E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সেচ সংযোগ পেতে পথে পথে বিড়ম্বনার শিকার কৃষকরা 

২০২০ জানুয়ারি ২৯ ১৮:৩৮:২৬
সেচ সংযোগ পেতে পথে পথে বিড়ম্বনার শিকার কৃষকরা 

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : ইরি বোরো জমিতে চারা রোপনের কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। তবে সেচের অভাবে অনেক জমিতে হাল চাষ করে ধানের চারা রোপন করতে পারছেন না কৃষক। অগভীর নলকূপের সংযোগ পেতে পথে পথে কৃষকরা নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। উপজেলা সেচ কমিটির লাইসেন্স পাওয়ার পর পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পেতে বাড়তি টাকাও গুনতে হয়। এমন অভিযোগ ওঠেছে অনেক কৃষকের কাছ থেকেই। সেচ সংযোগ পেতে পথে পথে ঘুরতে ঘুরতে কৃষকরা এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের চোখে মুখে দেখা দিয়েছে এক ধরনের হতাশা। এমনিতেই কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না থাকায় কৃষকরা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। এর পরও নতুন সেচ সংযোগ পেতে তারা চোখে সরষেফুল দেখছেন। 

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় অগভীর নলকূপের লাইসেন্স ও সংযোগ পেতে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রায় চার মাস আগে আবেদন করেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, এসব আবেদনের আগে তাদেরকে সোনালী ব্যাংক কেন্দুয়া শাখায় সেচ কমিটির হিসাবে প্রতি আবেদনের জন্য ২০০ টাকা জমা দিয়ে রশিদ নিতে হয়। এই রশিদ আবেদনের সঙ্গে যুক্ত না থাকলে আবেদনই গ্রহণযোগ্য হয় না। পূর্নাঙ্গ আবেদন পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেচ কমিটির সভাপতি জরুরী ভিত্তিতে যাচাই বাছাই করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে সরেজমিন গিয়ে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেন।

কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, এই যৌথ তদন্ত রিপোর্ট পেতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। তার পরও তাদের পিছনে ঘুরতে হয় টাকাও খরচ করতে হয়। উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি বরাবর এ বছর ৪শ ২০টি আবেদন জমা পরে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর গত ১৩ জানুয়ারী অনুমোদনের জন্য উপজেলা সেচ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ইউএনও আল-ইমরান রুহুল ইসলাম।

সূত্র জানায়, তদন্ত রিপোর্ট ও সাবির্ক বিশ্লেষনে ৪শ ২০টির মধ্যে ২৭৩টি আবেদন অনুমোদনের পর লাইসেন্স দিয়ে সেচ সংযোগ দেয়ার জন্য ক্রমান্বয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন্দুয়া ডিজিএম কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৩৭টি আবেদন পুনঃ তদন্তের জন্য দেয়া হলেও ১১০ কৃষকের আবেদন বিভিন্ন কারণে বাতিল করে দেয়া হয়েছে।

ভোক্তভোগী কৃষকরা আরো জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় লোকজন সেচ সংযোগ দিতে নানা তাল বাহানা শুরু করেছে।

মঙ্গলবার কান্দিউড়া ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, সেচ সংযোগ নিয়ে খুব বিপদে আছি। জমি রোপনের সময় চলে যাচ্ছে। এখনও সংযোগ পাচ্ছিনা।

পল্লী বিদ্যুতের লোকেরা বলে, তাড়াতাড়ি সংযোগ পেতে হলে টাকা জমা দেয়ার বাইরে ৮/১০ হাজার টাকা বাড়তি খরচ করতে হবে। টাকা ছাড়া সংযোগ পেতে কিছু দেরি হবে।

উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ইউএনও আল-ইমরান রুহুল ইসলাম বুধবার বলেন, সেচ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৩ জানুয়ারি যেসব আবেদন অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেগুলো লাইসেন্স দিয়ে সংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন্দুয়া ডিজিএম কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম এর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাদের লোকদের সতর্ক করে বলা আছে সেচ সংযোগ পেতে যাতে কৃষকদের কোন হয়রানি হতে না হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন্দুয়া অঞ্চলের ডিজিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংযোগ পেতে বাড়তি টাকা লাগে এ কথা আমার কানেও এসেছে। তবে পল্লী বিদ্যুতের যে কর্মকর্তা বা কর্মচারী কৃষকের নিকট টাকা দাবী করেছে তার নামটি গোপনে আমার কাছে দিলে আমি তার বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

(এসবি/এসপি/জানুয়ারি ২৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test