েছে। তাছাড়াও নতুন করে নির্মাণ করার জন্য একাধিকবার বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন পেয়ে অর্থ বরাদ্দসহ টেন্ডার হলেই ব্রীজটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।

এলজিইডির ঠাকুরগাঁও জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কান্তেস্বর বর্ম্মন মুঠোফোনে বলেন, ব্রীজটি প্রকল্পে দেওয়া আছে। খুব শিগগির পূর্ণ-নির্মাণ করা হবে।

(কেএস/এসপি/জানুয়ারি ২৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test